জেলা প্রতিনিধি, পটুয়াখালী (কলাপাড়া) :
কুয়াকাটার নাম শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে চির সবুজ প্রাকৃতিক দৃশ্য। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী আদিবাসী রাখাইন পাড়া। লাল কাকড়ার অবাধ বিচরনে সৈকতে ফুটে ওঠা আল্পনা। পাখির কলোকাকলী। সারিসারি ঝিনুক। বিশাল সমুদ্রের ঢেউয়ের গর্জন। অপরূপ সৌন্দর্য যেন বিমোহিত করেছে ভ্রমন পিপাসু প্রকৃতি প্রেমীদের। পর্যটকদের কাছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত “সাগর কন্যা” হিসেবে পরিচিত। রয়েছে ১৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সৈকত। দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র সৈকত যেখান থেকে সূর্যোদয় এবং সূর্যাস্ত দুটোই দেখা যায়। তাই পর্যটকরা বারবার ছুটে আসেন।
স্থানীয়রা জানায়, ঈদের ছুটির পর সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার হাজারো নানা বয়সের দেশি বিদেশি পর্যটক সমুদ্রের ঢেউয়ের তালে নেচে গেয়ে উল্লাসে মেতেছে। অনেকে সৈকতের বালিয়াড়িতে হৈহুল্লোর, খেলাধুলা ও ঘোড়াঘুড়ি করছে। কেউ বালু দিয়ে পিরামিড তৈরি সহ নিজেদের বন্দী করছেন ক্যামেরার ফ্রেমে। দর্শনীয় স্পটগুলোতে পর্যটকদের উচ্ছাসিত উপস্থিতি চোখে পড়ার মত। অধিকাংশ হোটেল মোটেল রয়েছে বুকিং। বাড়তি পর্যটকদের আনাগোনায় প্রানচাঞ্চল্যতা ফিরে এসেছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে।
এদিকে এসব পর্যটক সমুদ্র দর্শনের পাশাপাশি রাখাইন পল্লী, রাখাইন মার্কেট, শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রিপাড়া সীমা বৌদ্ধ মন্দির, ঝাউবাগান, গঙ্গামতির লেক, লাল কাকড়ার চর, লেম্বুর বন, আন্ধার মানিক নদী মোহনা, ফাতরার বনসহ দর্শনীয় স্পটগুলো ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পর্যটকদের ঝিনুক মার্কেট,ফিশ ফ্রাই ও খাবার হোটেলসহ পর্যটন নির্ভর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুলোতে বেচাকেনার যেন ধুম পরে গেছে।
পর্যটক নাহিদুল আলম জানান, এখানকার প্রকৃতি ও পরিবেশ খুবই ভালো। তাই পরিবার পরিজন নিয়ে বার বার কুয়াকাটায় ছুটে আসি। বেশ আনন্দ উল্লাস করেছি। সবক’টি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি।
অপর পর্যটক রিয়াজ রহমান বলেন, সে ঢাকার একটি বেসরকারি সংস্থায় কর্মরত রয়েছেন। মাত্র ৫ ঘন্টায় তার বন্ধুদের নিয়ে কুয়াকাটায় আসেন। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তাদেরকে বিমোহিত করেছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
কুয়াকাটা ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কুটুম’র সাধারণ সম্পাদক হোসাইন আমির বলেন, পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর কুয়াকাটায় প্রচুর সংখ্যক পর্যটকের ভিড় লক্ষ করা যাচ্ছে। সৈকতের এ স্থানে দাঁড়িয়েই সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত উপভোগ করা যায়। এখানে রয়েছে প্রকৃতি ঘেরা সৌন্দর্য। যোগাযোগ ব্যাবস্থা উন্নতি হওয়ায় ঢাকা থেকে আসতে সময়ও কম লাগে। তাই ভ্রমণ পিপাসুরা কুয়াকাটা সৈকত বেছে নিয়েছে।
হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সভাপতি মো.শাহ আলম বলেন, আবাসিক হোটেল মোটেল রিসোর্ট গুলোতে আশাতীত বুকিং রয়েছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর সাপ্তাহিক ছুটিসহ সরকারি ছুটির দিনগুলোতে পর্যটকদের আগমন বেশি হচ্ছে। তবে অবকাঠামগত উন্নয়ন হওয়ায় এখন কোন পর্যটকদের রুম সংকটে পরতে হয় না।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা জোনের ইনচার্জ হাসনাইন পারভেজ বলেন, পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে ট্যুরিস্ট পুলিশ সহ অন্যান্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া দর্শনীয় স্পটগুলোতে ভ্রাম্যমাণ টিমও রয়েছে।
আরও পড়ুন
ইতিহাস ঐতিহ্যে ঘেরা কুষ্টিয়ায় নেই পর্যটকের ভিড়
জাফলংয়ে নৈশপ্রহরীর নামে বছরে সোয়া কোটি টাকার চাঁদাবাজি
যে রাস্তা ধরে হাঁটলে পৌঁছানো যায় ১৪ দেশে