বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেছেন, ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে তারা যে বার্তা দিচ্ছে তা সংখ্যার বিষয় নয়। তিনি বলেন, এতে গণমাধ্যমের সদস্যদেরও অর্ন্তুভুক্ত করা হতে পারে।
রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল২৪ পরিদর্শনকালে পিটার হাস এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘সরকারপন্থী, বিরোধী দলীয়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থায় থাকুক, বিচার বিভাগের থাকুক, গণমাধ্যমে থাকুক না কেন আচরণের উপর ভিত্তি করে সবার ক্ষেত্রে আমরা নীতিটি ভারসাম্যপূর্ণ উপায়ে প্রয়োগ করছি। এটি তাদের কর্ম ছাড়া অন্য কিছুর উপর ভিত্তি করে নয়।’
হাস বলেন, ‘এটি সংখ্যা সম্পর্কে নয়, আমরা যে বার্তাটি পাঠাচ্ছি এটি সে সম্পর্কে।’
রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন গত মে মাসে এই নীতি ঘোষণার সময় বা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার শুক্রবার থেকে এই নীতি বাস্তবায়নের কথা ঘোষণা করার সময় গণমাধ্যমের সদস্যদের কথা উল্লেখ করেননি। এছাড়াও সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু যখন এই নীতিসম্পর্কে কথা বলেছেন, তখন তিনি কখনই উল্লেখ করেননি যে মিডিয়ার সদস্যরা এর আওতায় আসতে পারে।
ব্লিঙ্কেনের মূল বিবৃতিতে ‘বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা, সরকার সমর্থক ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যদের’ উল্লেখ করা হয়েছে।
এটি ভিসা নীতির সম্ভাব্য নেট সম্প্রসারণের ইঙ্গিত দেয় কিনা তা দেখার বিষয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ভিসা বিধিনিষেধ সাপেক্ষে বাংলাদেশের মানুষের নাম বা সংখ্যা প্রকাশ করবে না।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের মুখপাত্র ব্রায়ান শিলার শুক্রবার এক প্রশ্নের জবাবে ইউএনবিকে বলেছেন, ‘মার্কিন আইনের অধীনে ভিসার রেকর্ডগুলো গোপনীয়।’
কিন্তু, তিনি বলেন, মার্কিন সরকার এই নীতি ঘোষণা করার পর থেকে ঘটনাগুলো খুব কাছ থেকে দেখেছে।
ব্রায়ান শিলার বলেন, ‘প্রমাণগুলো ভালোভাবে পর্যালোচনা করার পর, আমরা আইন প্রয়োগকারী, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দলের সদস্যদের উপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছি।’
চলতি বছরের মে মাসে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বাংলাদেশের অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং শান্তিপূর্ণ জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যকে সমর্থন করার জন্য অভিবাসন ও জাতীয়তা আইনের ধারা ২১২(এ)(৩)(সি) (‘৩সি’) এর অধীনে নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করেন।
এই নীতির অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে মনে করা যেকোন বাংলাদেশি ব্যক্তির জন্য ভিসা প্রদান সীমিত করবে।
শুক্রবার স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, তারা বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশি ব্যক্তিদের উপর ভিসা বিধিনিষেধ আরোপের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
তিনি বলেন, এই ব্যক্তিদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ক্ষমতাসীন দল এবং রাজনৈতিক বিরোধী দল রয়েছে। এই ব্যক্তি এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর অনুসারে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী বা জড়িত বলে প্রমাণিত অন্যান্য ব্যক্তিরাও ভবিষ্যতে এই নীতির অধীনে মার্কিন ভিসার জন্য অযোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারে।
মিলার বলেন, এর মধ্যে বর্তমান এবং প্রাক্তন বাংলাদেশি কর্মকর্তা, বিরোধী ও ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সদস্য এবং আইন প্রয়োগকারী, বিচার বিভাগ এবং নিরাপত্তা পরিষেবার সদস্যরা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ব্র্যাকের অবহিতকরণ সভা
সিলেট উইমেন্স মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মতবিনিময়ে ডাঃ শফিক
রংপুরে সাংবাদিদের সাথে মতবিনিময়