জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
কুলাউড়া উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল আগামী ১৩ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে কাউন্সিলরদের গোপন ভোটে তাদের পছন্দের নেতা নির্বাচিত করতে ৫ সদস্য বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে উজ্জীবিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। উপজেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের লক্ষ্যে এই সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে। ২৫ আগস্ট সোমবার দুপুরে কুলাউড়ার একটি অভিজাত রেষ্টুরেন্টে উপজেলা বিএনপি আয়োজিত বর্ধিত সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় সিদ্ধান্তক্রমে উপজেলা বিএনপির আহবায়ক রেদোয়ান খাঁন কে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে মনোনীত করা হয়। অন্য নির্বাচন কমিশনাররা হলেন, এডভোকেট এ এন এম খালেদ লাকী, ড. সাইফুল আলম চৌধুরী, প্রফেসর সামসুল ইসলাম ও আব্দুল মুহিত চৌধুরী। বর্ধিত সভায় আরও সিদ্ধান্ত হয়-প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র সংগ্রহ আগামী ৩০ আগস্ট, মনোনয়ন পত্র জমা ৩১ আগস্ট। প্রত্যাহার ও যাচাই বাছাই ২ সেপ্টেম্বর নির্ধারণ করা হয়। উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. রেদওয়ান খানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খান ও যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল জলিল জামালের যৌথ পরিচালনায় বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন। এসময় বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য এডভোকেট আবেদ রাজা, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য শওকতুল ইসলাম শকু, জয়নাল আবেদীন বাচ্চু, বদরুজ্জামান সজল, শামীম আহমদ চৌধুরী, এম এ মজিদ, সুফিয়ান আহমদ প্রমুখ। সভায় জানানো হয়, কুলাউড়া উপজেলার ১৩ টি ইউনিয়ন বিএনপির ৯২৩ জন ভোটার কাউন্সিলে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন- ‘দেশে নির্বাচন বানচালের পায়ঁতারা চলছে। দেশে বিনিয়োগ আটকে গেছে। দেশের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হচ্ছে। জনগণের ভোটে একটা নির্বাচিত গণতান্ত্রিক সরকার ছাড়া দেশে বিনিয়োগ সহ আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতি হবে না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে হলে দ্রুত জাতীয় নির্বানের রোড ম্যাপ দিতে হবে। দলের নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে ময়ূন বলেন-‘যেহেতু দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নেতৃত্ব নির্বাচনে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। তাই নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা হবে, কোন প্রতিহিংসা করা যাবে না। সকলে ঐক্যবদ্ধ ভাবে দলকে পূনর্গঠন প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নিয়ে সুসংগঠিত করতে হবে। নেতৃত্ব বাছাই নিয়ে ময়ূন আরও বলেন- ‘ছোট কালে আমরা স্কুলে দৌড় প্রতিযোগিতা করতাম, এতে কেউ প্রথম হতাম কেউ দ্বিতীয় কেউ তৃতীয় হতাম। আবার আমরা সকলে মিলে মিশে স্কুলের বেঞ্চে একসাথে বসতাম। ঠিক তেমনি আমাদের দলের আগামীর নেতৃত্বে নির্বাচনে প্রতিযোগিতা হবে ঠিক তবে কোন রকমের প্রতিহিংসার স্থান যেন আমাদের মাঝে না হয়। সকলে মিলেমিশে চলতে হবে’।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপন বলেন- ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। তাই আগামী দিনের নেতৃত্ব বাছাইয়ে যেনো দলের দু:সময়ের ত্যাগীরা স্থান পান সেদিকে কাউন্সিলরা সজাগ দৃষ্টি রাখেন। কোনো ক্রমেই যেনো দু:সময়ের দুর্দিনে দেয়া নেতৃত্ব কে আমরা না হারাই। আমরা দলের সংকট দুর্দিনে নেতৃত্ব কে বাছাই করতে ভুলে না যাই’। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক রেদওয়ান খাঁন বলেন, দীর্ঘদিন পর মুক্ত পরিবেশে উপজেলা বিএনপির সম্মেলন ও কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে দলের নেতাকর্মীরাও বেশ উজ্জীবিত। সম্মেলনকে ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে উপজেলার ১৩টি ইউনিয়নে বিএনপির কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হয়েছে।
দলটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, উপজেলা বিএনপির সভাপতি পদে জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য শওকতুল ইসলাম শকু ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন বাচ্চু প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য শামীম আহমদ চৌধুরী ও বদরুজ্জামান সজল ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সুফিয়ান আহমদ প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, সাবেক সহ-সভাপতি আজিজুর রহমান মনির, উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক বদরুল হোসেন খাঁন, যুগ্ম আহবায়ক আব্দুল জলিল জামাল, বিএনপি নেতা জয়নুল ইসলাম জুনেদ। সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য কমর উদ্দিন আহমদ কমরু, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য মইনুল হক বকুল, উপজেলা বিএনপির সাবেক স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক সারোয়োর আলম বেলাল। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন উপজেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য দেলোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক, বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল মুক্তাদির মনু, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক নুরুল ইসলাম ইমন, বিএনপি নেতা মইন উদ্দিন স্বপন ও সাবেক ছাত্রনেতা শিপার আহমদ। নেতাকর্মীদের প্রত্যাশা, যারা বিগত ১৫ বছরে হামলা মামলার শিকার হয়ে জেলে গেছেন, রাজপথে ছিলেন এবং সৎ ও যোগ্য; তারা নেতৃত্বে আসবেন। আর যারা বিগত সময়ে ম্যানেজ পলিটিক্স করেছেন এবং আগামীতে এ ধরনের ম্যানেজ পলিটিক্স করতে পারেন তারা যেন নেতৃত্বে না আসতে পারেন এটাই তৃণমূল নেতাকর্মীদের চাওয়া।
আরও পড়ুন
মুরাদনগরে মাদ্রাসায় যাওয়ার জন্য বেরিয়ে নিখোঁজ মারুফা
রংপুরে দুই দিনব্যাপী বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান সম্পন্ন
কালীগঞ্জের নবাগত (ইউএনও) এ.টি.এম কামরুল ইসলাম