জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
রাত পোহালেই বিএনপির কাউন্সিল। সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই ভোটের আমেজ বাড়ছে। শেষ হাসি কে কে হাসবেন? তারই অপেক্ষায় দলীয় নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। বহুল কাঙ্খিত সম্মেলন ও কাউন্সিল ঘিরে উচ্ছ্বসিত কুলাউড়া উপজেলা বিএনপি’র নেতাকর্মীরা। আজ শনিবার কুলাউড়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে অনুষ্ঠিত হবে উপজেলা বিএনপি’র দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন ও কাউন্সিল। দু’টি অধিবেশন ঘিরে ব্যাপক প্রস্তুতি ও সাজসজ্জা করা হয়েছে। ব্যানার, ফেস্টুন ও তোরণে সজ্জিত করা হয়েছে অনুষ্ঠানস্থলসহ শহর এলাকা।
কাউন্সিলকে ঘিরে আনন্দ-উল্লাস বিরাজ করছে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে। এবারের কাউন্সিলে সকল প্রার্থীদের বিগত দিনের রাজনৈতিক কর্মকান্ড নিয়ে চলছে চুলছেড়া বিশ্লেষন। প্রার্থীরাও প্রত্যেকটি ইউনিয়নে কাউন্সিলরদের কাছে গিয়ে নিজেদের পক্ষে সমর্থন চাইছেন। দিচ্ছেন নানা রকমের প্রতিশ্রুতিও। তবে, সব মিলিয়ে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে নেতা নির্বাচনের সিস্টেম করায় ভোটারদের কদর বেড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অনেকেই।
ইতিমধ্যে উৎসবী আমেজে ৫ পদে প্রতিদ্বন্ধিতার জন্য মোট ১৭ জন প্রার্থী ভোটের মাঠে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন। উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হওয়া নিয়ে উজ্জীবিত হয়েছেন নেতাকর্মীরা। তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের ভোট উৎসবে সম্পৃক্ত হওয়া ও তাদের প্রত্যক্ষ ভোটে দলীয় সভাপতি, সম্পাদকসহ ৫ পদে যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইকে ঘিরে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে বিএনপি অনুসারীদের মধ্যে। গ্রামেগঞ্জে, হাটবাজার, পাড়া-মহল্লায় এখন কাউন্সিলের উত্তাপ বইছে। শেষ সময়ে ভোট প্রার্থনায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ১৭ প্রার্থী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও প্রার্থীর পক্ষে থাকা সমর্থকরা দেশ-বিদেশ থেকে ভোট প্রার্থনা করছেন। ক্ষুদে বার্তা পাঠিয়ে দোয়া চাইছেন প্রার্থীরাও। সবমিলিয়ে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে কুলাউড়া উপজেলা বিএনপি’র কাউন্সিল।
শনিবার সকালে সম্মেলন পর্বে বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। প্রধান বক্তা কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি কে গউছ এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, সাবেক এমপি এম নাসের রহমান, জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম রিপনসহ জেলা নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত থাকবেন।
কাউন্সিলে সভাপতি পদে সাবেক দুই সভাপতি মুখোমুখি হচ্ছেন। তারা হলেন, দুইবারের সাবেক সভাপতি ও জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি শওকতুল ইসলাম শকু, সাবেক সভাপতি ও কুলাউড়া পৌরসভার পাঁচ বারের কাউন্সিলর জয়নাল আবেদীন বাচ্চু। সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে চারজন লড়ছেন। তারা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারীরা হলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও ভূকশিমইল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান মনির, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক ও রাউৎগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক বদরুল হোসেন খান, বিএনপি নেতা জয়নুল ইসলাম জুনেদ। সাধারণ সম্পাদক পদে ৩ প্রার্থী হলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম আহমদ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান সজল ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা সুফিয়ান আহমেদ। সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী ৩ প্রার্থী হলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি, জয়চন্ডী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান কমর উদ্দিন আহমদ কমরু, উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মইনুল হক বকুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক আহবায়ক বিএনপি নেতা সারোয়ার আলম বেলাল। সাংগঠনিক সম্পাদক পদে ৫ জন প্রতিদন্ধিতাকারীরা হলেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও ইউপি সদস্য আব্দুল মুক্তাদির মনু, সাবেক ছাত্রনেতা নুরুল ইসলাম ইমন, বিএনপি নেতা ও সাবেক ছাত্রনেতা সিপার আহমেদ, ব্রাহ্মণবাজার বিএনপি নেতা মহিউদ্দিন স্বপন।
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক ও কাউন্সিলের প্রধান নির্বাচন কমিশনার মো. রেদওয়ান খান বলেন, যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা করা হয়েছে। এবারের কাউন্সিলে কুলাউড়া উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ৯৩৪ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।
মৌলভীবাজার জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ুন বলেন, যারা বলে দলের মধ্যে গণতন্ত্র নেই- তাদের প্রতি আহ্বান কুলাউড়া বিএনপির কাউন্সিল দেখে উজ্জীবিত হতে পারেন। এই প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচন দলের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। নেতাকর্মীসহ বিএনপি’র সমর্থকরা উচ্ছ্বসিত।
উল্লেখ্য, সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক হলেন জেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি এডভোকেট আবেদ রাজা। উপজেলা বিএনপির এই কাউন্সিল পরিচালনায় ৫ সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন উপজেলা বিএনপির আহবায়ক মো. রেদওয়ান খান। অন্য সদস্যরা হলেন অ্যাডভোকেট এএনএম খালেদ লাকি, ড. সাইফুল আলম চৌধুরী, প্রফেসর সামসুল ইসলাম ও শিক্ষক আব্দুল মুহিত চৌধুরী রিপন।
আরও পড়ুন
ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ভোটার সমাবেশ ও গণসংযোগ
বড়লেখা সীমান্তে বিএসএফের পুশইনকৃত ২০ রোহিঙ্গাসহ আটক-২১
মুছাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনের গেইটে হাঁস মুরগি হাট: শিক্ষক,শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ চরমে