March 4, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, March 4th, 2025, 3:10 pm

ইনহেলার ব্যবহার করলে কি রোজা ভেঙে যায়?

ইনহেলার ব্যবহার করলে শ্বাসকষ্ট দূর হয়

ইসলাম ডেস্ক:

ইনহেলার কী?

শ্বাসের মাধ্যমে ওষুধ গ্রহণ করার একটি ছোট যন্ত্রকে ইনহেলার বলা হয়। এর মধ্যে সালবিউটামল বা সালমেটেরল বা স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত থাকে, যাতে এটি গ্যাস হিসেবে মুখ দিয়ে গ্রহণ করলে সেই ওষুধ মিশ্রিত গ্যাস শ্বাসনালিতে প্রবেশের পর শ্বাসনালির সংকোচন দূর হয় ফলে শ্বাস চলাচলে আর কষ্ট থাকে না।

ইনহেলার ব্যবহার করলে কি রোজা ভেঙে যাবে?
রোজা অবস্থায় ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে কি না, এ বিষয়ে আলিমদের মধ্যে দুই রকম মত রয়েছে:
প্রথম মত: রোজা ভাঙবে না
একদল আলেমের মতে, ইনহেলার ব্যবহারে রোজা নষ্ট হয় না। কারণ ইনহেলারের স্প্রেতে থাকা তরল পদার্থ খুবই সামান্য পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করে। এটি মূলত ক্ষুদ্র কণায় বিভক্ত হয়ে শ্বাসনালীতে যায়, কিছু অংশ গলনালীতে থাকে এবং অতি সামান্য অংশ পাকস্থলীতে পৌঁছতে পারে। তবে এই পরিমাণ এতই নগণ্য যে, কুলি বা নাকে পানি নেওয়ার সময় যে পরিমাণ পানি গলায় চলে যেতে পারে, তার চেয়েও কম। যেহেতু কুলি বা নাকে পানি দেওয়ার ফলে রোজা ভঙ্গ হয় না, তাই ইনহেলার ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একই বিধান প্রযোজ্য হবে বলে তারা মনে করেন।

এছাড়া মিসওয়াক করার বিষয়টি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরা হয়। গবেষকদের মতে, মিসওয়াকের রাসায়নিক উপাদান লালার সঙ্গে মিশে গলনালীতে প্রবেশ করে, তবুও তা রোজার জন্য ক্ষতিকর নয়। আমের ইবনে রবিআহ (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রাসুলকে (সা.) রোজা অবস্থায় বহুবার মিসওয়াক করতে দেখেছি। (সুনানে তিরমিজি: ৭২৫)
এই মত অনুসারে, ইনহেলার ব্যবহারে রোজা নষ্ট হয় না। সৌদি আরবের ফাতওয়া বোর্ডের স্থায়ী কমিটিসহ অনেক আলেম এই মত গ্রহণ করেছেন।

দ্বিতীয় মত: রোজা ভেঙে যাবে
অন্য একদল আলেমের মতে, ইনহেলার ব্যবহারের ফলে রোজা ভেঙে যায়। কারণ ইনহেলার ব্যবহার করলে এর স্প্রের উপাদান পাকস্থলীতে প্রবেশ করে, যা রোজা ভঙ্গের কারণ। মুফতি মুহাম্মাদ তাকি উসমানি এবং ড. ওয়াহবা যুহায়লি এই মত গ্রহণ করেছেন। তাঁদের মতে, ইনহেলার স্প্রে করলে এর মধ্যে থাকা ওষুধের সামান্য অংশ হলেও পাকস্থলীতে পৌঁছে, ফলে ইনহেলার ব্যবহার করলে রোজা ভেঙে যাবে।
তাদের মতে, শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে রোগীর জন্য ইনহেলার নেওয়া বৈধ। এক্ষেত্রে তিনি রোজা ভাঙতে পারেন, তবে পরে সেই রোজার কাজা আদায় করতে হবে। আর কারো যদি এই ওজর আজীবন থাকে, কখনোই তিনি দিনের বেলা ইনহেলার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকতে না পারেন, তাহলে তিনি তার রোজাগুলোর ফিদয়া আদায় করবেন।