পারভেজ আহমেদ, কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি:
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর ইউনিয়নের কানিহাটি চা বাগানের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী এক চা শ্রমিক কিশোরীকে (বয়স-১৪) ছদ্মনাম (মানসি) নামে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একই বাগানের আপন মৃধা নামে এক চা শ্রমিক সন্তানের বিরুদ্ধে। গত ৬ মাস আগে এই ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ওই কিশোরী ৫ মাসের অন্ত:সত্ত্বা হয়ে পড়লে গত ২৬ আগষ্ট কিশোরীর গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে স্থানীয় জেলা সদর হাসপাতালে যাওয়ায় ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হলে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
আপন মৃধা কানিহাটি চা বাগানের লালবাহাদূর এর ছেলে। আপন মৃধা প্রভাবশালী হওয়ায় শিশুটির বাচ্চা নষ্ট করার পর তার পরিবারের সদস্যরা ভয়ে ও আতংকের মধ্যে রয়েছে। ভয়ে তারা মেয়ের এই ঘটনাটি নিয়ে আইনের আশ্রয় নিতে চাইছে না। বুধবার (২৭ আগস্ট) উপজেলার শমশেরনগর ইউনিয়নের কানিহাটি চা বাগানে গেলে এমন তথ্য পাওয়া যায়।
স্থানীয় চা শ্রমিকরা জানান,কিশোরী মানসির বাবা শিবু রিকিয়াশনের (নতুন বাড়ী) বসত বাড়ী বাগানের অফিস টিলায়। গত ৬মাস আগে ওই কিশোরীকে বাড়িতে রেখে পরিবারের সদস্যরা বাইরে যান। কিশোরীকে একা পেয়ে আপন মৃধা ধর্ষণ করেন। পরে কিশোরীর আচার-আচরণ ও কথাবার্তায় পরিবারের সদস্যরা ধর্ষণের বিষয়টি জানতে পারেন। তবে ধর্ষণকারী প্রভাবশালী হওয়ায় এবং ভুক্তভোগী পরিবার অসহায় থাকায় এখনো কারো কাছে বিচারের জন্য যায়নি। বিচারের জন্য গেলে হয়তো বিভিন্ন ভাবে হামলা মামলার শিকার হবে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চা শ্রমিক জানান,আপন মৃধার পরিবারের লোকজন প্রভাবশালী। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কথা বললে সমস্যা হবে। সেজন্য কেউ এ নিয়ে কথা বলছে না।
এদিকে ভুক্তভোগি ধর্ষিত কিশোরীর বাবা শিবু রিকিয়াশন,কাকা রাজু রিকিয়াশন ও কাকী মানকি রিকিয়াশনের সাথে আলাপ করলে জানান, আমরা কারো কাছে বিচারের জন্য যাবো না। কারন যে, সমস্যার জন্য বিপদে ছিলাম, তা ভগবান সমধান করে দিয়েছে। এই মেয়েকে বিয়ে দিতে হবে। কেউ জানতে পারলে পরবর্তিতে বিয়ে দিতে পারবো না। আমাদের বিচার ভগবান করবেন। তারা বলেন, যা হওয়ার হয়েছে আর আমার মেয়ের মান সম্মান নষ্ট করতে চাইনা। আমরা মামলাও করবো না। মেয়েকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যাব, তার শরীরের অবস্থা ভালো না।
এদিকে ধর্ষণকারী আপস মৃধার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি।
আপন মৃধার কাকা বিশপদ মৃধা ও ভাবি রিমা মৃধার সাথে আলাপ করলে বলেন, আমাদের আপন এমন কাজ করেনি। তার উপর মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।
ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মহন লাল রবিদাস বলেন, এ বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা। আমার কাছেও তারা আসেনি। কেউ অভিযোগ না নিয়ে আসলে আমি বুঝবো কিভাবে। তারপর এখন আপনি সংবাদকর্মীর মাধ্যমে জানতে পারলাম। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি।
শমসেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো.ওবায়দুল হক বলেন, ধর্ষণের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। আসলে আমার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এছাড়া বিষয়টি আমরা দেখছি।
কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) ওসি শামীম আকনজি বলেন,কোনো অভিযোগ আসেনি। আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
পারভেজ আহমেদ
কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
আরও পড়ুন
বিকেএসপি’র ৩৫ তম ব্যাচের অভিনব বিদায়
হালুয়াঘাটে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রত্যাহারের দাবিতে এলাকাবাসীর মানববন্ধন
গঙ্গাচড়ায় দু-ব্যাবসায়ীক দোকানে ২২ হাজার টাকা জরিমানা