August 25, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, August 24th, 2025, 7:19 pm

কুলাউড়ায় দাফনের ১৭ দিন পর জীবিত ফিরলো রবিউল!

জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:

সিলেটে নিখোঁজের পর লাশ শনাক্ত করে দাফন করা হলেও ১৭ দিন পর রবিউল ইসলাম নাঈম (১৪) নামের ওই কিশোরকে জীবিত উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (২২ আগস্ট) হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় জীবিত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা হয়। পরে কুলাউড়া থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয় এবং শনিবার (২৩ আগস্ট) জবানবন্দি গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজার আদালতে তাকে প্রেরণ করে। জীবিত উদ্ধার হওয়া রবিউল সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলার গদিয়াচর গ্রামের কনাই মিয়ার ছেলে। তবে রবিউল জীবিত থাকলেও এই ঘটনায় ইতিমধ্যে হত্যা মামলায় প্রধান আসামি হয়ে কারাগারে রয়েছেন রেষ্টুরেন্ট মালিক বুলবুল ফকির। তিনি বগুড়ার শিবগঞ্জের বাসিন্দা। এরআগে কুলাউড়ার বরমচাল ইউনিয়নে রেললাইনের পাশের একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ে এক কিশোরের লাশ উদ্ধারে এক চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে ওই ‘লাশের গল্প’। ওই কিশোরকে রবিউল মনে করে তার মৃত্যু ধরে নিয়ে স্বজনরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেছিলেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সিলেটের ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজার এলাকায় ব্রাহ্মণগ্রাম সুপ্রিম ফিলিং স্টেশন মার্কেটের বগুড়া রেষ্টুরেন্টের কর্মচারী ছিল রবিউল ইসলাম নাঈম। গত ২৬ জুলাই রেষ্টুরেন্ট থেকে সে নিখোঁজ হয়। এদিকে গত ৩ আগস্ট বরমচাল ইউনিয়নের রেললাইন সংলগ্ন একটি ডোবা থেকে অজ্ঞাত পরিচয়ের এক কিশোরের (বয়স আনুমানিক ১৩) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। খবর পেয়ে ওই কিশোরের লাশটি তাদের ছেলে রবিউলের বলে শনাক্ত করে এবং পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার লাশ গ্রহণ করে এবং ৫ আগস্ট দাফনও সম্পন্ন করে। রবিউলের পরিবার জানায়, বগুড়া রেষ্টুরেন্টের মালিক বুলবুল তাদের ছেলে রবিউলকে হত্যা করে কুলাউড়ায় লাশ ফেলে রেখেছে। পরে লাশ উদ্ধারের পর ওসমানীনগর ও কুলাউড়া থানায় মামলা করতে চাইলে প্রথমে দুটি থানাই গড়িমসি করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ৬ আগস্ট লাশ নিয়ে রবিউলের মা পারুল বেগম ও স্বজনরা সিলেট-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করেন। মামলার তদন্ত করতে গিয়ে কুলাউড়া থানার এসআই মুস্তাফিজুর রহমান নিখোঁজ রবিউলকে শুক্রবার তার আত্মীয় মো. জুবেলের বাড়ি থেকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। এসময় কিশোরের মা পারুল বেগম ও মামা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। এই ঘটনা এলাকায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

কুলাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওমর ফারুক বলেন, গত ২৬ জুলাই রেষ্টুরেন্ট থেকে নিখোঁজ হওয়া রবিউল আত্মগোপনে ছিলো। শুক্রবার নবীগঞ্জ উপজেলার সৈয়দপুর এলাকায় রবিউলকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে, রেষ্টুরেন্টের মালিকের সাথে মন-মালিন্যতার জন্য সে আত্মগোপনে ছিল। সে বিজ্ঞ আদালতের কাছে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দিতে সে আত্মগোপনে ছিল বলে স্বীকার করেছে।’ তিনি আরও বলেন, হোটেল মালিক বুলবুল রবিউলকে প্রায়শই বলাৎকারের চেষ্টা করতো। বিষয়টি বুলবুল তার পরিবারকে জানায়। একপর্যায়ে নিখোঁজের দুইদিন পর রবিউল বুলবুল তার মামার বাড়ি চলে যায়। নিখোঁজের কিছুদিন পর সে সিলেটের অন্য একটি হোটেলে কিছুদিন কাজ করেছিল। আগে বরমচাল ইউনিয়নে ডোবা থেকে অজ্ঞাত কিশোরের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্ত করার পর সেই লাশ নিখোঁজ রবিউলের মনে করে তার মা লাশটি গ্রহণ করে সেটি দাফন করেন। ‘আগের লাশ উদ্ধার ও দায়েরকৃত মামলার বিষয়ে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’