সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী আন্দোলনকে অযৌক্তিক বলে উড়িয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এটি বিচারাধীন বিষয়।
তিনি বলেন, ‘পড়াশোনার সময় নষ্ট করে আজকে আন্দোলনের নামে যা করা হচ্ছে, তার কোনো যৌক্তিকতা আছে বলে আমি মনে করি না।’
রবিবার (৭ জুলাই) যুব মহিলা লীগের ২২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতারা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গেলে তিনি এ কথা বলেন।
২০০২ সালের ৬ জুলাই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুব মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়।
সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিলের বিরুদ্ধে হাইকোর্টের সাম্প্রতিক রায়ের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, উচ্চ আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা ঠিক নয় এবং এটি বিচারাধীন বিষয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি হাইকোর্ট কোনো বিষয়ে রায় দেন, তাহলে সেটার যেকোনো পরিবর্তন আবার হাইকোর্ট থেকে আসতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এর আগে ২০১৮ সালে কোটা ব্যবস্থা বাতিল করেছিল কিন্তু গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জেলার, প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ এমনকি নারীরাও চাকরি পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অতীতে কোটা পদ্ধতির কারণে বিপুল সংখ্যক মেয়ে চাকরি পেত, গত কয়েক বছরে মেয়েদের সে সুযোগ মেলেনি।
কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশ নেওয়া মেয়েদের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এখানে আমার একটা প্রশ্ন আছে। এর আগে যারা (২০১৮) আন্দোলনে যোগ দিয়েছিল তাদের মধ্যে কতজন (মেয়ে) পিএসসি পরীক্ষায় বসেছিল এবং তাদের মধ্যে কতজন উত্তীর্ণ হয়েছিল, তার হিসাব বের করা দরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেয়েদের আগে প্রমাণ করতে হবে যে তাদের মধ্যে আরও বেশি সংখ্যক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহার অনুযায়ী সরকার সবার জন্য পেনশন স্কিম চালু করেছে।
নিরাপদ বার্ধক্য জীবনের জন্য সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় যোগ দিতে যুব মহিলা লীগসহ সব রাজনীতিবিদদের প্রতি আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘যদি তারা যোগ দেয় তাহলে তাদের অন্যদের ওপর নির্ভর করতে হবে না এবং বৃদ্ধ বয়সে সন্তানদের বোঝা হতে হবে না।’
যুব মহিলা লীগ প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করে আসছে বলে উল্লেখ করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘২০০৮ সালের পর থেকে জনগণ পরপর আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়েছে। তাই আমরা বারবার ক্ষমতায় এসেছি। আমরা নারীর ক্ষমতায়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে উঁচু অবস্থানে উন্নীত করতে সক্ষম হয়েছি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোট কারচুপির জন্য খালেদা জিয়াকে জনগণ দুইবার ক্ষমতাচ্যুত করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়া গর্বের সঙ্গে বলেছিলেন যে তিনি ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ ভোট চোরদের বহিষ্কার করেছে। ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চের মাত্র দেড় মাসের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ ভোট কারচুপির ষড়যন্ত্র মেনে না নেওয়ায় বিএনপিকে আবারও (২০০৬ সালে) ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা হয় এবং নির্বাচন (২০০৭ সালের ২২ জানুয়ারির নির্বাচন) বানচাল হয়।
বিএনপি সরকারের দুঃশাসনকে জনগণের সামনে তুলে ধরার পাশাপাশি দেশে যাতে তাদের অপশাসন আবার ফিরে আসতে না পারে সেজন্য যুব মহিলা লীগের নেতাকর্মীদের আরও সক্রিয় ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।
——ইউএনবি
আরও পড়ুন
গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি সেনা নিহত বেড়ে ৮০০
শাকিবের ডাকে হাজির যেসব তারকা
ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৩৪ রোগী