রংপুর ব্যুরো:
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম বলেছেন, সকল অনিয়মের বিরুদ্ধে সবাইকে সম্মিলিতভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ক্রয়, চিকিৎসক নিয়োগ ও পদায়ন কোনো অনিয়মকে বরদাস্ত করা হবে না। গতকাল শনিবার (২৩শে আগস্ট) দুপুরে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বাস্থ্যখাতে অন্তবর্রতীকালীন সরকারের সাফল্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সরকার স্বল্প সময়ে ডাক্তার নিয়োগের জন্য বিশেষ বিসিএস-এর ব্যবস্থা করেছে। এছাড়াও সরকার ইতোমধ্যে সাড়ে তিন হাজার নার্স নিয়োগের সুপারিশ করেছে।
সিন্ডিকেট প্রতিরোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, স্বাস্থ্যখাতের সিন্ডিকেট দীর্ঘ দিনের সমস্যা। এই সমস্যা সরকারের একার পক্ষে দূর করা সম্ভব না। সিন্ডিকেট রুখতে প্রয়োজন সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা। তিনি আরো বলেন, সবচেয়ে বড়ো কথা হলো অনিয়ম দূর করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের পাশাপাশি নিজের সংস্কারও অত্যন্ত জরুরি। তিনি রোগীদের সেবার মানোন্নয়নে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। উপদেষ্টা বলেন, রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শয্যার তুলনায় রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় অনেককে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। এ কারণে সরকার এই বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। বর্তমান সরকারের মেয়াদে না হলেও আগামী সরকার এ কাজ বাস্তবায়ন করবে।
তিনি বলেন, ই-জিপির মাধ্যমে হাসপাতালগুলোর সরঞ্জামাদি ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে স্বাস্থ্যখাতে অনিয়ম ও সিন্ডিকেট অনেকাংশেই নির্মূল করা সম্ভব হবে। স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে সরকার সব ধরনের সিন্ডিকেট ভাঙার চেষ্টা করছে।
নূরজাহান বেগম বলেন, করোনাকালে অনেক ডাক্তার, নার্স ও টেকনোলজিস্টসহ চিকিৎসা সেবার সঙ্গে জড়িত অনেকে মারা গেছেন। তাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে, কারণ তাদের অবদান ভোলার মতো নয়। তারপরও যারা সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এই যে আন্দোলন হলো- কেউ হাত হারিয়েছে, কেউ পা, আবার কারও চোখ নষ্ট হয়েছে। যারা সিন্ডিকেট করে তারা এগুলো দেখেনি। তাদের মধ্যে কি কোনো পরিবর্তন হবে না? কাজেই আমার-আপনার সবার মধ্যে যদি পরিবর্তন না আসে তবে দেশের পরিবর্তন হবে কেমন করে? প্রত্যেককে ভাবতে হবে, আমি কী করছি।
রংপুর শিশু হাসপাতাল প্রসঙ্গে তিনি বলেন, শিশু হাসপাতাল আমি দেখে যাব। এটা চালু না করার কোনো কারণ নেই। তবে হাসপাতাল চালু করতে হলে জনবল ও যন্ত্রপাতি লাগে। আগের সরকার এর জন্য কোনো পরিকল্পনা করেনি। বিষয়টি আমাদের মাথায় আছে।
মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার অব্যবস্থাপনা নিয়ে তিনি বলেন, হাসপাতালগুলোর সেবার মান উন্নয়নে বিশেষ নজর দিচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগ। একই সঙ্গে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী চিকিৎসক ও নার্সসহ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এসময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মোঃ আবু জাফর, রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আশিকুর রহমান, রংপুরের জেলাপ্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল, পুলিশ সুপার মোঃ আবু নাইম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এরপূর্বে উপদেষ্টা রংপুর জেলার তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। ###
আব্দুর রহমান মিন্টু
রংপুর ব্যুরো চীফ
আরও পড়ুন
কারো উশৃংখল বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর কাজ ব্যাহত হবে না
বড়লেখা পৌর বিএনপির কাউন্সিল, সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সম্পাদক আব্দুল হাফিজ
কুলাউড়ায় শ্রেণিকক্ষে সিলিং ফ্যান পড়ে ছাত্রী আহত