November 8, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, November 8th, 2025, 5:02 pm

করাচি-চট্টগ্রাম সরাসরি শিপিং চালু করলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ

 

দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক বাণিজ্যে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ। দুই দেশ প্রথমবারের মতো করাচি ও চট্টগ্রামের মধ্যে সরাসরি সমুদ্রপথে শিপিং সেবা চালু করেছে। এর ফলে পণ্য পরিবহনের সময় প্রায় অর্ধেকে নেমেছে, খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে, এবং বাণিজ্যিক যোগাযোগে এসেছে বাস্তব অগ্রগতি। এই তথ্য পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার জাতীয় পরিষদে জমা দেওয়া এক লিখিত প্রতিবেদনে জানান।

ইসহাক দার বলেন, “বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকে দুই দেশের বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতায় ইতিবাচক অগ্রগতি দেখা গেছে।” অনলাইন সামা টিভি এই খবর প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, করাচি-চট্টগ্রাম সরাসরি শিপিং সেবা চালু হওয়ায় এখন পণ্য পৌঁছাতে সময় লেগেছে মাত্র ১০ দিন, যা আগে ২৩ দিন লাগত। এতে লজিস্টিক ব্যবস্থার দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং পরিবহন খরচও কমেছে।

অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপে, বাংলাদেশ ২০২৪ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে পাকিস্তানি পণ্যের জন্য বন্দরগুলোতে ১০০ শতাংশ পরিদর্শনের বাধ্যবাধকতা প্রত্যাহার করেছে। ইসহাক দার এই সিদ্ধান্তকে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘যুগান্তকারী অগ্রগতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এর ফলে দুই দেশের মধ্যে আস্থা বৃদ্ধি পাবে এবং পণ্য পরিবহনের গতি আরও ত্বরান্বিত হবে। কাস্টমসে বিলম্ব কমে যাওয়ায় পাকিস্তানি রপ্তানি এখন বাংলাদেশের বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠবে।

ইসহাক দার আরও জানান, ২০২৪ সালের ২৭ অক্টোবর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তান ও বাংলাদেশের নবম যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের বৈঠক। বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও যোগাযোগ সম্প্রসারণ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এর ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী পাকিস্তান ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে ৫০ হাজার টন চাল রপ্তানি করেছে এবং মোট ২ লাখ টন চাল রপ্তানির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি নিশ্চিত করেছেন, আগামী মাসগুলোতেও এই কাঠামোর অধীনে চাল রপ্তানি অব্যাহত থাকবে।

লিখিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ও ডেনিম এক্সপোতে পাকিস্তানের দুই শতাধিক কোম্পানি অংশগ্রহণ করেছে, যা বাংলাদেশের টেক্সটাইল ও উৎপাদন খাতে পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রমাণ।

সামুদ্রিক যোগাযোগের পাশাপাশি দুই দেশ এখন সরাসরি আকাশপথ চালুরও প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইসহাক দার জানান, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে পাকিস্তানের দুটি বেসরকারি বিমানসংস্থাকে ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনার অনুমতি দিয়েছে। উভয় পক্ষ এখন সময়সূচি ও লজিস্টিক চূড়ান্ত করার কাজ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ফ্লাইট চালু হলে ব্যবসা ও পর্যটন—উভয় ক্ষেত্রেই দুই দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে।

এনএনবাংলা/