রংপুর ব্যুরো: সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে রাস্তায় ট্রাকের চাপায় নিহত হয়েছেন ফায়ার ফাইটার সোয়ানুর জামান নয়ন (২৪)। তার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের আটপুনিয়া গ্রামে ।
আক্তারুজ্জামান ও নারগিস বেগম দম্পত্তির দুই ছেলে মেয়ের মধ্যে নয়ন ছোট এবং একমাত্র উপার্জনকারী। দুই বছর আগে যতটুকু চাষাবাদের জমি ছিলো তা বিক্রি করে ফায়ার সার্ভিসে চাকরী নেন। সিলেটের বিশ্বনাথ ফায়ার স্টেশন কমর্রত ছিলেন। ঢাকায় আসেন ২১ দিনের একটি ট্রেনিং এর জন্য। সেই সূত্রে বর্তমানে তেজগাঁও জোনে বিশেষ টিমে কাজ করেছিলেন। সন্তানের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর থেকে কাঁদতে কাঁদতে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তার মা নার্গিস বেগম।
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের আটপুনিয়া গ্রামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় একমাত্র উপার্জনকারী নয়নের পরিবারের একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে তার বাবা-মা শোক সামলানোর ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন তাদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠেছে গোটা গ্রাম।
নিহতের স্বজন সাইফুল ইসলাম বলেন, নয়নই ছিল পরিবারের ভরসা। তার বেতনের ওপর নির্ভরশীল পুরো পরিবার। সম্প্রতি অগ্রনি ব্যাংক এ পাঁচ লক্ষ টাকা ঋণ করে মাত্র একটি কিস্তি পরিশোধ করেছেন। হঠাৎ তার মৃত্যুতে পুরো পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেল।
নিহত নয়নের ভাতিজা শাফিউল ইসলাম শিমুল বলেন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অসতর্কতায় একটি তাজা প্রাণ ঝরলো।
সকালেই ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল ফায়ার ফাইটার সোয়ানুর জামান নয়নের। কিন্তু মধ্যরাতে সচিবালয়ে আগুনের খবরে ডাক পড়ে তারও। কিন্তু আগুন নেভাতে গিয়ে জীবন প্রদীপ নিভে গেছে বেপরোয়া ট্রাক চাপায়। বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে নয়নের মৃত্যুতে মধ্যবিত্ত পরিবারটির কী হবে, সেই ভাবনাই এখন বেশি ভাবাচ্ছে স্বজনদের।
আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে থাকা ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সড়কে বেরিকেড দিয়ে নিরাপদে আগুন নেভাতে পারতো। তার মা বিলাপ করে বলেন,আমার ছেলের কয়েকদিন আগে ডিগ্রি পরীক্ষা শেষ করলো। রেজাল্ট হলে প্রমোশন হতো তারপর বিয়ে করতো। নয়নের বাবা বলেন, ভোর ৫ টায় আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তির খবর পেয়েছি। পরে শুনি ছেলেটা আমার মারা গেছে। আমাদের আত্মীয় স্বজন লাশ বাড়িতে আনার জন্য ঢাকায় অবস্থান করছে।
আরও পড়ুন
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় কনস্টেবল মুকুল কারাগারে
শীতে শিশুদের সুস্থ রাখবে যেসব খাবার