খুলনা ব্যুরো:
আদালতের আইন অমান্য করে অসুস্থ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের চলাচলের একমাত্র পথ আটকে দিয়েছে এক ব্যক্তি। খুলনা নগরীর ছোট মির্জাপুর ২য় গলিতে এ ধরণের অমানবিক ও দাম্ভিকতাপর্ণ কার্যকলাপে হতবাক এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানান, এই রাস্তা বহু বছর ধরে ওই পরিবার ব্যবহার করে আসছেন এবং এটি বন্ধ হলে তাদের দৈনন্দিন জীবন ও যোগাযোগে অচলাবস্থা দেখা দেবে।
স্থানীয়রা আরও জানান, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু হানিফ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের চাকুরী করতেন। এখন অসুস্থ বিছায়। আর এই সুযোগে তাঁর পার্শ্ববর্তী প্রতিবেশী সঞ্জয় কুমার আগারওয়াল দীর্ঘদিন যাবত ব্যবহৃত চলাচলের এই রাস্তা নিজের সম্পত্তি দাবি করে বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছেন। ২২ বছর ধরে এই রাস্তা ব্যবহার করে, এলাকার সবাই ব্যবহার করে আসছে, এটি ওই পরিবারের জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ মাধ্যম। হঠাৎ করেই রাস্তা বন্ধ করার চেষ্টায় আমাদের চলাচলে বাধা আসছে, যা একপ্রকার অধিকার লঙ্ঘন। ফলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের পাশাপাশি পুরো এলাকার মানুষ যাতায়াতে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত (২য়) খুলনায় মামলা চলমান। যার নং মিস আপীল ৮৫/১৩। মামলায় বিজ্ঞ বিচারিক আদালত উভয় পক্ষকে নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে আদালতের এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্থানীয় সঞ্জয় কুমার আগারওয়াল আবারও রাস্তা বন্ধ করে সেখানে পাকা দেয়াল নির্মাণ শুরু করেছেন, যা স্থানীয়দের চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু হানিফের ছেলে মো. নাজমুল হাসান এ ঘটনায় ১১ সেপ্টেম্বর খুলনা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। অভিযোগে তিনি প্রশাসনের কাছে ন্যায়সঙ্গত ও কার্যকর সমাধানের অনুরোধ জানিয়েছেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবু হানিফ জানান, আমরা ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছি এবং সরেজমিন তদন্ত ও প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করেছি। ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার প্রত্যাশা করছি।
এ বিষয়ে সঞ্জয় কুমার আগারওয়াল বলেন, এটি আমার ক্রয়কৃত জমি। তাদের পথ ছিল আমার জমির ওপর দিয়ে। এখন আমি সেটি আটকে দিয়েছি। আদালতের স্থিতাবস্থা ছিল। কিন্তু্ আমার জমিতে অন্যরা মামলা করবে আর আমি চুপচাপ বসে থাকবো।
স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা বলছেন, এই রাস্তা বন্ধ হলে ওই পরিবার শুধু নয় আমাদেরও জীবনযাত্রার উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। স্কুল, হাসপাতাল, বাজার ও অন্যান্য জরুরি স্থানগুলোতে যাতায়াত কঠিন হয়ে যাবে। আমরা চাই এই বিষয়ের মানবিক ও ন্যায়সঙ্গত সমাধান হোক।
স্থানীয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী এই বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হচ্ছে যাতে এলাকাবাসীর ন্যায্য অধিকার ও শান্তি রক্ষা পায়। এলাকাবাসীও আশা করছেন, তারা যাতে তাদের চলাচলের অধিকার হারাতে না হয় এবং দীর্ঘদিনের এই সংকট দ্রুত সমাধান হয়।

আরও পড়ুন
শ্রীমঙ্গলে প্রাণীসম্পদ সপ্তাহ উপলক্ষে প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
কুড়িগ্রামে ভ্রাম্যমান আদালতে দুটি ইট ভাটায় জরিমানা আদায়
মাদারগঞ্জে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রকে পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালে রূপান্তরের দাবিতে গণসমাবেশ