দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) তিনটি পৃথক মামলায় এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের (বর্তমানে আভিভা ফাইন্যান্স লি.) সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদারসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে।
দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন বুধবার (১৫ অক্টোবর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় প্রধান কার্যালয়ে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান। তিনি বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে এ বছরের ২ জুলাই নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ আত্মসাৎ ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছিল।
প্রথম মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লি. এর কর্মকর্তারা মেসার্স এ এম ট্রেডিং নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মালিক মো. আবদুল্লাহ আল মামুনের সঙ্গে যোগসাজশে ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট ৩৪ কোটি টাকার একটি মেয়াদি ঋণ অনুমোদন করেন।
২০১৩ সালের ৯ সেপ্টেম্বর ঋণের টাকা বিতরণ করা হয়। ঋণ প্রদানের সময়ে সিআইবি রিপোর্ট না নেওয়া, ঠিকানা যাচাই না করা, এমআইসিআর চেক না নেওয়া সহ নানা অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়। পরবর্তীতে টাকা ব্যাংক লেনদেনের মাধ্যমে এস আলম গ্রুপের সংশ্লিষ্ট কোম্পানি এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডে স্থানান্তরিত হয়। এ মামলায় ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
দ্বিতীয় মামলায় একই পদ্ধতিতে ২০১৩ সালের ১২ আগস্ট মেসার্স মোস্তফা অ্যান্ড কোং নামে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ৩২ কোটি ৫০ লাখ টাকার ঋণ অনুমোদন ও ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবরে বিতরণের অভিযোগ রয়েছে। এই টাকা ও একইভাবে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডে স্থানান্তরিত হয়। এ মামলায়ও ১৩ জন আসামি।
তৃতীয় মামলায় ২০১৩ সালের ৩ অক্টোবর মেসার্স সাইফুল অ্যান্ড কোং নামক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ২৪ কোটি টাকার ঋণ অনুমোদন এবং ২০১৩ সালের ৪ নভেম্বর বিতরণের অভিযোগ রয়েছে। টাকা একইভাবে এস আলম সুপার এডিবল অয়েল লিমিটেডে স্থানান্তরিত হয়েছে। এ মামলায়ও ১৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন—এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুস সামাদ, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ হাসান, শাহানা ফেরদৌস, রিলায়েন্স ফাইন্যান্স লিমিটেডের সাবেক এমডি প্রশান্ত কুমার হালদার, সাবেক ইভিপি রাশেদুল হক, সাবেক ম্যানেজার নাহিদা রুনাই, সাবেক এসভিপি কাজী আহমেদ জামাল ও সাবেক ডেপুটি ম্যানেজার জুমারাতুল বান্না। এছাড়া মারিন ভেজিটেবল অয়েলস লিমিটেডের পরিচালক ও নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকরাও অভিযুক্ত।
আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯, ১০৯, ৪২০, ৪৬৭, ৪৬৮, ৪৭১ ও ১২০বি ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা করা হয়েছে।
দুদক জানায়, তদন্ত প্রতিবেদন ও প্রমাণাদি যাচাইয়ের পর আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
প্রায় অর্ধেক পরীক্ষার্থীই এবার উচ্চমাধ্যমিকে অকৃতকার্য!
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দুর্বল, পেছনে কোনো লোক নেই: মির্জা ফখরুল
সাবের হোসেন চৌধুরী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের দুই মামলা