December 31, 2025
Sunday, December 28th, 2025, 2:49 pm

ওসমান হাদির খুনি ফয়সালের দুই সহযোগী ভারতে আটক

 

ঢাকার ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহিদ শরিফ ওসমান বিন হাদি হত্যাকাণ্ডে জড়িত হামলাকারীর দুই সহযোগীকে ভারতের মেঘালয় থেকে আটক করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম।

রোববার (২৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, এই হত্যাকাণ্ডটি ছিল সম্পূর্ণ পূর্ব-পরিকল্পিত। ঘটনার মূল সন্দেহভাজন ফয়সাল করিম ওরফে দাউদ খান বর্তমানে দেশে নেই; তিনি ভারতের মেঘালয়ে পালিয়ে গেছেন। তাকে পালাতে সহায়তার অভিযোগে পুত্তি ও স্বামী নামের দুই সহযোগীকে মেঘালয়ে আটক করা হয়েছে।

ডিএমপি জানায়, এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ছয়জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। পুলিশ দ্রুত তদন্ত শেষ করে মামলার চার্জশিট দাখিলের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে এবং ৭ জানুয়ারির মধ্যে তা চূড়ান্ত করা হবে।

তদন্তকালে পুলিশ দুটি বিদেশি পিস্তল, ৫২ রাউন্ড গুলি, একটি মোটরসাইকেল, ভুয়া নম্বর প্লেট এবং ৫৩টি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিপরীতে মোট ২১৮ কোটি টাকার চেক উদ্ধার করেছে। তবে হত্যার পেছনের সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য (মোটিভ) এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, মূল সন্দেহভাজন ফয়সালকে গ্রেপ্তার করা না গেলে মোটিভ সম্পর্কেও নিশ্চিত তথ্য পাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

তিনি আরও জানান, মেঘালয় পুলিশের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক যোগাযোগের মাধ্যমে ফয়সালকে সহায়তাকারী দুই সহযোগীকে আটক করা হয়েছে। মূল সন্দেহভাজনকে গ্রেপ্তারের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা আশা করছে, শিগগিরই তাকে আটক করা সম্ভব হবে।

উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর দুপুর আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে পল্টন থানার বক্স কালভার্ট রোডে হামলার শিকার হন শরিফ ওসমান হাদি। মতিঝিল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে প্রচারণা চালিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের দিকে যাওয়ার পথে মোটরসাইকেলে এসে প্রধান আসামি ফয়সাল করিম মাসুদ রাহুল দাউদ ও তার অজ্ঞাতপরিচয় সহযোগীরা চলন্ত অবস্থায় তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গুরুতর আহত হাদিকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়। সেখানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে তিনি মারা যান।

এ ঘটনায় ১৪ ডিসেম্বর ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের বাদী হয়ে পল্টন থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা দায়ের করেন। মামলায় অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, হত্যাচেষ্টা ও বিপজ্জনক অস্ত্র ব্যবহারের অভিযোগ আনা হয়। পরে হাদির মৃত্যুর পর ২০ ডিসেম্বর আদালতের আদেশে মামলায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারা (হত্যা) সংযোজন করেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সিদ্দিক আজাদ।

এনএনবাংলা/