January 8, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, January 7th, 2025, 7:18 pm

ইসলামে নিষিদ্ধ যে ধরনের নাম রাখা 

শিশুর জন্য সঠিক ও সুন্দর নাম নির্বাচন করা বাবা-মায়ের দায়িত্ব

অনলাইন ডেস্ক:
জীবনে মানুষ সবচেয়ে বেশিবার যে শব্দটি শোনে তা হলো তার নিজের নাম। মৃত্যুর পরও তার নাম রয়ে যায়। ওই নামেই মানুষ তাকে স্মরণ করে। হাদিসে আছে কেয়ামতের দিনও মানুষকে তার নাম ধরে ডাকা হবে। তাই ইসলামে মানুষের নাম সঠিক ও সুন্দর হওয়াকে, উত্তম অর্থবোধক হওয়াকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, তোমাদেরকে কেয়ামতের দিন তোমাদের নাম এবং বাবার নাম ধরে ডাকা হবে, তাই তোমাদের নাম সুন্দর করো। (সুনানে আবু দাউদ)

শিরক, অসার দাবি বা ভ্রান্ত বিশ্বাস প্রকাশ করে এ রকম নাম রাখা ইসলামে হারাম। ভুলক্রমে কারো এ রকম কোনো নাম রাখা হলে তা পরিবর্তন করা জরুরি। আমরা এখানে ইসলামে নিষিদ্ধ তিন ধরনের নামের ব্যাপারে আলোচনা করছি:

১. আল্লাহর নাম ছাড়া অন্য কোনো শব্দের সাথে ‘আবদ’ বা ‘গোলাম’ যুক্ত করে নাম রাখা
ইসলামের মৌলিক আকিদা বা বিশ্বাস অনুযায়ী মানুষ শুধু আল্লাহর বান্দা বা দাস। কোনো মানুষকে নবি, ওলি, ফেরেশতাসহ আল্লাহর যে কোনো সৃষ্টির বান্দা মনে করা বা কোনো সৃষ্টির বান্দা হিসেবে নিজের বা অন্য কোনো মানুষের পরিচয় দেওয়া হারাম। তাই আল্লাহর নাম নয় এমন কোনো নাম বা শব্দের সাথে ‘গোলাম’ বা ‘আবদ’ শব্দ যুক্ত করে নাম রাখা ইসলামে সুস্পষ্টভাবে হারাম। যেমন আবদুল ওজ্জা অর্থাৎ ওজ্জার বান্দা, আবদুশ শামস অর্থাৎ সূর্যের বান্দা, আবদুন নবি অর্থাৎ নবির বান্দা, গোলাম জিবরাইল অর্থাৎ জিবরাইলের বান্দা ইত্যাদি নাম রাখা ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম।

অনেক শব্দ আল্লাহর নাম না হলেও মানুষ আল্লাহর নাম মনে করে যেমন ‘মাবুদ’ ‘মওজুদ’ ইত্যাদি। এসব শব্দের শুরুতে ‘আবদ’ বা ‘গোলাম’ যুক্ত করে নাম রাখা থেকেও বিরত থাকতে হবে।
২. আল্লাহর জন্য বিশেষায়িত নাম রাখা

আল্লাহ তাআলার যেসব গুণবাচক নাম শুধু আল্লাহ তাআলার জন্য বিশেষায়িত, সেসব নামে কোনো মানুষের নামকরণ করা হারাম। যেমন আল্লাহ, আর-রহমান, আল-হাকাম, আল-খালেক ইত্যাদি নাম আল্লাহর জন্য বিশেষায়িত। এগুলো মানুষের নাম হতে পারে না। এ সব শব্দের সাথে ‘আবদ’ বা ‘গোলাম’ শব্দ যুক্ত করে মানুষের নাম রাখা যেতে পারে যেমন আবদুল্লাহ অর্থাৎ আল্লাহর বান্দা, আবদুর রহমান অর্থাৎ পরম দয়াময়ের বান্দা আবদুল হাকাম অর্থাৎ মহাবিচারকের বান্দা, আবদুল খালেক অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার বান্দা।

৩. শুধু আল্লাহর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে এমন গুণবাচক নাম রাখা
শুধু আল্লাহর জন্য প্রযোজ্য হতে পারে এমন গুণবাচক নাম রাখাও নিষিদ্ধ। যেমন শাহেনশাহ অর্থাৎ জগতের বাদশাহ বা মালিকুল মুলক অর্থাৎ রাজাধিরাজ ইত্যাদি নাম রাখা নিষিদ্ধ।

শিশুর প্রতি বাবা-মায়ের একটি কর্তব্য হল তার সঠিক ও সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা। আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, বাবার ওপর সন্তানের অধিকার হচ্ছে, সে তার উত্তম নাম রাখবে, তাকে ভালো স্থানে রাখবে এবং তাকে উত্তম আদব শিক্ষা দেবে। (শুআবুল ইমান লিল বাইহাকি)

সুতরাং এ বিষয়ে অবহেলা করার কোনো সুযোগ নেই। শিশুর নাম রাখার আগে বাবা মায়েরা যেন অবশ্যই নামের অর্থ ভালোভাবে জেনে নেন। কোনো ভুল বা খারাপ অর্থের শব্দ যেন শিশুর নাম হিসেবে নির্ধারিত না হয়। নাম রাখার আগে কোনো আলেমের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া যেতে পারে।