September 13, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 11th, 2025, 5:46 pm

অনিয়মের অভিযোগে জাকসু নির্বাচন বর্জন করলো ছাত্রদল প্যানেল

 

অনিয়মের অভিযোগ তুলে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল।

বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে মওলানা ভাসানী হলের অতিথি কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী বৈশাখী ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় প্যানেলের সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী মো. শেখ সাদী হাসানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে তানজিলা হোসাইন বৈশাখী বলেন, ‘ছাত্রদলের বিজয় ব্যাহত করতে ইউনিভার্সিটি প্রশাসন জামায়াত শিবিরের সঙ্গে এক হয়ে ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করেছে।’

জিএস প্রার্থী বৈশাখী আরও বলেন, ‘জাকসু নির্বাচনে যে ব্যালট পেপার এবং ওএমআর দেওয়া হয়েছে, সেটি এক জামায়াত নেতা থেকে নেওয়া হয়েছে। আমরা একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু আমরা দেখছি, এটা একটি পাতানো নির্বাচন। জামায়েত নেতার থেকে ব্যালট এবং ওএমআর নেওয়ার পর থেকে আমাদের সন্দেহ ছিল সুষ্ঠু নির্বাচন হবে না। সকাল থেকে সেটাই দেখতে পাচ্ছি। নির্বাচনে আঙ্গুলে ছাপ দেয়ার কথা থাকলেও সেটা হয়নি, তাজউদ্দিন আহমেদ হলে ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি, যেখানে শিবিরের প্রার্থী মেঘলা বিভিন্ন হলে ঢুকছে। সে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন হলে আধিপত্য বিস্তার করছে। আমরা এ বিষয়ে প্রশাসন বরাবর অভিযোগ দিলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, প্রশাসন যে ১০ শতাংশ বেশি ব্যালট ছাপিয়েছে জামায়েতের এক নেতা থেকে, সেটা শিবিরকে সুবিধা দিতে করা হয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের হলে তারা একজন একাধিক ভোট দিচ্ছে। এখানে শিবিরপন্থি অনেক সাংবাদিক ভূমিকা রাখছে।

এছাড়া, প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর দেওয়া ছাত্রদলের বর্জনের লিখিত বক্তব্যে জানায়, দীর্ঘ ৩৩ বছর পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গণতন্ত্রের এই চর্চাকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেল ঘোষণা করে।

আমরা আশা করেছিলাম ফ্যাসিবাদী আমলে যে গণতন্ত্রের কবর রচিত হয়েছে- তা আবার পুনরুজ্জীবিত হবে। আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চেয়েছিলাম। কিন্তু আজকের ভোট গ্রহণের সময় বিভিন্ন অসঙ্গতি আমাদেরকে হতাশ করেছে। একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীকে জেতানোর জন্য প্রশাসন ফ্যাসিবাদ স্টাইলে শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করছে।

লিখিত বক্তব্যে ছাত্রদল নির্বাচনের অসঙ্গতি বিষয় উল্লেখ করে। সেগুলো হলো- ১। যথাসময়ে ভোটকেন্দ্রে পোলিং এজেন্ট ঢুকতে না দেওয়া।; ২। প্রার্থীদেরকে ভোটকেন্দ্র পরিদর্শন করতে দেওয়া হয়নি; ৩। নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে ভোট গ্রহণ কালে শিবির সমর্থিত প্যানেল ভোটারদের হাতে লিফলেট বিতরণ করে; ৪। বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে জাল ভোট দেওয়া ও ভিপি প্রার্থীকে হেনস্থার শিকার করা; ৫। কিছু কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ কালে বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় একটি মহল ভোট কারচুপির মহোৎসবে মেতেছে; ৬। কিছু কেন্দ্রের ভোটার অনুপাতে বুথের সংখ্যা কম হওয়ায় ভোটারদের ভোগান্তি হচ্ছে; ৭। অধিকাংশ ভোটকেন্দ্রে ভোট প্রদান শেষে অমোছনীয় কালি ব্যবহার না করায় একই ব্যক্তি একাধিক ভোট প্রদান করতে পারছে; ৮। ভোটার তালিকায় প্রার্থীদের ছবি না থাকায় একজনের ভোট আরেকজন দিয়ে দিচ্ছে; ৯। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল সংসদে তিন জন কার্যকরী সদস্যকে ভোট দেওয়ার কথা থাকলেও ব্যালটে একজনের নাম উল্লেখ ছিল।

এনএনবাংলা/