জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আরোপিত দানকর বৈধ ঘোষণা করা রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি (লিভ টু আপিল) চেয়ে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার (২৩ জুলাই) সকালে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এ রায়ের ফলে ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ১২ কোটি টাকা দানকর বাবদ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) পরিশোধ করতে হবে।
এর আগে, ২১ জুন হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেন ড. ইউনূস। এরপর গত ১৭ জুলাই প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগ ২৩ জুলাই শুনানির জন্য দিন ধার্য করেন। সে অনুযায়ী আজ শুনানি হয়।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। ড. ইউনূসের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী ফিদা এম কামাল ও ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯০ সালের দানকর আইন অনুযায়ী ২০১১-২০১২ করবর্ষে মোট ৬১ কোটি ৫৭ লাখ ৬৯ হাজার টাকা দানের বিপরীতে প্রায় ১২ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ পাঠায় এনবিআর।
২০১২-২০১৩ করবর্ষে ৮ কোটি ১৫ লাখ টাকা দানের বিপরীতে ১ কোটি ৬০ লাখ ২১ হাজার টাকা দানকর দাবি করা হয়।
আর ২০১৩-২০১৪ করবর্ষে ৭ কোটি ৬৫ হাজার টাকা দানের বিপরীতে এক কোটি ৫০ লাখ ২১ হাজার টাকা কর দাবি করে নোটিশ দেয় এনবিআর।
দানের বিপরীতে কর দাবি করে এনবিআরের এসব নোটিশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে আপিল ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ড. ইউনূস।
তার দাবি, আইন অনুযায়ী দানের বিপরীতে এনবিআর এ কর দাবি করতে পারে না।
এরপর ২০১৪ সালের ২০ নভেম্বর তার আবেদন খারিজ করে দেওয়া হয়। এরপর ২০১৫ সালে তিনি হাইকোর্টে ৩টি আয়কর রেফারেন্স মামলা করেন।
মামলাগুলোর প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দানকর দাবির নোটিশের কার্যকারিতা স্থগিত করে ২০১৫ সালে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে মৃত্যু ও পরিবারের সদস্যদের কল্যাণ চিন্তা করে নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত তিনটি ট্রাস্টে যে টাকা দান করেছেন, সেই দানের বিপরীতে এনবিআরের আরোপ করা দানকর বৈধ ঘোষণা করে গত ৩১ মে রায় দেন হাইকোর্ট।
৩১ মে রায়ের পর অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৩ প্রতিষ্ঠানে ৭৭ কোটি টাকা দান করেছিলেন।
তিনি বলছেন, এর বিপরীতে কর দিতে হবে না। আমরা বলেছি দিতে হবে এ কারণে এনবিআর তাকে নোটিশ দিয়েছিল।
পরে তিনি হাইকোর্টে তিনটি রেফারেন্স মামলা করেছিলেন। হাইকোর্ট রেফারেন্সগুলো ঠিক বলেছেন।
আবেদনগুলো খারিজ করে দিয়েছেন। এখন এনবিআরের দাবি করা কর দিতে হবে। এনবিআর ১৫ কোটি টাকার বেশি দাবি করেছিল।
ইতোমধ্যে তিনি ৩ কোটি টাকার মতো দিয়েছেন। এখন বাকি ১২ কোটি টাকার বেশি কর পরিশোধ করতে হবে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
ড. ইউনূসের ৫ মামলা বাতিলের রায়ে আইনি দুর্বলতা পাননি আপিল বিভাগ
চিকিৎসার জন্য বেগম খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়ার দিনে সৃষ্ট যানজটে বিএনপির দুঃখ প্রকাশ
মাসুদা ভাট্টির বিষয়ে রাষ্ট্রপতিকে সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রতিবেদন