October 8, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 27th, 2023, 8:43 pm

কুড়িগ্রামে তিস্তার ভাঙনে ৫০টি বাড়ি বিলীন

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রামে নদ-নদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তিস্তা নদীর পানি শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকাল থেকে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

রবিবার (২৭ আগস্ট) সকালে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া রেল ব্রিজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।

বৃষ্টি ও বন্যার ফলে কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার বুড়িরহাট এলাকায় দেড় কিলোমিটার এলাকাব্যাপী নদী ভেঙেছে। এই ভাঙনে সর্বশেষ বুড়িরহাট বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৩০ মিটার নদী গর্ভে চলে গেছে।

এ ছাড়াও উপজেলার বিদ্যানন্দ ও ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নে প্রায় ৫০টি বাড়ি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে। পানি বাড়ার ফলে এই উপজেলার দুটি ইউনিয়নের প্রায় ৫ শতাধিক বাড়িঘরে পানি উঠেছে। অব্যাহত পানি বৃদ্ধির ফলে স্থানীয় রাস্তা-ঘাট তলিয়ে গেছে।

এ ছাড়াও রান্নাবান্না, খাওয়া-দাওয়ায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির কারণে গরু, ছাগল ও হাসঁ, মুরগির খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।

এদিকে বন্যায় ৭০৫ হেক্টর আমন ধান, ৮ হেক্টর বীজতলা ও ১১০ হেক্টর সবজিখেত বন্যায় নিমজ্জিত হয়েছে বলে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।

রাজারহাটের ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের মেম্বার মিনহাজুল বলেন, আমার ইউনিয়নের সরিষাবাড়ী এলাকার বাড়িগুলোতে পানি উঠেছে। এখানে ২ শতাধিক বাড়িঘর তলিয়ে গেছে।

জোলাপাড়ার আবুল জানান, এই গ্রামের ৭৫টি বাড়ির মধ্যে ৪৫টি বাড়িতে পানি উঠেছে।

এই গ্রামের মাহমুদা বলেন, আমার ছোট পুকুরে ৪/৫ হাজার টাকায় প্রায় ১৮ কেজি মাছের পোনা ছেড়েছিলাম, সব মাছ বন্যার পানিতে ভেসে গেছে।

বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের খিতাব খাঁ এলাকার মেম্বার মামুনুর রশীদ বলেন, আমার এলাকায় খিতাবখা বড়দরগা গ্রামের নুর ইসলামের বাড়ি থেকে বুড়িরহাট বাজার পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় ভাঙনে প্রায় ৫০টি বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে।

তিনি বলেন, ভাঙন হুমকির মুখে রয়েছে খিতাবখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যারয়ের দ্বিতল ভবন, চর খিতাবখা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বুড়িরহাট বাজার।

তিনি আরও বলেন, খিতাবখাতে গত এক সপ্তাহে প্রায় অর্ধ শতাধিক বাড়িঘর নদীগর্ভে চলে গেছে।

ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করতে এসে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুরে তাসনিম বলেন, আমার কাছে ২০ জন নদী ভাঙনকবলিত পরিবারের তথ্য এসেছে। তাৎক্ষণিকভাবে এখানে ৫০টি দুস্থ পরিবারে শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়াও ভাঙন ও বন্যাকবলিতদের জন্য দেড় টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মিনহাজুল ইসলাম জানান, দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং একটি বাজার যাতে ভাঙনের কবলে না পরে সে ব্যাপারে প্রশাসন তৎপর রয়েছে। এ ছাড়াও ভাঙন ও বন্যাকবলিতদের সহযোগিতার জন্য পর্যন্ত ত্রাণ মজুদ রয়েছে। তারা সার্বক্ষণিকভাবে বিষয়গুলো তদারকি করছেন।

—–ইউএনবি