অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে স্থানীয় নির্বাচন মানবে না বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। দলটির নীতিনির্ধারকরা মনে করেন, এই সরকারের স্থানীয় সরকার নির্বাচন করার ম্যান্ডেট নেই। গত সোমবার গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, বিএনপি নেতারা মনে করেন; অন্তর্বর্তী সরকার কখনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে পারে না। এ ধরনের কোনও নজির নেই। তাই আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচিত সরকারই স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজন করবে।
গত ৬ জানুয়ারি ঢাকায় গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করে স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশন। সেখানে কমিশনের প্রধান অধ্যাপক তোফায়েল আহমেদ বলেন, জাতীয় পর্যায়ে সংসদ নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়। তবে ঢাকার বাইরে মানুষের মতামতে স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রাধান্য পাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও এ মতামত আছে।
এ বিষয়ে স্থায়ী কমিটির সদস্যরা বৈঠকে আরো বলেন, যারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চায়, তাদের এ ধরনের অভিপ্রায় থাকতে পারে। তাদের অভিমত, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্রে বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোর বিগত ১৬ বছরের লড়াই-সংগ্রাম ও ত্যাগের বিষয়গুলো উল্লেখ থাকতে হবে। ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের বিষয়টি জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিতে নতুন কর্মসূচি হাতে নেবে দলটি।
ঢাকার বাইরে মানুষের মতামতে স্থানীয় সরকান নির্বাচন প্রাধান্য পাচ্ছে। ফলে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত এ সংক্রান্ত সংস্কার কমিশনের যে বক্তব্য গণমাধ্যমে এসেছে, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এ বিষয়ে নেতারা মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার কখনো স্থানীয় সরকার নির্বাচন করতে পারে না। এ ধরনের কোনো নজির নেই। তাই আগে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচিত সরকারই স্থানীয় নির্বাচনের আয়োজন করবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান বলেন, আমরা জাতীয় নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। অন্য কোনো নির্বাচনের ভাবনা এখন আমাদের মধ্যে নেই।
বৈঠকে নেতাদের কেউ কেউ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতাদের সরকারি সহযোগিতায় নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করতে যাচ্ছে। সেই দলকে সংগঠিত করা এবং সারাদেশে এর কার্যক্রম বিস্তৃত করতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন। সেজন্য তারা দ্রুত নির্বাচন চায় না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র’ নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তারা মনে করেন, এই ঘোষণাপত্রে তাদের বিগত ১৬ বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম ও ত্যাগের স্বীকৃতি থাকতে হবে। কারণ হঠাৎ করে শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়নি। গত ১৬ বছর সরকার পতনের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছিল। এসময় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী গুম-খুন, বিচার-বহির্ভূত হত্যা, হামলা-মামলা, নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। সুতরাং এই গণঅভ্যুত্থান শুধু ৩৬ দিনের আন্দোলনের ফল নয়।
দলীয় সূত্র জানায়, অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসলে বিএনপি এ বিষয়ে তাদের অবস্থান জানাবে। এছাড়া বিএনপি তাদের ১৬ বছরের আন্দোলন ও ত্যাগের বিষয়ে জনগণকে স্মরণ করিয়ে দিতে কর্মশালা ও সমাবেশ করবে।
আরও পড়ুন
রংপুর পুলিশের পৃথক দুটি অভিযানে মাদকসহ আটক-৩, ধর্ষক গ্রেফতার করেছে র্যার ১৩
শহীদ আবু সাঈদের কবরে তিন উপাচার্যের শ্রদ্ধা নিবেদন
দুর্গন্ধের উৎস খুঁজতে গিয়ে শ্বশুর বাড়িতে মিলল জামাইয়ের ঝুলন্ত লাশ