November 8, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, November 8th, 2025, 7:17 pm

কারো দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা এ সরকারের কাজ নয়: তারেক রহমান

ছবি: শামীম আহমেদ

 

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের মূল কাজ কারো ব্যক্তিগত বা দলীয় স্বার্থ বাস্তবায়ন করা নয়। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে জনগণের ভোটের মাধ্যমে দায়িত্বশীল এবং জবাবদিহিমূলক একটি গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।

শনিবার (৮ নভেম্বর) রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ (কেআইবি) কনভেনশন হলে মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোট আয়োজিত হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

তারেক রহমান সতর্ক করেন, দেশের অস্থিতিশীল পরিস্থিতি পরাজিত এবং পলাতক ফ্যাসিবাদী অপশক্তিকে পুনর্বাসনের পথ সুগম করতে পারে। এজন্য তিনি অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘গুপ্ত রাজনীতি’ সম্পর্কে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

তিনি উল্লেখ করেন, ফ্যাসিবাদী শাসনামলে কিছু ফ্যাসিবাদবিরোধী নেতাকে রক্ষা পেতে ‘গুপ্ত কৌশল’ অবলম্বন করতে হয়েছিল। একইভাবে বর্তমান পতিত ও পরাজিত ফ্যাসিবাদী অপশক্তি কি দেশের গণতন্ত্রে বাধা সৃষ্টি করতে ‘গুপ্ত কৌশল’ ব্যবহার করছে, তা নিয়েও সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

তারেক রহমান বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে রাস্তায় অংশ নেওয়া কারো ভূমিকা কখনো কখনো দেশের বহু মানুষের অধিকার ও সুযোগকে ক্ষতিগ্রস্ত করার পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। তিনি পতিত ও পলাতক অপশক্তিকে কোনো সুযোগ না দেওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন, “গুপ্ত বাহিনীর অপকৌশল থেকে রক্ষা পাওয়ার অন্যতম প্রধান উপায় হলো একটি ফ্যাসিবাদবিরোধী জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা।” এজন্য বিএনপি অন্তর্বর্তী সরকার ও ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সহযোগিতা ও সমঝোতার দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছে।

তারেক রহমান বলেন, বিএনপি বরাবরই একটি শান্তিকামী, সহনশীল ও গণমুখী রাজনৈতিক দল। ভিন্ন দল ও মতের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করা বিএনপির রাজনৈতিক সংস্কৃতির অংশ। দেশের জনগণের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা নিশ্চিত করাই বিএনপির রাজনীতির মূল লক্ষ্য।

তিনি আরও ঘোষণা করেন, নির্বাচনে জয়ী হলে বিএনপি সরকার ৫০ লাখ পরিবারকে সহায়তা দিতে ‘ফ্যামিলি কার্ড’ বিতরণ করবে এবং তরুণদের জন্য নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি, তরুণদের কারিগরি প্রশিক্ষণ এবং বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভাষা শিক্ষা প্রদান করে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের উদ্যোগ নেবে, যা দেশের ভেতরে ও বাইরে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করবে।

বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বৈচিত্র্যের মধ্যেই ঐক্যের বন্ধন আমাদের রাষ্ট্র ও সমাজের সৌন্দর্য।” এই বৈচিত্র্যময় সমাজের ঐক্যসূত্র হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ। তিনি আরও বলেন, দেশের সব ধর্মের মানুষ সমান অধিকার享 করবে; “বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসাবে আপনার যতটুকু অধিকার আছে, আমারও ঠিক ততটুকুই অধিকার।” তিনি হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতাদের বিভিন্ন দাবি পূরণের আশ্বাসও দেন।

মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের আহ্বায়ক সোমনাথ সেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে হিন্দু সম্প্রদায়ের দাবিগুলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে তুলে ধরেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও ইকবাল হাসান মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে মতুয়া বহুজন সমাজ ঐক্য জোটের সদস্যসচিব ও মুখপাত্র কপিল কৃষ্ণ মণ্ডল, যুগ্ম আহ্বায়ক সমেন সাহা, হিন্দু মহাজোটের মহাসচিব গোবিন্দ চন্দ্র প্রামাণিক, হিন্দু ফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিজন কান্তি সরকার, মতুয়া সম্প্রদায়ের নেতা সুবর্ণা রানী ঠাকুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এনএনবাংলা/