জেলা প্রতিনিধি:
কুমিল্লার হোমনায় শিয়াল-কুকুরের উপদ্রবে অতিষ্ঠ মানুষ। গ্রাম ও শহরের অলিগলিতে দিনের বেলায় দল বেঁধে ঘুরে বেড়ায় কুকুর আর রাতের বেলায় শিয়াল। পাঁচ গ্রামের অন্তত ১৯ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়েছেন। সোমবার রাত দশটা পর্যন্ত উপজেলার ফজুরকান্দি, ঘারমোড়া, শ্যমপুর, শ্রীপুর ও খোদে দাউদপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে এক সঙ্গে এত মানুষকে কুকুরে কামড়ানোর ফলে সদরের ফার্মেসিগুলোতেও দেখা দিয়েছে এন্টি র্যাভিস ভ্যাকসিনের (প্রতিশেধক) সংকট। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেন্সে এই ভ্যাকসিন না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছে ভুক্তভোগীরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উপজেলা পর্যায়ে দেওয়া হয় না এই ভ্যাকসিন; জেলা সদর হাসপাতালে থাকে। কুকুরের কামড়ে আহত শিশুসহ ১৯ জন নানা বয়েসি নারী ও পুরুষ হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরা হলেন- ফজুরকান্দি গ্রামের তাসফিয়া (৪), আ. রহমান (৫), হোসাইন (৬), শারমিন আক্তার (২৬), রাহিমা (৬), সামিয়া (১৮), আতিক (১২), ছোট ঘারমোড়া গ্রামের রুশিয়া বেগম (৫০), জিসান (৭), খাদিজা (১৪), শাহনাজ (৩০), শাওন (১২), সেলিম (২৬), মিরাজ (২৮), মারিয়া (৬), লিটন (৪০), শ্রীপুর গ্রামের রাফী (৮), শ্যামপুর গ্রামের শাওন (১২) ও খোদেদাউদপুর গ্রামের মাসুদা আক্তার (২৮)। এ ঘটনায় উপজেলার সর্বত্র আতঙ্ক বিরাজ করছে।
চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা জানান, হঠাৎ করেই ক্ষীপ্র গতিতে দৌরে এসে যাকে পাচ্ছে তাকেই ঝামটে ধরে এলোপাতাড়ি কামড়ে আহত করেছে। তবে কয়টি কুকুর কামড়েছে নির্দিষ্ট করে তা বলতে পারেনি কেউ।
কুকুরের কামড়ে আহত শিশু রাফীর হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে এসে মা জানান, আচমকাই কোথা থেকে যেন এসে লাফ দিয়ে বাড়ির উঠানে দাঁড়িয়ে থাকা তার ছেলের পিঠে, হাতের বাহুতে ঝাপটে ধরে কামড়াতে থাকে। সঙ্গে সঙ্গে লঠি-সোঁটা নিয়ে তাড়া করে ছেলেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসি। তিনি আরও বলেন, হাসপাতালে ভ্যাসসিন পাইনি। বাজারের কোনও ফার্মেসিতেও নেই। পরে দাউদকান্দির গৌরীপুর থেকে এনে তারপর দিতে হয়েছে।
ফার্মেসিতে ভ্যাকসিন সংকট সম্পর্কে উপজেলা সদরের বিল্লাল মেডিকেল হলের প্রতিনিধি আ. সালাম বলেন, ‘এন্টি র্যাভিস ভ্যাকসিন আমাদের কাছে যা ছিল, আজই শেষ হয়েছে। এটি সচরাচর প্রয়োজন পড়ে না বিধায় বেশি বেশি রাখা হয় না। সবাই দুই-একটা করেই দোকানে রাখে। আজ এক সঙ্গে অনেককে কামড়ানোর ফলে ভ্যাকসিন সংকট দেখা দিয়েছে। আগামীকালই আর এই সংকট থাকবে না।
স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুছ ছালাম সিকদার বলেন, ‘হঠাৎ কুকুরের উৎপাত বেড়ে গেছে। আজ দিনে রাতে কয়েকটি গ্রামের ১৯ জন কুকুরের কামড়ে আহত হয়ে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। প্রথমেই তাদের সাবান ও পানি দিয়ে ভালো করে অনেক সময় ধরে ধুয়ে ড্রেসিং করা হয়েছে। তারপর ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। ভ্যাকসিন সংকট সম্পর্কে তিনি জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এন্টি র্যাভিস ভ্যাকসিন (প্রতিশেধক) নেই। জেলা সদর হাসপাতালে পাওয়া যায় এই ভ্যাকসিন। ফলে বাধ্য হয়ে রোগীদের বাইরে থেকে কিনে আনতে হয়েছে।
আরও পড়ুন
খুলনা বিভাগে ভোক্তা-অধিকারের অভিযান : ১৭টি প্রতিষ্ঠানকে ২ লাখ ২২ হাজার টাকা জরিমানা
খুবিতে ‘উচ্চ শিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন’ বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ কর্মশালার উদ্বোধন
তালতলীতে ১০টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা