জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ আরএইচডি-খাগটেকা ভায়া রাঙ্গাউটি এলজিইডি রাস্তার মধ্যবর্তী স্থান ঘেষা আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্যের বাণিজ্যিক ফিসারি গিলে খাচ্ছে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা। এতে হাকালুকি হাওড়ে যাতায়াতকারি বোরো ও রবিশস্য চাষি, মৎস্যজীবি ও মৎস্য ব্যবসায়ি, জলমহাল ইজারাদারের লোকজন ও হাওড়পাড়ের ৫টি গ্রামের হাজার হাজার মানুষ ৪ বছর ধরে সীমাহীন ভোগান্তি পোয়াচ্ছেন। দক্ষিণভাগ আরএইচডি-খাগটেকা ভায়া রাঙ্গাউটি রাস্তাটি হাকালুকি হাওড়পাড়ের দাসেরবাজার-বাছিরপুর এলজিইডি রাস্তায় সংযুক্ত হয়েছে। রাস্তাটি হাওড়ে যাতায়াতের অন্যতম একটি রাস্তা। কিন্তু আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল ইসলামের ক্ষমতার দাপট ও স্বেচ্ছাচারিতায় চলাচল অনুপযোগি হয়ে ওঠেছে।
জানা গেছে, জুড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল ইসলাম প্রায় ১০ বছর আগে এলজিইডি রাস্তা ঘেষে বাণিজ্যিক ফিসারি খনন করেন। সেই সময়ে রাস্তা ঘেষে খননকাজ না করতে স্থানীয় লোকজন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ থেকে বাধা-নিষেধ করলেও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে তিনি তাদের চুপ রাখেন। ফিসারির পানির তোড়ে কয়েক বছরে রাস্তা ভেঙ্গে ফিসারিতে বিলীন হয়ে গেছে। উঠে গেছে সরকারি বরাদ্দে নির্মিত রাস্তার এইচবিবি (ইটসলিং) কাজ। কুতুব উদ্দিনের বাড়ি থেকে রবি দাসের বাড়ি পর্যন্ত প্রায় দেড়শত মিটার রাস্তা ধসে পড়েছে ফিসারিতে। এতে বিগত চার বছর ধরে পূর্ব রাঙ্গাউটি, মধ্য রাঙ্গাউটি, পশ্চিম রাঙ্গাউটি, খাগটেকা ও তালতলা গ্রামের কয়েক হাজার বাসিন্দা ও শিক্ষার্থীদের চরম দুর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। যানবাহনতো দূরের কথা রিকশা ও ঠেলাগাড়িতেও মুমূর্ষু রোগি ও লাশ নিয়ে যাতায়াত করা যায় না। কয়েকশ’ শিক্ষার্থী পড়েছে বিপাকে। এছাড়া রাস্তাটি হাকালুকি হাওড়ে যাতায়াতের অন্যতম রাস্তা হওয়ায় বোরো ও রবিশস্য চাষি এবং জলমহাল ইজারাদারের লোকজন ও মৎস্য ব্যবসায়িরা কোনো ধরণের যানবাহন নিয়ে যাতায়াত করতে পারছেন না।
সরেজমিনে গেলে ভুক্তভোগি পশ্চিম রাঙ্গাউটি গ্রামের খোকা লাল দাস, অতুল দাস, বিকাশ দাস, তালতলা গ্রামের আলাউদ্দিন, গৌরকৃষ্ণ দাস, হীরা লাল দাস প্রমুখ জানান, জুড়ী উপজেলার বাসিন্দা সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল ইসলাম রাস্তা ঘেষে ফিসারি খনন করায় ধীরে ধীরে রাস্তাটি ভাঙ্গতে থাকে। চার বছরে ৫ গ্রামের জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র রাস্তাটির প্রায় দেড়শত মিটার স্থান ভেঙ্গে ফিসারিতে ধসে পড়ে চলাচল অনুপযোগি হয়ে ওঠেছে। এতে এলাকাবাসি মারাত্মক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
সরকার পরিবর্তনের পর থেকে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য বদরুল ইসলাম আত্মগোপনে রয়েছেন। মোবাইল ফোনও বন্ধ থাকায় এব্যাপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
উপজেলা প্রকৌশলী মো: তারেক বিন ইসলাম জানান, ফিসারীর জন্য রাস্তাটি বিলীন হয়ে যাচ্ছে তা এলজিইডি অফিস থেকে অনেক বার ব্যবস্থা নিতে ফিসারি মালিককে বলা হয়েছিল। রাস্তার যেই অংশটি এইচবিবি হয়েছে, সেটার কাজ চলাকালীনও তাকে বলা হয়, কিন্তু নানা কারণে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। সরেজমিনে পরিদর্শন করে রাস্তাটির উন্নয়নে প্রয়োজনীয় স্কিম নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন
সিলেটের ৬১৮টি মন্ডপে চলছে দুর্গা পূজার প্রস্তুতি: শুরু ২৮ সেপ্টেম্বর
সোনাইমুড়ীতে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পিছনে বাসের ধাক্কা দিলে চালক নিহত ৮ জন আহত
ষড়যন্ত্র করে গণতন্ত্রকে সাময়িকভাবে বাঁধাগ্রস্ত করা যায়, কিন্ত দীর্ঘ মেয়াদের গণতন্ত্রেরই বিজয় হয়