জেলা প্রতিনিধি, সাভার:
নিয়মের তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের পদত্যাগ’সহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন সাভার মডেল কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১৪ আগষ্ট) সকালে কলেজ ক্যাম্পাসেই আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ২১ দফা দাবি জানানো হয়। দাবি আদায়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ক ইসমাইল ইবনে আজাদ বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে ২৬ বছর ধরে কলেজে দায়িত্ব পালন করা অধ্যক্ষ তৌহিদ হোসেনকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শিক্ষা বোর্ডের নিয়ম বহির্ভূত একটি নির্দেশনার মাধ্যমে তাকে পদ থেকে সরিয়ে দিলেও সেই নির্দেশনায় উল্লেখিত জ্যেষ্ঠতা লংঘন করে বর্তমানে জোরপূর্বক অধ্যক্ষের পদে দায়িত্ব পালন করছেন ভূগোল বিভাগের অধ্যাপক আলী হোসেন। তার পৃষ্ঠপোষকতায় সমকামিতার অভিযোগে একাধিকবার বহিষ্কৃত শিক্ষক রমজান আলীকে পুনরায় নিয়োগ দেওয়া সহ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিরোধী বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তাই বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে অধ্যক্ষের পদ থেকে আলী হোসেন, ইসলাম শিক্ষা বিভাগের রমজান আলী ও দর্শন বিভাগের হোসাইন মো. রানাকে অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি।
শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে রয়েছে- অধ্যক্ষ আলী হোসেন, দর্শন বিভাগের হোসাইন মো. রানা ও সমকামিতায় অভিযুক্ত ইসলাম শিক্ষা বিভাগের রমজান আলীকে বরখাস্ত করা। তাদের সহযোগী হিসেবে ল্যাব শিক্ষক আবু সাঈদ, ক্রীড়া শিক্ষক ফিরোজ আলম, বাংলা বিভাগের দিলারা খানম, ইসলামের ইতিহাস বিভাগের মুস্তাফিজুর রহমান, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের আমিনুল ইসলামকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
এ সময় শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে ছিলো কলেজে রাজনীতি নিষিদ্ধ করা, মিথ্যা মামলায় বরখাস্তকৃত পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক হাসান মাহমুদকে পুনর্বহাল, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ২৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী শহীদ তানজির খান মুন্নার স্মরণে লাইব্রেরীর নামকরণ করা। স্বাস্থ্যসম্মত ক্যান্টিনের ব্যবস্থা। সাবেক ছাত্রলীগ পদধারীদের অবাঞ্চিত ঘোষণা করা। ছাত্র-শিক্ষক কল্যাণ তহবিল, বিভিন্ন ক্লাব, কলেজের ল্যাব ও লাইব্রেরী সংস্কার করা। এ্যালামনাই এসোসিয়েশন, বিভিন্ন প্রতিযোগিতা, জেনারেটর, বিশুদ্ধ পানি, ছেলে ও মেয়েদের জন্য আলাদা শিক্ষক, শ্রেণিকক্ষে সাউন্ড সিস্টেম, প্রজেক্টরের ব্যবস্থা’সহ কলেজকে সম্পূর্ণ ছাত্র ও শিক্ষক রাজনীতিমুক্ত রাখার দাবি জানানো হয়।
এদিকে ছাত্রদের আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন- রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক জ্যেষ্ঠ মনসুর আলী, গনিত বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক বেলাল মোহাম্মদ আওলাদ হোসেন, জীববিজ্ঞান বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক নাজমুন নাহার, ব্যবস্থাপনা বিভাগের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম ও বাংলা বিভাগের শিক্ষক মাসুম সাঈদ।
বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে এসব দাবি আদায় না হলে আগামীকাল বৃহস্পতিবার আবারো কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এমনকি সর্সম্মতিক্রমে গণস্বাক্ষর কর্মসূচিও পালন করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন দাবির পক্ষে প্লে-কার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভ করেন তিন শতাধিক শিক্ষার্থী।
আরও পড়ুন
বছরজুড়ে শিক্ষায় অস্থিরতা, শিক্ষার্থীদের হাত ধরেই ‘বিজয়’
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছে ভর্তি পরীক্ষা, বদলে যাচ্ছে পদ্ধতিও
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন ১ জানুয়ারি, পরীক্ষা ফেব্রুয়ারিতে