নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
ঢাকা শহরের একটি শিক্ষানুরাগী পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন আসিফ মাহের। তাঁর পরিবার ছিল শিল্প ও সাহিত্যপ্রেমী, যা তাঁকে শৈশব থেকেই আলাদা করে তুলেছিল। বাবা ছিলেন একজন মেধাবী মানুষ, কিন্তু দুঃখজনকভাবে তাঁর বাবা ছোটবেলায় মারা যান। তবে মায়ের কঠোর পরিশ্রম এবং সুশিক্ষার মাধ্যমে তিনি এমন এক প্রজন্ম তৈরি করেন, যা ভবিষ্যতে সাফল্যের নতুন দিগন্ত খুলে দেয়।
শিক্ষাগত জীবনে আসিফ মাহের ছিলেন অত্যন্ত প্রজ্ঞাবান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিংয়ে এমকম এবং মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় এমবিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তীতে পিজিডিএইচআরএম (PGDHRM) ডিগ্রি লাভ করেন, যা তাঁকে মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনায় এক অনন্য দক্ষতার অধিকারী করে তোলে।
তবে আসিফের জীবন শুধু পড়াশোনা বা ক্যারিয়ার পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিল না। ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি ছিল তাঁর বিশেষ আকর্ষণ। তিনি তাঁর মায়ের উৎসাহে সঙ্গীত শিক্ষা শুরু করেন এবং বিভিন্ন ধরনের সঙ্গীতে পারদর্শী হন। বিশেষ করে পিয়ানো, ক্লাসিক্যাল গান এবং গিটার বাজানোতে তাঁর অভ্যস্ততা ছিল। তিনি তাঁর মামা, ওয়ারফেজ ব্যান্ডের ড্রামার এবং ব্যান্ড লিডার Tipu এর হাত থেকে অনুপ্রেরণা পেয়েছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালে আসিফ নানা সামাজিক কার্যক্রমে যুক্ত ছিলেন। বিশেষ করে ব্রিটিশ কাউন্সিলের “Connecting Future” প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হয়ে তিনি বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা এবং যুক্তরাজ্যের যুব সমাজের সঙ্গে কাজ করেছেন। তিনি স্ট্রিট চিলড্রেন শিক্ষার
জন্য কাজ করেছেন, যুব সংসদে অংশ নিয়েছেন, এবং যৌনবৈষম্য নির্মূলের জন্য নানা প্রকল্পে কাজ করেছেন। এই প্রকল্পগুলোতে তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলী বিকশিত হয় এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের পক্ষ থেকে তিনি যুক্তরাজ্যে একটি কর্মশালায় অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
কর্মজীবনে আসিফ মাহেরের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল মানবসম্পদ। তিনি মানুষের ক্ষমতায়নে বিশ্বাসী ছিলেন এবং তাঁর এইচআর ক্যারিয়ারে অটোমেশন এবং প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন। বিশেষত, HRIS, পে রোল এবং অ্যাপ্রেইজাল অটোমেশন নিয়ে তিনি কাজ করেন। এই প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছেন এবং প্রতিষ্ঠানকে আরও কার্যকরীভাবে পরিচালিত করতে সাহায্য করেছেন।
এখন, আসিফ মাহের গ্যালাক্সি বাংলাদেশে এক দশকের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের পর, এইচআর ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর উদ্যোগে গ্যালাক্সি বাংলাদেশে মানবসম্পদ বিভাগে অটোমেশন এবং এআই প্রযুক্তির ব্যবহারে বিশেষ অগ্রগতি হয়েছে। আসিফ বর্তমানে HR এবং AI ট্রান্সফরমেশন নিয়ে কাজ করছেন, যা শুধুমাত্র তাঁর প্রতিষ্ঠানকেই নয়, বরং জাতিকে উপকৃত করবে।
তিনি বর্তমানে HRIS সিস্টেমের অটোমেশন, পে রোল অটোমেশন এবং কর্মী মূল্যায়ন প্রক্রিয়াকে আরও আধুনিক এবং দক্ষ করে তুলতে কাজ করছেন। আসিফ বিশ্বাস করেন যে, এই ধরনের প্রযুক্তিগত পরিবর্তনগুলি কর্মচারীদের জন্য আরও স্বচ্ছতা, দ্রুততা এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করবে, যা প্রতিষ্ঠান এবং দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, “অটোমেশন কেবল একটি কার্যকরী সমাধান নয়, বরং এটি আমাদের মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনাকে আরও স্মার্ট এবং ফলপ্রসূ করে তুলছে।”
আসিফ মাহেরের নেতৃত্বে গ্যালাক্সি বাংলাদেশে মানবসম্পদ বিভাগের কার্যক্রম আরও আধুনিক ও সহজ হয়েছে, এবং তাঁকে একজন সফল এইচআর লিডার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাঁর উদ্যোগগুলি অদূর ভবিষ্যতে কর্মক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং সৃজনশীলতা নিয়ে আসবে, যা দেশের করপোরেট দুনিয়ায় পরিবর্তন আনতে সাহায্য করবে।
আজকের প্রজন্মের জন্য আসিফ মাহেরের গল্প এক অনুপ্রেরণার কাহিনী, যা প্রমাণ করে যে নেতৃত্ব, প্রযুক্তি এবং সৃজনশীলতার সমন্বয়ে যে কোনো চ্যালেঞ্জ জয় করা সম্ভব। তাঁর এআই ট্রান্সফরমেশন উদ্যোগ, যে জাতির উন্নয়ন এবং কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে, তা আমাদের জন্য এক অনুপ্রেরণা।
আরও পড়ুন
আপনার মৃত্যুর পর ফেসবুক অ্যাকাউন্টের কি হবে জানেন?
এনআইডির তথ্য বিক্রি: সাবেক সিনিয়র সচিব জিয়াউল আলম গ্রেপ্তার
চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে স্কাইপ