December 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, September 15th, 2023, 8:21 pm

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতদের স্থায়ী সমাধানে শক্তিশালী অংশীদারিত্ব চায় ইউএনএইচসিআর-এনজিও

ফাইল ছবি

জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ও রাষ্ট্রহীনদের জন্য টেকসই সমাধানের লক্ষ্যে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বেসরকারি সংস্থা (এনজিও) ও সুশীল সমাজের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করতে সহযোগিতা বাড়ানোর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

১৪ ও ১৫ সেপ্টেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ইউএনএইচসিআরের ২০২৩ সালের আঞ্চলিক এনজিও কনসালটেশন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক রিফিউজি রাইটস নেটওয়ার্ক (এপিআরআরএন), ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল অব ভলান্টারি এজেন্সিস (আইসিভিএ) এবং এশিয়া প্যাসিফিক নেটওয়ার্ক অব রিফিউজিসের (এপিএনওআর) সহযোগিতায় এ কনসালটেশন অনুষ্ঠিত হয়।

“টেকসই সমাধানের জন্য অন্তর্ভুক্তিমুলক প্রচার” প্র্রতিপাদ্য সামনে রেখে বেশ কিছু নিয়ে আলোচনা হয়েছে এতে। এ অনুষ্ঠানে এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ১৯ টি দেশের ১৬১ টি সংস্থার প্রতিনিধিত্বকারী ১৮০ জনেরও বেশি অংশগ্রহণকারী একত্রিত হয়েছিলেন।

২০২২ সালের শেষে রেকর্ড করা তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে এই অঞ্চলে ৭০ লাখেরও বেশি শরণার্থী বা আশ্রয়প্রার্থী এবং ৫০ লাখ সংঘাত-প্রভাবিত অভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুত মানুষ (আইডিপি) রয়েছে।

বাস্তুচ্যুতদের বেশিরভাগই আশ্রয় পাওয়া দেশগুলোতে দীর্ঘস্থায়ীভাবে বাস করছে।

ইউএনএইচসিআর’র এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক ইন্দ্রিকা রাতওয়াতে বলেন, ‘অন্তর্ভুক্তি একটি জটিল বিষয়, যা প্রায়শই ভুলভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। তবে যখন আমরা শরণার্থীদের জন্য স্থানীয়ভাবে সমাধান খুঁজে বের করার জন্য শিক্ষা, জীবিকা, দক্ষতা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো বিষয়গুলো নিয়ে সম্মিলিতভাবে কাজ করি।’

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের মানবিক অংশীদারদের জীবনের সব ক্ষেত্রে বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠী ও রাষ্ট্রহীন লোকদের অন্তর্ভুক্ত করা কীভাবে সমগ্র সমাজের উপকারের জন্য স্থিতিস্থাপকতা বজায় রাখে সে বিষয়ে আলোচনা হয় এ কনসালটেশনে। এ ছাড়া দীর্ঘস্থায়ী সমাধানের বিষয়ে সর্বোত্তম অনুশীলন ও দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ দেয় এটি।

এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আইসিভিএ’র আঞ্চলিক প্রতিনিধি কেয়া সাহা চৌধুরী বলেন, ‘ফলপ্রসু অন্তর্ভুক্তির জন্য বাস্তুচূতদের প্রতি ধারণার পরিবর্তন প্রয়োজন। মনে করতে হবে- জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিরা শুধু সহায়তার সুবিধাভোগী নয় বরং সম্পদ, তারা যে সব সম্প্রদায়ের অংশ, তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। একই সঙ্গে সম্প্রসারণের মাধ্যমে তাদের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার জন্য সহায়ক নীতি ও সুরক্ষা প্রয়োজন।‘

ইউএনএইচসিআর, এনজিও ও কমিউনিটি-ভিত্তিক সংস্থাগুলো কীভাবে জাতীয় ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তির প্রচারের জন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সহযোগিতা এবং সমর্থন করতে পারে তা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছিল।

এপিএনওআর-এর নির্বাহী পরিচালক নাজিবা ওয়াজেফাদোস্ট বলেন।

এপিএনওআর’র নির্বাহী পরিচালক নাজিবা ওয়াজেফাদোস্ট বলেন, শরণার্থী নেতৃত্বাধীন সংগঠনগুলোর ক্ষমতায়ন অপরিহার্য। এই সংস্থাগুলো তাদের প্রতিনিধিত্বকারী সম্প্রদায়গুলোকে বুঝতে পারে এবং গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করতে পারে। যোগাযোগের ঘাটতিগুলো পূরণ করতে পারে এবং সম্প্রদায়ের মাধ্যমে সমাধানগুলো সহজতর করতে পারে। দ্বিতীয়ত, লিঙ্গ ভারসাম্য বজায় রাখা অপরিহার্য। সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে শরণার্থী সম্প্রদায়ের মধ্যে এবং সরকারি সংস্থার সঙ্গে সম্পৃক্ততার ক্ষেত্রে সব স্তরে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় নারীদের ন্যায়সঙ্গত প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করা উচিত।’

শরণার্থী নেতৃত্বাধীন সংস্থা এবং নাগরিক সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাও স্বীকার করেছেন আলোচনায় অংশগ্রহণকারীরা। কীভাবে এই অঞ্চলের দেশগুলোকে পুনর্বাসন ও পরিপূরক পথগুলোতে জড়িত হতে আরও উৎসাহিত করা যায় এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির পাশাপাশি অনুমানযোগ্য ও ন্যায়সঙ্গত দায়িত্ব ভাগ করে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাও সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়।

এশিয়া প্যাসিফিক রিফিউজি রাইটস নেটওয়ার্কের এপিআরআরএন-এর কো-সেক্রেটারি জেনারেল হাফসার তামিসুদ্দিন বলেন, ‘শরণার্থীরা স্থানীয়দের সঙ্গে যেন নিজেদের দক্ষতা যোগ করতে পারে তার জন্য আমাদের উদ্ভাবনী উপায়গুলো ভাবতে হবে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে শরণার্থীদের সেই দক্ষতাগুলো কাজে লাগানোর এবং সমাজে অবদান রাখার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে, যাতে তারা ঝুঁকিপূর্ণ গোষ্ঠী থেকে সক্ষম সম্প্রদায়গুলোতে অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।’

আলোচনার সুপারিশগুলো ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইউএনএইচসিআর নির্বাহী কমিটিতে উপস্থাপন করা হবে এবং ২০২৪ সালের জুনে জেনেভায় অনুষ্ঠেয় বিশ্বব্যাপী এনজিও কনসালটেশনে এগুলো জানানো ও সমর্থন করা হবে।

প্রথম ইউএনএইচসিআর-এনজিও আঞ্চলিক পরামর্শ জুলাই ২০২১ সালে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং কোভিড -১৯ এর প্রেক্ষাপটে শরণার্থীদের সামাজিক-অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির দিকে মনোনিবেশ করেছিল।

—-ইউএনবি