আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে চলাচলে বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) সাধারণ মানুষের জন্য কিছু নিরাপত্তা পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ।
ঈদ নিরাপদ ও নির্বিঘ্নে উদযাপনের লক্ষ্যে নাগরিকদের জন্য পুলিশ এইসব প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছে। যেখানে যাত্রীদের পর্যাপ্ত সময় নিয়ে ঈদের ভ্রমণ পরিকল্পনা করতে এবং ভ্রমণের সময় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার বিষয় বিবেচনায় রাখতে বলা হয়।
এদিকে, চালককে দ্রুত গতিতে গাড়ি চালাতে তাগিদ না দিতে এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাসের ছাদে কিংবা ট্রাক, পিকআপ ও অন্যান্য পণ্যবাহী যানবাহনে ভ্রমণ না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশিকায় বলা হয়- সড়ক পারাপারের ক্ষেত্রে জেব্রা ক্রসিং অথবা ফুট ওভারব্রিজ ব্যবহার করুন। যেখানে জেব্রা ক্রসিং বা ফুট ওভারব্রিজ নেই সেখানে যানবাহনের গতিবিধি দেখে নিরাপদে সড়ক পার হউন। প্রয়োজনে পুলিশের সহায়তা নিন।
ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বেপরোয়া গতিতে না চালাতে এবং অপরিচিত কোনো ব্যক্তির নিকট থেকে খাবার না খেতে বলেছে পুলিশ।
বাস মালিকদের উদ্দেশ্য করে বলা হয়, অদক্ষ, অপেশাদার, ক্লান্ত বা অসুস্থ চালককে যাত্রীবাহী বাস ও গাড়ি চালাতে দেওয়া যাবে না। চালক যাতে নিয়ম মেনে গাড়ি চালায় এবং ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং না করে সেজন্য চালককে নির্দেশ দিতে হবে। বাসে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানো যাবে না। ফিটনেসবিহীন গাড়ি সড়কে বের করা যাবে না।
বাস চালকদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, ওভার স্পিডে গাড়ি চালাবেন না, ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং করবেন না। ক্লান্তি বা অবসাদ অথবা অসুস্থ অবস্থায় গাড়ি চালাবেন না। ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ গাড়ির প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সবসময় সঙ্গে রাখুন।
নির্দেশিকায় লঞ্চ, স্টিমার বা স্পিডবোটের যাত্রীদের প্রতি অনুরোধ করে বলা হয়, জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে নৌযানে উঠবেন না। নৌযানের ছাদে যাত্রী হয়ে ভ্রমণ করবেন না। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নৌযানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন। যাত্রাপথে ঝড় দেখা দিলে এদিকওদিক ছোটাছুটি না করে নিজের জায়গায় অবস্থান করুন। স্পিডবোটে ভ্রমণের ক্ষেত্রে লাইফ জ্যাকেট পরুন।
লঞ্চ, স্টিমার ও স্পিডবোট মালিকদের প্রতি বলা হয়, নির্ধারিত সংখ্যক ও নির্ধারিত গ্রেডের মাস্টার ও ড্রাইভার দ্বারা নৌযান পরিচালনা করুন। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় নৌযানের চলাচল বন্ধ রাখুন। নৌযানের মাস্টার ব্রিজে যাত্রী সাধারণের অবাধ চলাচল বন্ধ করার জন্য দু’পাশ অস্থায়ীভাবে বন্ধ করার ব্যবস্থা করুন। লঞ্চে পর্যাপ্ত বয়া রাখুন।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে নৌযান নিয়ে বন্দর ত্যাগ, ডেকের উপর যাত্রীদের বসার স্থানে মালামাল পরিবহন থেকে বিরত থাকা ও পর্যাপ্ত সংখ্যক বয়া এবং লাইফ জ্যাকেট নৌযানে রাখতে চালকদের প্রতি বলা হয়েছে।
আরও বলা হয়, যাত্রাপথে ঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিলে নৌযানকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিন বা তীরে ভিড়িয়ে রাখুন। নৌযানে মোবাইল ফোন ও রেডিও রাখুন এবং নিয়মিত আবহাওয়ার বুলেটিন শুনুন।প্রয়োজনে আবহাওয়া সংক্রান্ত অ্যাপ ব্যবহার করুন। বৈধ কাগজপত্রবিহীন নৌযান পরিচালনা থেকে বিরত থাকুন।
পরামর্শে বলা হয়, সব ফায়ার পাম্প ও অগ্নিনিরোধক যন্ত্রপাতির সঠিকতা নিশ্চিত করুন। দুর্ঘটনা কবলিত নৌযান শনাক্তকরণের লক্ষ্যে নৌযানগুলোতে ১০০ থেকে ১৫০ ফুট লম্বা দড়ি সম্বলিত বয়া এবং লাইফ জ্যাকেটের ব্যবস্থা রাখুন।
ট্রেন যাত্রীদের উদ্দেশ্যে বলা হয়, ট্রেনের ছাদে, বাফারে, পাদানিতে ও ইঞ্জিনে ঝুঁকিপূর্ণ ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন। ট্রেনে ভ্রমণের সময় পাথর নিক্ষেপ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন। ট্রেনে ভ্রমণকালে মালামাল নিজ দায়িত্বে রাখুন। বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকুন।
গুজবে বিভ্রান্ত না হয়ে যে কোনো তথ্যের সত্যতা যাচাই করতে পুলিশকে জানাতে ও জরুরি প্রয়োজনে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ কল করতে বলা হয়েছে।
প্রয়োজনে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের কন্ট্রোল রুম ০১৩২০০০১২৯৯, হাইওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৮২৫৯৮, রেলওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৭৭৫৯৮, নৌপুলিশ হেডকোয়ার্টার্স ০১৩২০১৬৯৫৯৮, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) ০১৭৭৭৭২০১৯৯ নম্বরে এবং জেলা পুলিশ সুপার ও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
এলো ফার্স্টলুক, কবে মুক্তি পাবে রানির নতুন সিনেমা
গরমে কিশমিশ ভেজানো পানি পান করা কেন জরুরি?
সাগর-রুনি হত্যা মামলার নথি আগুনে পুড়ে গেছে