বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বন্দর ও পরিবহন বিভাগের অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন ওরফে আরিফ হাসনাতের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক (তদন্ত ও তদন্ত-২) হাফিজুল ইসলামকে প্রধান করে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। টিমের আরেক সদস্য হলেন সহকারী পরিচালক সুভাষ চন্দ্র মজুমদার।
বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর দুদকের এক চিঠিতে এ তথ্য জানানো হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর দুদকের উপপরিচালক (তদন্ত ও অনুসন্ধান-২) মো. হাফিজুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এ চিঠি জারি করা হয়।
চিঠিতে ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দর এবং ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ঢাকা নদীবন্দর (সদরঘাট) সম্পর্কে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য চাওয়া হয়েছে।
বিআইডব্লিউটিএ’র প্রধান কার্যালয়ে কর্মরত আরিফ উদ্দিন ওই সময় ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ নদীবন্দরের দায়িত্বে ছিলেন।
চিঠিতে আরিফ উদ্দিন বিআইডব্লিউটিএতে যোগদানের পর থেকে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত তার প্রাপ্ত বেতন-ভাতা এবং তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সংক্রান্ত অফিস আদেশের বিবরণ চাওয়া হয়েছে।
আরিফ উদ্দিন ও তার স্ত্রী, সন্তান ও ভাইদের নামে ব্যবসা বা শেয়ার রাখার জন্য আবেদন ও অনুমোদনসংক্রান্ত সব রেকর্ড চেয়েছে দুদক।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়, চলমান তদন্তের স্বার্থে উপরোক্ত তথ্য চেয়ে চলতি বছরের ৩ আগস্ট বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে চিঠি পাঠানো হয়। কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ তা দেয়নি। এ কারণে তদন্ত কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
দুদক সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (প্রশাসন) বরাবর আরেকটি চিঠি পাঠিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর সকাল ১০টার মধ্যে একই তথ্য ও নথি চাওয়া হয়।
তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত বিআইডব্লিউটিএ দুদকে কোনো তথ্য পাঠায়নি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক (প্রশাসন) ওয়াকিল নওয়াজ ইউএনবিকে বলেন, গত মাসের ৩ আগস্ট পাঠানো দুদকের কাছ থেকে কোনো চিঠি পায়নি তার কার্যালয় (বিআইডব্লিউটিএ প্রধান কার্যালয়)। তবে তিনি স্বীকার করেছেন যে তার অফিস ইতোমধ্যে দ্বিতীয় চিঠি পেয়েছে, যা ৩ সেপ্টেম্বর পাঠানো হয়েছিল।
চলতি মাসের ৮ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ কেন দুদককে তথ্য সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছে- জানতে চাইলে ওয়াকিল নেওয়াজ বলেন, তিনি এ বিষয়ে কাজ করছেন এবং খুব শিগগিরই দুদকের প্রয়োজনীয় তথ্য সরবরাহ করবেন বলে আশা করছেন।
ইউএনবির আরিফ উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েক বছর আগে তার বিরুদ্ধে একই ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কিছুই পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর পর কেউ আবার আমার বিরুদ্ধে দুদকে অভিযোগ এনেছে। দুদক এখন বিষয়টি তদন্ত করছে। দুদকের অনুসন্ধান শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি তার অনুসন্ধান অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
ব্র্যাডম্যানের ব্যাগি গ্রিন বিক্রি ৩ কোটি টাকায়
বিচার বিভাগ মানবাধিকারের সুরক্ষায় বদ্ধপরিকর : প্রধান বিচারপতি
আর্থিক খাতের লুটপাটের চিত্র দেখে প্রধান উপদেষ্টা অবাক