অনলাইন ডেস্ক :
ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে বলিভিয়া। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দেশটি জানায়, গাজা উপত্যকায় হামলার কারণে তারা এই সিন্ধান্ত নিয়েছে। অন্যদিকে বলিভিয়ার প্রতিবেশী দেশ কলম্বিয়া এবং চিলি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করেছে। দক্ষিণ আমেরিকার তিনটি দেশ গাজায় ইসরায়েলের ব্যাপক হামলায় ফিলিস্তিনি নাগরিকদের মৃত্যুর নিন্দা জানিয়েছে। বলিভিয়ার ডেপুটি পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফ্রেডি মামানি এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘বলিভিয়া গাজা উপত্যকায় সংঘটিত আগ্রাসী এবং অসমতাপূর্ণ ইসরায়েলি সামরিক হামলার কারণে ইসরায়েলি রাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’ ঘটনার বিষয়ে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
এর আগে দেশ তিনটি গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিল। বলিভিয়া এবং চিলি মানবিক সহায়তার জন্য চাপ দিয়েছিল। এছাড়া ইসরায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের জন্য অভিযুক্তও করেছিল। কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেট্রো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্স(সাবেক টুইটার)-এ একটি পোস্টে লিখেছেন, ইসরায়েল ফিলিস্তিনে যা করছে তা গণহত্যা। মেক্সিকো এবং ব্রাজিলের মতো ল্যাটিন আমেরিকার অন্যান্য দেশও যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে। স্থানীয় সময় গত শুক্রবার ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা বলেছেন, “আমাদের কাছে এখন যা আছে তা হল, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর পাগলামি। যিনি গাজা উপত্যকাকে নিশ্চিহ্ন করতে চান।”
বলিভিয়া হলো প্রথম দেশ যারা সক্রিয়ভাবে গাজা যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে। এর আগেও বলিভিয়া ২০০৯ সালে বামপন্থী রাষ্ট্রপতি ইভো মোরালেসের সরকারের অধীনে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল। সেটাও গাজায় ইসরায়েলের পদক্ষেপের প্রতিবাদ হিসেবে। এরপর ২০২০ সালে দক্ষিণপন্থী অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি জিনাইন আনেজের সরকার সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠা করে। বলিভিয়ার প্রেসিডেন্ট আর্স স্থানীয় সময় গত সোমবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বলেছেন, ‘আমরা গাজায় সংঘটিত যুদ্ধাপরাধের নিন্দা জানাই। আমরা আন্তর্জাতিক আইন মেনে মানবিক সহায়তার নিশ্চয়তা দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক উদ্যোগকে সমর্থন করি।’
গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি হামলায় তিন হাজার ৫৪২ শিশুসহ ৮ হাজার ৫২৫ জন নিহত হয়েছে। জাতিসংঘের কর্মকর্তারা বলছেন, গাজার বেসামরিক জনসংখ্যার ২.৩ মিলিয়নের মধ্যে ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ গৃহহীন হয়েছে। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী অভিযোগ করেছে, হামাসের যোদ্ধা, কমান্ডারা বেসামরিক ভবনগুলোর নিচে সুরঙ্গ করে নিজেদের রক্ষা করছে। তবে হামাস এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের হামাস সশস্ত্র গোষ্ঠী আক্রমণ চালায়। এর পরেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ইসরায়েল পাল্টা হামালা চালিয়ে যাচ্ছে। সূত্র: রয়টার্স
আরও পড়ুন
ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে প্রস্তুত ইতালি : মেলোনি
ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিচ্ছে ইসরায়েল, পশ্চিম তীর ও গাজায় পৌঁছেছে কয়েকটি বাস
অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ৩ জন