January 23, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, January 23rd, 2025, 11:29 am

আপাতত ট্রুডো সম্ভবত ট্রাম্পকে ঠান্ডা করার নীতি গ্রহণ করেছেন

জাস্টিন ট্রুডো ও ডোনাল্ড ট্রাম্পফাইল ছবি রয়টার্স

অনলাইন ডেস্ক:
ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের হুমকির মুখে এত দিন পাল্টা শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেও এবার তিনি বললেন, যুক্তরাষ্ট্রকে সোনালি সময় ফিরে পেতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে কানাডা। সুর নরম করেছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো।

গত সোমবার শপথ নেওয়ার পর দেওয়া বক্তৃতায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সোনালি সময় ফিরিয়ে আনতে চান তিনি। এ প্রসঙ্গেই ট্রুডো এ কথা বলেছেন। তিনি আরও বলেন, আজকের এই অনিশ্চিত পৃথিবীতে কানাডা অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য অংশীদার।

নির্বাচনী প্রচারণার সময় থেকেই ট্রাম্প বলে আসছেন, চীনের পণ্যের পাশাপাশি কানাডা ও মেক্সিকোর পণ্যেও শুল্ক আরোপ করবেন তিনি। সোমবার শপথ নেওয়ার পর দেওয়া ভাষণে ট্রাম্প কানাডার প্রসঙ্গে কিছু না বললেও রাতে ওভাল অফিসে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, কানাডার পণ্যে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে শুল্ক আরোপ করা হবে। চীনের পণ্যের ক্ষেত্রেও একই সময়সীমা দিয়েছেন তিনি।

এখন সময়সীমা পাওয়ার পর কানাডাকে ঠিক করতে হচ্ছে, তারা কি প্রতিশোধের পথে হাঁটবে, নাকি যুক্তরাষ্ট্রকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করবে। আপাতত ট্রুডো সম্ভবত ট্রাম্পকে ঠান্ডা করার নীতি গ্রহণ করেছেন। ট্রাম্প যে কানাডার পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন, তা এড়ানোর চেষ্টায় ট্রুডোর এই নরম সুর বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

কানাডা অবশ্য একধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আরোপ করলে তারা কীভাবে পাল্টা ব্যবস্থা নেবে, সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কোন কোন পণ্যে শুল্ক আরোপ করা হবে, সে বিষয়ে তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা ফ্লোরিডার জুসে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগের জামানায় ট্রাম্প যখন কানাডার ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামে শুল্ক আরোপ করেছিলেন, তখন এই কৌশল কাজে এসেছিল।

তবে এবার ট্রাম্প কানাডার ঠিক কোন কোন পণ্যে শুল্ক আরোপ করবেন, তা পরিষ্কার নয়। ফলে কানাডা এ বিষয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে আছে। কানাডা প্রশাসনও পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত।

জাস্টিন ট্রুডো অবশ্য বলেছেন, সব পথই খোলা আছে—প্রয়োজন হলে যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি রপ্তানিতে করারোপ বা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে। কিন্তু দেশটির অ্যালবার্টা রাজ্যপ্রধান ড্যানিয়েল স্মিথ এ বিষয়ে একমত নন। সেটা হলে কানাডার তেলসমৃদ্ধ রাজ্য আলবার্টা তীব্র বিরোধিতা করবে। তারা তেলকে দর-কষাকষির অস্ত্র করতে চায় না।

গত মঙ্গলবার জাস্টিন ট্রুডোকে কিছুটা হতাশ দেখা গেছে। এমনিতে তিনি কানাডায় জনপ্রিয়তা হারিয়েছেন। পদত্যাগেরও ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের প্রথম জামানায়ও এ ধরনের অনিশ্চয়তা ছিল; যদিও তখন কানাডার পক্ষে তা গঠনমূলকভাবে সামাল দেওয়া সম্ভব হয়েছে।

বাস্তবতা হচ্ছে, বাণিজ্যের জন্য কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল; কানাডার ৭৫ শতাংশ রপ্তানি পণ্যের গন্তব্য যুক্তরাষ্ট্র। স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্র তাদের সব পণ্যে শুল্ক আরোপ করলে বিপদে পড়বে কানাডা। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানি পণ্যের মাত্র ১৭ শতাংশের গন্তব্য হচ্ছে কানাডা।

অর্থাৎ দুই দেশের বাণিজ্যে ভারসাম্যের বড় ধরনের অভাব আছে। সে কারণে বাণিজ্য–বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে যেভাবে কানাডার সঙ্গে বাণিজ্য–সংঘাতে জড়ানো সম্ভব, কানাডার পক্ষে সেভাবে করা সম্ভব নয়। বিষয়টি তার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জিং।