নিজস্ব প্রতিনিধি ময়মনসিংহ : আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বলেছেন সত্য মিথ্যার মধ্যে পার্থক্য নির্ণয়কারী ছিল বদর দিবস। এই দিনে হক এবং বাতিলের মধ্যে যাচাই বাছাই হয়েছে। কিছু সংখ্যক লোক আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট কবুল হয়েছেন, তাঁরা প্রশংসার পাত্র হয়েছেন এবং কেয়ামত না হওয়া পর্যন্ত তাদের বিরত্বগাঁথা ভূমিকা পৃথিবীতে আলোচনা হতে থাকবে। কারণ তাঁরা সত্যের পথে লড়াই করেছেন। বদরের যুদ্ধের আগে রাসূল (সাঃ) আল্লাহর কাছে দোয়া করেছিলেন যে, হে আল্লাহ তুমি আমাদের এই যুদ্ধে বিজয় দান করো, আর আমরা যদি পরাজিত হই তাহলে কেয়ামত পর্যন্ত তোমার উচ্চারণ করা কেউ থাকবে না। আল্লাহর রসূল আরো বলেছিলেন, হে আমার রব তুমি ওয়াদা করেছিলে তুমি আমাদেরকে সাহায্য করবে, আজকে তুমি ওয়াদ পূরণ কর।
সোমবার ( ১৭ মার্চ) নগরীর তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মহানগর উলামা বিভাগের সভাপতি মাওলানা সুলাইমান আহসানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আলমগীর হুসাইনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগীয় সেক্রেটারি এডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, যুদ্ধটা হয়েছিলো ১৭ রমজান। এই রমজানের তিনটি ঐতিহাসিক ঘটনা আছে। রমজান হচ্ছে সেই মাস যে মাসে পবিত্র কুরআন নাযিল করা হয়েছে। এটা হচ্ছে সেই মাস যে কুরআন বিজয় লাভ করেছে। তৃতীয় ঘটনাটি হলো সকল দম্ভ চূর্ণ করে দিয়ে পবিত্র মক্কা নগরী বিজয় হয়েছিলো এবং সেটা ছিলো ২০ রমজান। আর রমজানের বিজোর রাত্রি কুরআন নাযিল হলো। তিনটি ঘটনাই ঘটেছে এই রমজান মাসে।
মতিউর রহমান আকন্দ আরও বলেন, রোজার যে মূল শিক্ষা তা হলো আল্লাহ তায়ালা বলেছেন এই কুরআন নাযিল করা হয়েছে রমজান মাসে যাতে অন্ধকারে জাহেলিয়াতে নিমজ্জিত একটি সমাজ রাষ্ট্র পরিবারকে টেনে আলোর পথে নিয়ে আসবে। এটা ছিলো কুরআনের মূল উদ্দেশ্য। আর এই কাজটি যারা করবে তাদের মধ্যে একটি গুণ থাকতে হবে সেটি হলো তাকওয়া। একমাত্র আল্লাহর ভয়ে তারা চলেবে আর কাউকে ভয় করবে না। আল্লাহর ভয় ছাড়া জাহেলিয়াতের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো সম্ভব নয়। কারণ আল্লাহর ভয় যার মধ্যে আছে সে কখনও মাথা নত করে না। একমাত্র আল্লাহর কাছে মাথা নত করে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এই জন্যই কালামে হাকিমে রোজা ফরজ করে বলেছিলেন, আশা করা যায় আল্লাহর ভয়ে সমস্ত খারাপ, অন্যায়, জলুমু নির্যাতন এবং জাহেলিয়াতের কাছ থেকে বিরত থেকে শুধুমাত্র আল্লাহর পথে তোমরা অনুগত হবে এই কুরআনকে বিজয়ী করার জন্য।
তিনি আরো বলেন, আজকে বাংলাদেশে কুরআন সেই পজিশনে নেই। মাঝে মাঝে কিছু লোককে বলতে শুনি কুরআনে তো রাজনীতি নেই। উনি কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছেন আমি জানি না। তবে আমার মনে হয় উনি একজন শ্রেষ্ঠতম মুর্খ । পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বড় নেতা হলেন বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) । রোমান এবং পারস্য সাম্রাজ্য তাঁর কাছে পদানত হয়েছিল। কোরাইশদের পরাজয় হয়েছিল তাঁর কাছে। মক্কা বিজয় হয়েছিলো তাঁর কাছে। তিন একজন সমরবিদ, তিন একজন যুদ্ধ নায়ক। তিনি একজন রাষ্ট্র নায়ক। আর এখন বলা হয় ইসলামে রাজনীতি নেই! এই কথা বলে বাংলাদেশের মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখা হয়েছে। প্রিয় আলেম উলামাগণ আমি আপনাদেরকে অনুরোধ করতে চাই পৃথিবীর ইতিহাসে সত্যের কাছে মিথ্যার পরাজয় হবে আর মিথ্যার উপর সত্যের বিজয় হবে। এটা হলো ইসলাম। আপনি সত্য ধরে রেখেছেন কিন্তু মিথ্যার উপর বিজয় হতে পারছেন না তাহলে আপনার সত্যে মধ্যে বেজাল আছে। যে সত্য মিথ্যার উপর বিজয় হতে পারে না সেই সত্য আপনি ধরে রাখতে পারেন নাই। পৃথবীতে ধনী গরীব বলতে কিছু থাকবে না। সবাই সমান হয়ে যাবে। ইসলাম আমাদের এই শিক্ষাই দেয়।
বদর দিবস ও রমযানের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভার উদ্বোধক ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শূরা সদস্য ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ময়মনসিংহ মহানগরীর আমীর মাাওলানা কামরুল আহসান এমরুল।
আলোচনা সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন কেন্দ্রীয় উলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা মুফতি খলিলুর রহমান মাদানী। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী দাওয়া সেন্টারের চেয়ারম্যান মাওলানা মুফতি নুরুজ্জামান নোমানী, ময়মনসিংহ জেলা জামায়াতে আমীর মোঃ আব্দুল করিম, বাকৃবি’র প্যাথলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোঃ মকবুল হোসেন, ময়মনসিংহ জেলা উলামা বিভাগের সভাপতি উপাধ্যক্ষ মাওলানা বদরুল আলম। এছাড়াও ছিলেন ময়মনসিংহ মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারি অধ্যাপক্ষ শহীদুল্লাহ কায়সার, সহকারী সেক্রেটারি আনোয়ার হাসান সুজন, মাহবুবুল হাসান শামীম, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যাপক আল হেলাল তালুকদারসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের আলেম উলামাবৃন্দ।
আরও পড়ুন
ভাঙ্গুড়ায় কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ বিতরণ
কুমিল্লায় বিএনপি-জামায়াত সমর্থকদের সংঘর্ষ, আহত – ২০
ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে আইনজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে- এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার