December 23, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 21st, 2025, 8:04 pm

হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে রাজশাহী বাড়ছে রোগ সাথে ভোগান্তি

রাজশাহী প্রতিনিধি:

পৌষের শুরুতেই উত্তরের হিমেল হাওয়ায় কাঁপছে রাজশাহী। ঘন কুয়াশা আর সূর্যহীন আকাশে শীতের তীব্রতায় স্থবির হয়ে পড়েছে নগরজীবন। রাস্তাঘাট ফাঁকা, মানুষের চলাচল ধীর। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া কেউই ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন নিম্নআয়ের মানুষ ও শ্রমজীবীরা।

রাজশাহী আবহাওয়া অফিস জানায়, আজ রোববার জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শনিবার তা ছিল ১৪ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ওইদিন সকাল ৬টায় বাতাসে আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ৯৬ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৬ কিলোমিটার। এর আগে শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই উত্তর দিক থেকে অবিরাম হিমেল হাওয়া বইছে। রাতভর কুয়াশায় ঢেকে ছিল চারদিক। সকালে সূর্যের দেখা না মেলায় শীতের প্রকোপ আরও বেড়ে যায়। গতকাল সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা আকাশে সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। শীতের প্রভাবে নগরজীবন অনেকটাই থমকে গেছে। যানবাহনের সংখ্যা কমে গেছে, পথচারীদের পদচারণা ধীর হয়ে পড়েছে। দোকানপাট খুলতেও দেরি হচ্ছে। রেললাইনের পাশের বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকায় খড়কুটো ও কাঠ জ্বালিয়ে শরীর গরম করার চেষ্টা করছেন অনেকে। গরম কাপড়ের অভাবে চরম কষ্টে দিন কাটছে তাদের। মানুষের দৈনন্দিন জীবনকে করে তুলেছে স্থবির, অচল। এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষের ওপর।

শীতের সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি। শুষ্ক আবহাওয়া ও ঠান্ডা বাতাসের কারণে বায়ুদূষণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রভাবে শিশু ও বয়স্করা নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ডায়রিয়াসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। রাজশাহীর হাসপাতালগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর চাপ বাড়ছে। ভর্তি রোগীদের মধ্যে শিশু ও প্রবীণদের সংখ্যাই বেশি। রাজশাহী আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক বলেন, “উত্তর দিক থেকে আসা হিমেল হাওয়া আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। ‘শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই রাজশাহীতে হিমেল হাওয়া বেড়েছে। শনিবার তাপমাত্রাও কিছুটা কমে। আগামীতে শীতের তীব্রতা আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।” এদিকে শীতের তীব্রতা বাড়ায় নগরীর কুমারপাড়া এলাকার হলিডে মার্কেটে জমে উঠেছে শীতবস্ত্রের বেচাকেনা। ফুটপাত জুড়ে বসা দোকানগুলোতে দেখা গেছে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড়। এখানে ৫০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে নানা ধরনের শীতের পোশাক। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, নগরী বা জেলায় এখন পর্যন্ত কোন ধরণের শীতের পোশাক বা কম্বল সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে দরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করা হয়নি। এমতবস্থায় সমাজসেবীরা দ্রুত শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তর গুলোর প্রতি আহ্বন জানান।

তীব্র শীত থেকে শিশু এবং বয়ষ্কদের সুস্থ রাখতে ডাক্তারগণ বিশেষ ভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন। কারণ শীতে এই দুই শ্রেণীর মানুষ বেশী রোগ ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। ডাক্তারদের মতে, সুষম খাবার, পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত শরীরচর্চা করা, উষ্ণ পোশাক পরা, ভালো ঘুম নিশ্চিত করা, হাত ধোয়ার মতো স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং বিশেষত অ্যাজমা বা হৃদরোগের মতো সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ইনহেলার বা প্রয়োজনীয় সময় মতো সেবন এবং ওষুধ হাতের কাছে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন।