September 18, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 18th, 2025, 1:17 pm

আজ বিশ্ব বাঁশ দিবস

গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরেই বাঁশের ছোঁয়া আছে। ঘরবাড়ি বানানো থেকে শুরু করে সাঁকো, মাছ ধরার ফাঁদ, ঝাড়ু কিংবা খেলনা—সবখানেই বাঁশের ব্যবহার। শহরেও এর কদর কম নয়; আধুনিক ইন্টেরিয়র ডিজাইন থেকে শুরু করে হাতে তৈরি ফ্যাশন পণ্য পর্যন্ত এখন বাঁশের ব্যবহার ছড়িয়ে পড়েছে। তাই বাঁশকে অনেকে বলেন—‘গরিবের লোহা’।

আজ ১৮ সেপ্টেম্বর, বিশ্বব্যাপী পালিত হচ্ছে ‘ওয়ার্ল্ড ব্যাম্বু ডে’ বা বিশ্ব বাঁশ দিবস। ২০০৯ সালে ব্যাংককে অনুষ্ঠিত অষ্টম বিশ্ব বাঁশ কংগ্রেসে প্রথমবার দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য ছিল বাঁশের বহুমুখী ব্যবহার ও পরিবেশগত গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। এ প্রস্তাবটি দেন সংস্থার তৎকালীন সভাপতি কামেশ সালাম। ওই কংগ্রেসে প্রায় ১০০টি দেশের প্রতিনিধিরা অংশ নেন এবং দিনটিকে আন্তর্জাতিকভাবে পালনের জন্য সম্মত হন।

বিশ্ব বাঁশ সংস্থা (World Bamboo Organization), যা ২০০৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়, এই দিবসের প্রচার–প্রসারে কাজ করছে। এ বছরের প্রতিপাদ্য— ‘নেক্সট জেনারেশন ব্যাম্বো: সলিউশন, ইনোভেশন অ্যান্ড ডিজাইন’।

পরিবেশবিদদের মতে, বাঁশ শুধু গ্রামীণ জীবনের সঙ্গী নয়, বরং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে এক প্রাকৃতিক যোদ্ধা। কারণ এটি দ্রুত বেড়ে ওঠে (এক দিনে প্রায় এক মিটার পর্যন্ত), প্রচুর কার্বন শোষণ করে বাতাসকে শুদ্ধ রাখে, আর মাটিকে আঁকড়ে ধরে ভূমিক্ষয় ঠেকায়। এ ছাড়া পান্ডার প্রধান খাদ্যও বাঁশের কচি পাতা। ফলে পৃথিবী থেকে বাঁশ হারিয়ে গেলে শুধু আমাদের জীবনযাত্রাই নয়, প্রাণবৈচিত্র্যের ভারসাম্যও নষ্ট হবে।

শুধু নির্মাণ বা আসবাবপত্র নয়, বাঁশ এখন অর্থনৈতিক উন্নয়নেরও বড় মাধ্যম। বিশ্বব্যাপী বাঁশ শিল্প কোটি টাকার সম্ভাবনা তৈরি করেছে। এ ছাড়া বাঁশ কোড়ল—অর্থাৎ কচি ডালের ভেতরের অংশ—খাদ্য হিসেবে ব্যবহার হয় এবং এটি স্বাস্থ্য উপকারিতায় সমৃদ্ধ।

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বে সবচেয়ে বেশি প্রজাতির বাঁশ রয়েছে চীনে—প্রায় ৫০০ প্রজাতি। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ব্রাজিল, যেখানে আছে ২৩২ প্রজাতি। আর ৩৩ প্রজাতির বাঁশ নিয়ে অষ্টম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ।

তাই মজার ছলেই বলা যায়—আজ বাঁশের দিন। বাঁশ শুধু কাঠামো নয়, আমাদের সংস্কৃতির অংশ, হাস্যরসের অংশ এবং পরিবেশ রক্ষারও এক নির্ভরযোগ্য সৈনিক।

 

এনএনবাংলা/