এক যুগেরও বেশি আগে পুরান ঢাকার ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে কুপিয়ে দর্জি দোকানি বিশ্বজিৎ দাসকে হত্যা করেন তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এতোদিন পেরিয়ে গেলেও বিচারের আশা নিয়ে বুক বেঁধে আছে তার পরিবার।
হত্যাকাণ্ডের বিচার না পেয়ে বিশ্বজিতের বড় ভাই উত্তম দাস আক্ষেপ করে বলেন, ‘মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগকে যেভাবে প্রকাশ্যে সবার সামনে হত্যা করা হয়েছে ঠিক একইভাবে ১২ বছর আগে আমার ভাইকে প্রকাশ্যে হত্যা করে আওয়ামী-ছাত্রলীগের ক্যাডাররা। সম্প্রতি এই ব্যবসায়ীকে হত্যার দৃশ্য যেমন সবাই দেখেছে আমার ভাইকে হত্যার দৃশ্যও দুনিয়ার মানুষ দেখেছে।
তিনি আরও বলেন, এ হত্যার আলামত, তথ্য-প্রমাণ সব ছিল। কিন্তু নিজেদের লোক হওয়ায় আওয়ামী লীগ তাদের বিচার করেনি। বিশ্বজিৎ হত্যার বিচার আগে যদি হতো তাহলে আজ নির্মমভাবে এই ব্যবসায়ীকে হত্যা করার সাহস কেউ পেতো না। জজকোর্টে আসামিদের সাজা হলেও হাইকোর্টে গিয়ে আসামিরা খালাস পেয়ে প্রকাশ্যে ঘুরছে। তবে অন্য দলের কেউ হত্যা করলে ঠিকই বিচার হতো। নিজেদের দলের (ছাত্রলীগ) জড়িত থাকায় সেটা হয়নি।

বিচারের আশায় বুক বেঁধে আছেন ৭৩ বছর বয়সী বিশ্বজিতের বাবা অনন্ত দাসও। তিনি কেঁদে বলেন, এই মামলার বাদী তো সরকার। আপিল হচ্ছে, রায়ে কী হচ্ছে এটা আর বলার মতো না। শেখ হাসিনার আমলে আপিলে অনেককে ছেড়ে দিয়েছে। বিচার আর হইলো কই? এখন তো আর শেখ হাসিনা নেই; এখন বিচার করতে সমস্যা কোথায়? বিশ্বজিৎ-এর বিচার হলে আর কেউ কাউকে মারতো না।
প্রসঙ্গত, ২০১২ সালের ৯ ডিসেম্বর বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের অবরোধের মধ্যে পুরান ঢাকার বাহাদুর শাহ পার্কের (ভিক্টোরিয়া পার্ক) সামনে বিশ্বজিৎকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শাঁখারীবাজারে দর্জির দোকান ছিল বিশ্বজিতের। তাঁর গ্রামের বাড়ি শরীয়তপুর। রাজধানীর লক্ষ্মীবাজারে বড় ভাইয়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি।
এনএনবাংলা/আরএম
আরও পড়ুন
ড. ইউনূস চান না তাকে ‘জাতীয় সংস্কারক’ ঘোষণা করা হোক
শামীম ওসমানের সাড়ে ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ, ৪৫০ কোটির সন্দেহভাজন লেনদেন
তারেক-জুবাইদার দুর্নীতি মামলার বিচার ‘নিরপেক্ষ হয়নি’-হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ