নিজস্ব প্রতিবেদক:
এদেশে হাতে তৈরি বৈচিত্র্যময় পাটপণ্যের চাহিদা বিদেশে বাড়লেও এইচএস কোড নিয়ে বিপাকে রয়েছে ব্যবসায়ীরা। দেশ থেকে রপ্তানি বাড়ার পেছনে কাজ করছে জুট ডাইভারসিফাইড প্রোডাক্ট বা বিভিন্ন ধরনের পাটপণ্য। তার বেশির ভাগই হ্যান্ডিক্রাফট। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাসে (জুলাই) পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানি করে ১০ কোটি মার্কিন ডলারেরও বেশি আয় হয়েছে। যা গত অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ৩৮ শতাংশ বেশি। কিন্তু ডাইভারসিফাইড পাটপণ্যের সুনির্দিষ্ট কোনো এইচএস কোড নেই। ফলে দেশ থেকে ডাইভারসিফাইড পাটপণ্যের রফতানির সম্ভাবনা বাড়ার সঙ্গে জটিলতাও বাড়ছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং পাটজাত পণ্য উদ্যোক্তাদের সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, এইচএস কোড বা হারমোনাইস সিস্টেম কোড হচ্ছে পণ্য শনাক্তকরণ নম্বর। যার মাধ্যমে রপ্তানি পণ্যটি সুনির্দিষ্ট করা হয়। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এইচএস কোড ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। তা দেখেই পণ্যের ট্যাক্স নির্ধারণ করা হয়। ফলে রপ্তানিকারকরা যখন পাটের নতুন কোনো পণ্য তৈরি করে আন্তর্জাতিক বাজারে রপ্তানি করতে যায় তখন তা শনাক্ত করার জন্য নতুন এইচএস কোড দরকার পড়ে। বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলোতে এদেশের পাটের তৈরি ক্রাফটস পণ্যের মধ্যে ব্যাগ, বাস্কেট, ফ্লোরম্যাট, জুয়েলারি বক্স, কোস্টার (গ্লাস বা চায়ের কাপের নিচে রাখার ম্যাট), ফ্লাওয়ার ড্যাস (ফুলের স্টিক রাখার খোল), শপিংব্যাগ, মানিব্যাগ, হাতমোজা ইত্যাদি পণ্যের বিপুল চাহিদা তৈরি হয়েছে। টেকসই ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে ঘরের শোভা বৃদ্ধি ও গৃহস্থালি কাজে পাটজাত পণ্যের ব্যবহার বাড়ছে। তবে সম্ভাবনার পাশাপাশি সমস্যাও বাড়ছে।
সূত্র জানায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ডাইভারসিফাইড জুট প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়লেও ওসব পণ্যের কোনো সুনির্দিষ্ট এইচএস কোড নেই। একেক সময় একেক কোড ব্যবহার করে পণ্য রপ্তানি করা হয়। ফলে রপ্তানিকারকদের শুল্কায়ন করতে গেলে কাস্টমস, এলসি করতে গেলে ব্যাংকে হয়রানির শিকার হতে হয়।
এদিকে এ বিষয়ে ডাইভারসিফাইড পাটজাত পণ্যের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাক্রাফটসের প্রেসিডেন্ট গোলাম আহসান বাংলাদেশ জানান, বাংলাক্রাফটসের পক্ষ থেকে পাটজাত পণ্যের এইচএস কোড দেয়ার জন্য রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি)-তে আবেদন করা হয়েছে। বিভিন্ন সভা-সেমিনারেও বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তবে সমস্যার সমাধান হয়নি। প্রতি বছর দেশ থেকে প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পাটজাত পণ্য রপ্তানি হয়। পণ্যের শনাক্তকরণ কোড দেওয়া হলে রপ্তানির পরিমাণ দ্বিগুণ হবে।
অন্যদিকে এ বিষয়ে ইপিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও সিইও এ এইচ এম আহসান জানান, দেশে এতো বেশি পাটজাত পণ্য তৈরি হচ্ছে যে সেগুলোর পৃথক পৃথক শনাক্তকরণ নম্বর দেয়া একটি জটিল বিষয়। ওই কারণে পাটজাত পণ্য হিসেবে ওসব পণ্য রপ্তানির সুযোগ দেয়া হচ্ছে। আর পৃথক এইচএস কোড না থাকায় রপ্তানিতে কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
আরও পড়ুন
হিন্দুসেনার আপত্তি সত্ত্বেও আজমির শরীফে ‘চাদর’ পাঠালেন মোদি
আগামীকাল লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া
পর্যটকদের প্রশান্তির খোরাক আকিলপুর সমুদ্রসৈকত