খুলনা ব্যুরো:
অবশেষে জনসাধারণের জন্য উম্মুক্ত করা হলো পাইকগাছার আলোচিত নাছিরপুর সরকারি খাল। খুলনা জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় পাইকগাছা উপজেলা প্রশাসন সেনাবাহিনী ও পুলিশের সার্বিক সহযোগিতায় প্রায় ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের খালটি বুধবার দুপুর ১২ দিকে উদ্ধার ও উম্মুক্ত করে। সহকারী কমিশনার ভূমি মোঃ ইফতেখারুল ইসলাম শামীম এর তত্ত্বাবধানে উচ্ছেদ ও উদ্ধার অভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সৈকত মল্লিক, কৃষি অফিসার কৃষিবিদ একরামুল হোসেন ও ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা কৃষ্ণপদ দাস।
অভিযানে খাল থেকে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা অপসারণ করা হয়। প্রায় ২০৫ বিঘা জায়গার ওপর বিভিন্ন স্থানে টানিয়ে দেওয়া হয় প্রশাসনের সাইনবোর্ড। এর মাধ্যমে উপজেলার তালতলা থেকে হরিঢালী পর্যন্ত আলোচিত নাছিরপুর খালটি তিন দশক পর ২০ গ্রামের মানুষ তাদের পূর্ণ অধিকার ফিরে পেয়ে মাছ ধরার উৎসবে মেতে ওঠে।
খালটি উন্মুক্ত করার ফলে খালকে অবলম্বন করে যাদের অন্ন সংস্থান , খাল ঘিরে যাদের জীবন-জীবিকা তাদের মধ্যে খুশি বিরাজ করছে।
তালতলা,চিনেমলা,গোয়ালবাথান,প্রতাপকাঠি,খোলা,কাজীমুছা, রেজাকপুর,কাশিমনগর, কানাইডাঙ্গা,কপিলমুনি ,হরিঢালী,সলুয়া শ্রীরামপুর,হাউলি,নাছিরপুর,রামনগর, মাহমুদকাটি মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল আলোচিত খালটি উম্মুক্ত করার।
গত ৩০ জুন খুলনা জেলার ভূমি মন্ত্রণালয়ে জলমহাল ইজারা সংক্রান্ত কমিটির সর্বশেষ সভায় নাছিরপুর খাল উন্মুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে জানা যায়।
নাছিরপুর খাল উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা-বাসসের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন।
বহুকাল ধরে খাল সন্নিহিত বিস্তীর্ণ এলাকার লাখ লাখ সাধারণ জেলে, কৃষক, মৎস্য চাষী এবং সর্বসাধারণ অবরুদ্ধ ও অসহায় জীবনযাপন করে আসছিল। ইজারাদার ও দখলকাররা বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় খালের বিভিন্ন স্থানে বাঁশের পাটা, ঘন জালের বেস্টনী দিয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহ ব্যহত করার পাশাপাশি খালটি প্রায় ভরাট করে ফেলেছে ।যে কারণে দীর্ঘকাল ধরে গ্রাম গ্রামান্তরের লক্ষ লক্ষ ভুক্তভোগী মানুষ নাছিরপুর খালটি উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়ে আসছিল। খাল ঘিরে রাজনৈতিক দলের দুই গ্রুপের দখল-পাল্টা দখলকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সময় রনক্ষেত্রের দৃশ্যপট সৃষ্টি হয়েছে।সেখানে সাধারণ মৎস্যজীবীদের মারধর করে উচ্ছেদ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে অতীতে অসংখ্য বার মিছিল সমাবেশ মানব বন্ধন, প্রেস কনফারেন্স করেও মেলেনি সমাধান। অবশেষে খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ সাইফুল ইসলামের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় খাল উদ্ধার ও উন্মুক্ত করার এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার পর খাল পাড়ের সাধারণ জেলে, কৃষক এবং সাধারণ মানুষ তাঁকে এবং উপজেলা প্রশাসন কে অভিনন্দন জ্ঞাপন করে আনন্দ মিছিল করেছে।
আরও পড়ুন
শেরপুরে ধ্বংস করা হলো ৪৫ হাজার গাছের চারা
৪৪তম বিসিএস শিক্ষা ও সমবায় ক্যাডারে সিলেক্টেড বড়লেখার সুমি ও আরিফ
মৌলভীবাজারে কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় প্রাণ গেল পৌর কর্মচারীর