November 20, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, July 7th, 2021, 12:38 pm

ঈশ্বরগঞ্জে মাছ ধরার উপকরণ বিক্রির ধুম

সাইফুল ইসলাম তালুকদার :
ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে বর্ষা মৌসুম শুরুর সাথে সাথে বিভিন্ন হাট বাজারে ছোট মাছ ধরার উপকরণ বিক্রির ধুম পড়েছে। উপকরণগুলোর মধ্যে রয়েছে উনিয়া, ভাইর, চাবি(ছোট পলো), পেঁচা, খালই, ইত্যাদি। বাঁশ বেতের কুটির শিল্প কারিগররা এসব উপকরন তৈরী করে বাজারে বিক্রি করে অর্থিকভাবে তারা লাভবান হচ্ছেন। ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার প্রায় ২শতাধিক পরিবার বাঁশের তৈরী কুটির শিল্পের কাজ করে সারা বছর জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অনেকেই এ পেশা করে স্বাবলম্বী হয়েছেন।
মাছ ধরার উপকরণ তৈরীর কারিগর উপজেলার খৈরাটি গ্রামের আব্দুল গণি জানান, বিভিন্ন পেশার উপর আধুনিক প্রযুক্তির প্রভাব পড়ে অধিকাংশই আজ বিলুপ্তির পথে। বাঁশ বেতের কুটির শিল্পের উপরও প্রযুক্তির প্রভাবের ফলে পেশাদার কর্মীরা অবহেলিত হয়ে অন্য পেশা জড়িয়ে পড়েছেন। কিন্তু বাঁশ বেতের ক্ষুদ্র কুটির শিল্প এখনো কোন রকমে টিকে আছে। ক্ষুদ্র কুটির শিল্পের পেশাদার কর্মীরা মোড়া, চেয়ার, দোলনা, ঝুড়ি, দাড়ি-চাটাই, খাঁচা, সিলিং, তৈরী করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। বর্ষা ঋতুতে যখন নদী-নালা, খাল-বিল, পানিতে ভরে উঠে। তখন গ্রামের সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবিরা উনিয়া, ভাইর, চাবি, পেঁচা, দিয়ে মাছ ধরায় মেতে উঠে। তখন বাজারে এসব উপকরণ বিক্রির ধুম পড়ে যায়।
বিশ্বনাথপুর গ্রামের কুটির শিল্পী হাবিবুর রহমান, আব্দুল মোতালেব, চরসৈয়দভাকুরী গ্রামের জয়নাল আবেদীন জানান, বাজারে আষাঢ় থেকে ভাদ্র মাস পর্যন্ত এসব উপকরণ বেশী বিক্রি হয়ে থাকে। এই তিন মাস উপকরণ বিক্রি করে কারিগররা মোটা অংকের আয় করে থাকেন। এ আয়ের সাথে বছরের বাকী সময় যে বেচা কেনা হয় তা মিলিয়ে পরিবারের ভরণ পোষণ ভালভাবেই চলে।
কুটির শিল্পের দক্ষ কারিগর আব্দুল গণি বলেন, মোরাল বাঁশের শলা, তালের আঁশ, লাইলং সুতা, ও গুনা তার দিয়ে উনিয়া, ভাইর, চাবি), পেঁচা, খালই ইত্যাদি তৈরী করতে হয়। তিনি আরো বলেন, একটি ছোট উনিয়া তৈরি করতে খরচ হয় ১শ থেকে ১শ ৫০টাকা, বিক্রি হয় ২শ থেকে ২শ ৫০টাকা। একটি বড় উনিয়া তৈরি করতে খরচ হয় ২শ টাকা বিক্রি হয় ২শ ৫০ থেকে ৩শ টাকা। ভাইর ১শ থেকে ১শ ৫০টাকা ও চাবি ৩শ টাকা। মাছ ধরার উপকরণের পাশাপাশি কারিগররা ডালা, কুলা, খাঁচা, চালুন, ওড়া (মাটি কাটার টুকরী), খালই বিক্রি করছে দেদারছে।
কুটির শিল্পী কারিগর জয়নাল আবেদীন জানান, বাড়ীতে বসে বিভিন্ন উপকরণ তৈরী করে স্থানীয় হাট বাজারে বিক্রি ছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করে থাকেন।