খুলনা ব্যুরোঃ
দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাঠের সবুজ ধান সোনালী রঙ ধারন করেছে। পূরণ হতে চলেছে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন ।বাধা হতে পারে কাল বৈশাখ ।
জেলার অধিকাংশ এলাকায় ধান কাটার শুরু হয়েছে। বোরা আবাদে খুলনায় এবার ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তীব্র রোদকে উপেক্ষা করে ধান কাটা, মাড়াই আর পরিবহনে ব্যস্ত এখন সবাই। ধানকাটা উৎসবে যোগ দিতে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে জড়ো হয়েছে কৃষি শ্রমিকরা। ঝড়-বৃষ্টি, বজ্রপাত, বন্যাসহ নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলা করেই এবার ফসল ঘরে তুলছে কৃষকেরা।
জানাযায়, সপ্তাহ খানেক আগে আগাম জাতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। এখন পর্যন্ত ১৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। তবে ধানকাটার পুরোপুরি ধুম পড়বে আগামী সপ্তাহ থেকে। বোরো ধান কাটা উৎসবে পরিনত হবে। যদি এবার ধান কাটার শ্রমিকের মজুরী গেল বারের থেকে বেশি। তারপরও কৃষক তার সোনালী স্বপ্ন ঘরে তুলতে দেরি করছে না। স্থানীয় কৃষকেরা বলছে, ধান কাটার শ্রমিকের মজুরী বেশী হওয়ায় এবার ধান উৎপাদে আমাদের খরেচ বেড়েছে। বীজতলা ও রোপনের সময় জনপ্রতি কৃষি শ্রমিকের মজুরী ছিল ৬০০ টাকা। এখন ধান কাটার সম সেই মজুরী দৈনিক জন প্রতি ৭০০-৮০০ টাকা। তাপমাত্রা বাড়লে অথবা বৃষ্টি হলে জনপ্রতি মজুরী আরো দু’শ টাকা বাড়তে পারে। এছাড়া নভেম্বরে বীজতলার শুরুতে এবং ডিসেম্বর-মধ্য জানুয়ারিতে রোপনের সময় শৈত্য প্রবাহে বড়ধরনের ক্ষতি হয়েছিল কৃষকদের। শৈত্য প্রবাহের কারনে অনেক স্থানে ব্লাস্ট রোগ দেখা দেয়। কৃষি সম্প্রসারণের পরামর্শে এ অঞ্চলের কৃষক ব্লাষ্ট প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। চলতি মৌসুমে খুলনা মহানগরীসহ ৯ উপজেলায় ৬৫ হাজার ৫৩৬ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। অধিক লাভের আশায় এ অঞ্চলের কৃষকেরা বেশির ভাগ জমিতে হাইব্রিড বীজের চাষাবাদ করেছে। সবচেয়ে আবাদ হয়েছে জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায়। এখানে বোরো আবাদের পরিধি ২১ হাজার ৫৫৮ হেক্টর। এছাড়া তেরখাদা উপজেলায় ৮ হাজার ৯৪৯ ও পাইকগাছা উপজেলায় ৫ হাজার ৯৯৫ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়। এ মৌসুমে জেলায় ৩ লাখ ৮ হাজার ৯৯৪ মেট্রিকি টন ধান উৎপাদন হবে বলে আশা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের। গেল মৌসুমে ৬৪ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে ২ লাখ ৯৮ হাজার ৭৬০ মেট্রিক টন উৎপান হয়।
ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়া এলাকার কৃষক হানিফ মোড়ল ৫ একর জমিতে বোরোর আবাদ করেছেন। তিনি বলেন, রোপানের সময় জনপ্রতি প্রতিদিনের কৃষি মজুরী ছিল ৬০০ টাকা। শুক্রবার থেকে তার আবাদকৃত জমিতে ধান কাটা শুরু করেছি। কৃষি শ্রমিকের জনপ্রতি মজুরী ৮০০ টাকা। বিঘা প্রতি ৩০ মণ ধান হলে উৎপাদন খরচের দ্বিগুন দাম পাব।
জেলার তেরখাদার আজগড়া, কালিনগর, ছাগলাদহ, নিশিপুর, কোলা, ইছামতি, নয়বারাসাত, কয়রার আমাদি, বেদকাশিতে লবনাক্ত এলাকায় ব্রি-১০৫, বিনা-২৫, হীরা-১, ২, ১৯, এসএল ৮, ময়না, ব্রি ধান- ৮৮ জাতের ধানের চাষ হয়েছে বলে জানান তেরখাদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিউলী মজুমদার। তিনি আরো বলেন, দু’এক জায়গায় পোকার আক্রমণ হলেও কৃষক তা সহজেই দমন করেছে।
খুলনা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. নজরুল ইসলাম জানান, বীজ, সার ও কৃষি শ্রমিকের মূল্য বাড়ার কারনে এবাররে উৎপাদন খরচ বেড়েছে। জেলায় ১৫ শতাংশ জমির বোরো কাটা হয়েছে।
আরও পড়ুন
আওয়ামীলীগের ঝটিকা মিছিল করায় প্রশাসনের নিরব ভূমিকার প্রতিবাদ করেছে নাগরিক পার্টি-এনসিপি
জয়পুরহাট পৌরসভার লিজকৃত দোকান সমূহের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন
ঈশ্বরগঞ্জে ঘর হারানোর শঙ্কায় প্রতিবন্ধী নজরুল