মাসুম বিল্লাহ ইমরান, খুলনা ব্যুরো: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) দীর্ঘ আন্দোলনের পর উপাচার্য পদে পরিবর্তন এলেও একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়নি। নতুন উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের ৪ মে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও শিক্ষকদের ক্লাস বর্জনের কারণে এখনো কোনো শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়নি। এতে সেশনজটসহ নানা সংকটে পড়ার শঙ্কায় রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর ভিসি, প্রোভিসি ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। টানা আড়াই মাস চলা এ আন্দোলন এবং শিক্ষার্থীদের আমরণ অনশন কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অপসারণ করে।
গত ১ মে কুয়েটের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী। তিনি ৩ মে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ৪ মে রোববার থেকে একাডেমিক কার্যক্রম চালু হওয়ার কথা থাকলেও শিক্ষক সমিতির ক্লাস বর্জনের কারণে ক্লাস হয়নি। ৭ মে বুধবার পর্যন্ত টানা চতুর্থ দিনও বন্ধ রয়েছে সব শ্রেণি কার্যক্রম।
ক্যাম্পাসজুড়ে এখনো নিস্তব্ধতা। অধিকাংশ ক্লাসরুম খালি পড়ে আছে, টেবিল-চেয়ারে জমেছে ধুলার স্তর। শিক্ষার্থীদের অনেকে বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে সেশনজট দীর্ঘ হবে, যা ভবিষ্যতে তাদের চাকরি ও উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র কল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল্লাহ ইলিয়াছ আক্তার বলেন, “শিক্ষক সমিতি ক্লাসে না যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছেন, যার ফলে ক্লাস শুরু করা সম্ভব হয়নি।”
এদিকে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শিক্ষার্থীরা দুই দফায় শিক্ষকদের কাছে ক্ষমা চাইলেও শিক্ষক সমিতি তা গ্রহণ না করে পাঁচ দফা দাবি জানিয়েছে। তাদের অন্যতম দাবি—শিক্ষকদের লাঞ্ছনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনা।
শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরাও। অনেকে বলছেন, প্রশাসন, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমঝোতার মাধ্যমে দ্রুত কার্যক্রম স্বাভাবিক না হলে কুয়েটের শিক্ষা ব্যবস্থা আরও গভীর সংকটে পড়বে।
এমন পরিস্থিতিতে কুয়েটের চলমান সংকট নিরসনে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া এখন সময়ের দাবি।
আরও পড়ুন
ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনারের সাথে সিলেট কয়লা আমদানীকারক গ্রুপের যৌথ সভা অনুষ্ঠিত
সিলেটে ব্যবসায়ী হত্যা মামলায় ১ জনের ফাঁসি, ৪ জনের যাবজ্জীবন
সেনাবাহিনী-বিজিবির যৌথ অভিযানে আড়াই কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ