বাংলাদেশে গত বছর জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলোর তথ্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।
অ্যামনেস্টি তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘনের স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তিদের পাশাপাশি যারা নির্দেশ দিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের আশ্রয় না নিয়েই বিচার করতে হবে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করার আদেশ দিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মারণাস্ত্র ব্যবহার করে নির্বিচারে গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন।

রোম সনদের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী প্রতিটি ঘটনার বিচার চায় মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গতকাল বুধবার বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের পর সংগঠনটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এই আহ্বান জানায়।
বিবিসির ওই প্রতিবেদনে একটি ফাঁস হওয়া অডিও বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছে, আন্দোলন দমনে গুলির নির্দেশ দিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সাউথ এশিয়া ফেসবুক পেজে প্রকাশিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের বিক্ষোভে প্রাণঘাতী দমনপীড়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সহিংসতার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।

অ্যামনেস্টি জানায়, বিক্ষোভের সময় মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিটি ঘটনার নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে। সরাসরি সহিংসতাকারী কিংবা নির্দেশদাতা হোন না কেন, দোষীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন এবং মৃত্যুদণ্ডবিহীন বিচার প্রক্রিয়া চালাতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যেন রোম সংবিধির ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী অপরাধের ডকুমেন্ট আইসিসিতে পাঠানোর জোরালো পদক্ষেপ নেয়।
বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি বলেছে, বিবিসির বিশ্লেষিত নতুন তথ্যে প্রমাণিত হয়েছে, বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত বিক্ষোভের সময় একটি ব্যাপক দমনপীড়নের নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে অডিও প্রমাণ পাওয়া গেছে।
এ বিচার শুধু যারা সহিংসতা চালিয়েছে তাদের নয়, বরং যারা এর নির্দেশ দিয়েছে তাদের বিরুদ্ধেও হওয়া উচিত বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থাটি।
এনএনবাংলা/আরএম
আরও পড়ুন
বিদেশ যাওয়ার জন্য আদালতে বসুন্ধরা চেয়ারম্যান, দুদকের নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে আবেদন
সুযোগ পেয়েও হার এড়ানো গেল না প্রোটিয়াদের বিপক্ষে
১৭ কোটি মানুষের খাদ্যের যোগান দিচ্ছি, আশ্রয় দিচ্ছি ১৩ লাখ রোহিঙ্গাকে: প্রধান উপদেষ্টা