জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী ইউনিয়নের ঘাগটিয়া সড়কের গোগালি ছড়ার ওপর নির্মিত জরাজীর্ণ ব্রিজটি অবশেষে সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে ঝুঁকিপূর্ণ এই ব্রিজ দিয়ে জয়চন্ডী ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার লোকজন ওই সড়ক ব্যবহার করে উপজেলা সদরে যাতায়াত করেন।
মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকালে ব্রিজের মেরামত কাজ শুরু হওয়ায় বহুদিনের ভোগান্তি কাটিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে। ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের চলাচলের উপযোগী করতে জয়চন্ডী ইউনিয়নের ঘাগটিয়া গ্রামের বাসিন্দা সিনিয়র সাংবাদিক এম শাকিল রশীদ চৌধুরী ও সংবাদকর্মী ইব্রাহিম আলী সংবাদ প্রকাশ করলে বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনের নজরে আসে। পরে ইউএনও মো. মহিউদ্দিনের নির্দেশে দ্রুত সময়ের মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ ব্রিজের সংস্কার কাজ শুরু করে উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর।
এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে ব্রিজের চলমান মেরামত কাজ পরিদর্শন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম শিকদার জয়, সহকারী প্রকৌশলী শরীফুল ইসলাম, জয়চন্ডী ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মিলন বৈদ্য, ইউপি সদস্য আব্দুল আওয়ালসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাবৃন্দ এবং এলাকাবাসী। সংস্কার কাজটি বাস্তবায়ন করছে মেসার্স সুমি কনস্ট্রাকশন নামে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি।
ঠিকাদার মো. কামরুল ইসলাম জানান, ব্রিজটির উপরের পুরো অংশে নতুন করে ঢালাইয়ের কাজ চলছে। প্রয়োজনীয় লোহার রড ও মানসম্মত কংক্রিট ব্যবহারের মাধ্যমে কাজটি মান বজায় রেখে সম্পন্ন করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮১ সালে মৌলভীবাজার মহকুমার তৎকালীন এসডিও আব্দুল লতিফের উদ্যোগে ব্রিজটি নির্মিত হয়। তখন থেকেই এটি ঘাগটিয়া, দানাপুর, কোটাগাঁও, মীরবক্সপুর, কামারকান্দি, পূর্ব ঘাগটিয়া, গাজীপুর চা বাগানসহ অন্তত ৮- ১০টি গ্রামের মানুষের একমাত্র সংযোগ পথ হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সময়ের বিবর্তনে ব্রিজটির ওপরের অংশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে। প্রায় দুই বছর ধরে ব্রিজের একপাশ গোলাকারভাবে ভেঙে যাওয়ায় ছোট যানবাহন, মোটরসাইকেল এমনকি স্কুলগামী শিক্ষার্থীরাও প্রতিদিন দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছিলেন। এছাড়া ব্রিজটি ঝুঁকিপূর্ণ থাকায় পণ্যবাহী গাড়ি বিকল্প সড়ক দিয়ে চলাচল করায় সময় ও অর্থের অপচয় হতো। যা নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়।
উপজেলা প্রকৌশলী প্রীতম শিকদার জয় বলেন,“ব্রিজটির কাঠামোগত ক্ষতি গুরুতর ছিল। তাই অস্থায়ী নয়, স্থায়ীভাবে ঢালাই ও রড বসানোর মাধ্যমে টেকসই করে তৈরি করা হচ্ছে, যাতে কয়েক বছর এটি ব্যবহার করা যায়।”
ঘাগটিয়া গ্রামের বাসিন্দা, উপজেলা প্রেসক্লাবের সংবাদকর্মী ইব্রাহিম আলী বলেন, এই ব্রিজ দিয়ে এখন থেকে এলাকাবাসীর যাতায়াত সহজ হবে। স্থানীয় কৃষিপণ্য পরিবহনেও গতি আসবে এবং ঘাগটিয়া-কুলাউড়া সড়কের অর্থনৈতিক গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে।
তিনি আরো বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই ব্রিজের ভাঙা অংশে দুর্ঘটনার ভয় নিয়ে চলাচল করেছি। স্থানীয় লোকদের দুর্ভোগ দেখে ব্রিজ নিয়ে একটি ভিডিও প্রতিবেদন করি। এরপর বিষয়টি প্রশাসনকে অবগত করা হলে দ্রুত সময়ের মধ্য ব্রিজের কাজ শুরু হওয়ায় স্থানীয়রা ব্যাপক খুশি এবং তারা উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মহিউদ্দিন বলেন, এই ব্রিজটি স্থানীয়দের দীর্ঘদিনের ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। মানুষের যাতায়াতের সুবিধার কথা চিন্তা করে জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ করছে। জনগণের সমস্যা জানালে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে এই ব্রিজের কাজ তারই একটি উদাহরণ।

আরও পড়ুন
ডামুড্যায় ভূমি অফিসে টাকা ছাড়া মিলছেনা নামজারী, অভিযোগ উঠেছে সহকারী ভূমি অফিসার ইদ্রিস মিয়ার বিরুদ্ধে।
জাগানো চরে নাব্যতা হারাচ্ছে মনু নদী
পার্বত্য অঞ্চলে মানবতার অগ্রদূত হিসেবে কাজ করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিনামূল্যে চিকিৎসা ও ঔষধ বিতরণ