June 2, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, May 27th, 2025, 5:31 pm

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ বিদ্রোহী ও রক্তকরবীর প্রতিধ্বনি: ইংরেজি বিভাগের অভিনব উদযাপন

কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অফ বাংলাদেশ (সিইউবি) যেন এক টুকরো শান্তিনিকেতন আর অগ্নিঝরা বিদ্রোহের মঞ্চে পরিণত হলো! ইংরেজি বিভাগ গতকাল বাংলা সাহিত্যের দুই দিকপাল – বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উদযাপন করলো এক অসাধারণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। পুরো অনুষ্ঠান জুড়ে ছিলো এক আনন্দ আর শ্রদ্ধার মিশ্রণ, যা দর্শক-শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে গেছে।

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলো বিদ্রোহী কবির কালজয়ী কবিতা “বিদ্রোহী”-র তেজদীপ্ত ইংরেজি আবৃত্তি। কবিতার প্রতিটি পংক্তি যেন আগুনের ফুলকির মতো হলজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো, দর্শক-শ্রোতাদের শিহরণ জাগিয়ে তুলেছিলো। এরপর মঞ্চস্থ হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ব্যতিক্রমী নাটক “রক্তকরবী”। নাটকের প্রতিটি চরিত্র আর সংলাপ যেন এক ভিন্ন জগতে নিয়ে যায় উপস্থিত সকলকে। শিক্ষার্থীদের সাবলীল অভিনয় আর গভীর ভাবনার প্রকাশ মুগ্ধ করেছে সবাইকে।

শুধু কবিতা আর নাটকই নয়, অনুষ্ঠানে “লিচু চোর” কবিতার মিষ্টি আবৃত্তি, মনোমুগ্ধকর গান আর ছন্দময় নৃত্যের পরিবেশনাও ছিলো চোখে পড়ার মতো। প্রতিটি পরিবেশনাই ছিলো সুনিপুণ আর হৃদয়গ্রাহী।

অনুষ্ঠানের শুরুতে, সিইউবির মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক এইচ এম জহিরুল হকদুই মহান কবির জীবন ও কর্মের তাৎপর্যপূর্ণ দিকগুলো তুলে ধরেন। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে তাঁদের সাহিত্যকর্মের গভীরতা এবং আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা। পরবর্তীতে, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) এ এস এম জি ফারুক এবং জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডাঃ রোকসানা রাবেয়া বাংলা সাহিত্যের এই দুই উজ্জ্বল নক্ষত্রের সাহিত্য এবং দর্শন নিয়ে এক প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশ নেন। তাঁদের আলোচনা শিক্ষার্থীদের সাহিত্য সম্পর্কে আরও গভীরভাবে জানতে উৎসাহিত করে। ইংরেজি বিভাগের প্রধান ও চেয়ারপার্সন মিসেস রেজিনা সুলতানা তাঁর স্বাগত বক্তব্যের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন এবং এই আয়োজনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন।

এই উদযাপন নিছক কোনো গতানুগতিক অনুষ্ঠান ছিলো না। সিইউবির ইংরেজি বিভাগ চেয়েছিল তাদের শিক্ষার্থীদের মাঝে বাংলা সাহিত্যের এই দুই কিংবদন্তীর চেতনা ও আদর্শের বীজ বপন করতে। “বিদ্রোহী” আর “রক্তকরবী”-র মাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীদের কেবল সাহিত্য পাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে, বরং তাঁদের বিপ্লবী চেতনা ও মানবতাবাদের আদর্শকে জীবনে ধারণ করতে অনুপ্রাণিত করতে চেয়েছিল। এই অনুষ্ঠান প্রমাণ করলো, সিইউবির ইংরেজি বিভাগ শুধু আন্তর্জাতিক সাহিত্যেই নয়, বরং নিজেদের সংস্কৃতির প্রতিও সমানভাবে শ্রদ্ধাশীল এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে সেই চেতনা জাগিয়ে তুলতে বদ্ধপরিকর।

এই উদযাপন সিইউবির সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।