এস এ শফি, সিলেট:
সিলেটের সীমান্তবর্তী জনপদ কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় মোবাইল চার্জে নিয়ে ২ দিনের পৃথক সংঘর্ষে পুরো উপজেলা সদর দুদফায় তিনঘণ্টাব্যাপী রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এতে আহত হয়েছেন ১৩০ জন। এদের মধ্যে ৪ জনের অবস্থা আশংকাজনক।বিশেষ করে রোববার ফের বর্নী গ্রামবাসী মাইকে ঘোষনা দিয়ে জড়ো হয়ে লাটিসোটা,ধারালো অস্ত্র নিয়ে উপজেলা সদরে কাঁঠাল বাড়ী লোকজনের উপর হামলা করতে আসলে এলাকার মুরব্বি,জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ নিভৃত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সকাল ১১ টার দিকে মহাসড়ক দিয়ে মেডিকেল ব্রীজে আসামাত্র উভয় গ্রুপ সম্মূখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
দু-ঘন্টা ব্যাপী দু পক্ষের সংঘর্ষে ইট পাথরের শত শত ঢিল আর লাটি,ধারালো রামদার আঘাতে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর ও ৭৮ জন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়দিনই যান চলাচল দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত হয়ে যাত্রী সাধারণ দূর্ভোগ ও আতংকে আটকা পড়েছিলেন।
জানা যায়,১৪ ডিসেম্বর (শনিবার) বিকেল ৫ টায় বর্নী এলাকার বি,এন,পি সমর্থক বাবুল নামের ব্যক্তি উপজেলা সদরে দলীয় সভা শেষে কোম্পানীগঞ্জ থানা সদর মহাসড়ক পয়েন্টে স্হানীয় কাঁঠালবাড়ী গ্রামের ইউসুফ আলীর ফার্মেসী দোকানে বুড়িডহর গ্রামের পরিচিত একজন মারফত চার্জে দেন। আধ ঘন্টা পর মোবাইল আনতে গেলে বিপত্তি! যে সাথে ছিলো তাকে নিয়ে আসো অন্যথায় সিগারেট দেন। একপর্যায়ে কথা-কাটাকাটিতে দোকান মালিক শারীরিক আঘাত করলে উপস্থিত কোম্পানীগঞ্জ গ্রামের মোবাইল মালিক বাবুলের পরিচিত কোম্পানীগঞ্জ গ্রামের এলাইছ মেম্বারের ভাই হাবিব উভয়কেই নিভৃত করার চেষ্টা করেন।একপর্যায়ে তর্কাতর্কিতে ত্রিমূখী সংঘর্ষে রুপ নেয় বিষয়টি।
অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, মোবাইল চার্জে পূর্ব পরিচিত ব্যক্তি মারফত দেয়ায় কাঠালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা ইউসূফ তাকে অন্তত ফোনে আলাপ করার কথা বললে তর্ক শুরু।একপর্যায়ে আঞ্চলিকতার জেরে(আবাদী)সম্বোধন করায় মূলত ঘন্টাখানিক পর ত্রিমুখী সংঘর্ষে রুপ নেয় বিষয়টি। দফায় দফায় কাঁঠালবাড়ী,কোম্পানীগঞ্জ, বর্ণী গ্রামের কয়েকশত লোক জড়ো হয়ে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া,সড়ক অবরোধ, দোকানপাট ভাংচুর,লুটপাট, অগ্নিসংযোগে কয়েকটি মোটরসাইকেল ও পুড়িয়ে দেয়া হয়। সংঘর্ষের খবর পাওয়ামাত্র উভয়দিন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ, স্হানীয় জনপ্রতিনিধি ঘন্ঠাব্যাপী উভয়পক্ষের লোকজনকে নিভৃত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে উপজেলা প্রশাসন কতৃক সেনাবাহিনীর দফতরে সহযোগিতার খবর পাঠান।অবশেষে রাত ১০ টায় পরদিনের ঘটনায় দুপুর ২ টায় সেনাবাহিনীর চেষ্টায় উভয়পক্ষের লোকজনকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মূলত ১৫ ই ডিসেম্বর রোববার ফের বর্নী গ্রামবাসী মাইকে ঘোষনা দিয়ে জড়ো হয়ে ৫ কিঃমিঃ লাটিসোটা,ধারালো অস্ত্র নিয়ে উপজেলা সদরে কাঁঠাল বাড়ী লোকজনের উপর হামলা করতে আসলে এলাকার মুরব্বি,জনপ্রতিনিধি, প্রশাসনসহ নিভৃত করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। সকাল ১১ টার দিকে মহাসড়ক দিয়ে মেডিকেল ব্রীজে আসামাত্র উভয় গ্রুপ সম্মূখ যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
দু-ঘন্টা ব্যাপী দু পক্ষের সংঘর্ষে ইট পাথরের শত শত ঢিল আর লাটি,ধারালো রামদার আঘাতে ৪ জনের অবস্থা গুরুতর ও ৭৮ জন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে। সংঘর্ষ চলাকালে উভয়দিনই যান চলাচল দীর্ঘক্ষণ ব্যাহত হয়ে যাত্রী সাধারণ দূর্ভোগ ও আতংকে আটকা পড়েছিলেন।
আহতদের তথ্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রধান ডাঃ কামরুজ্জামান রাসেল প্রতিবেদককে নিশ্চিত করে বলেন, ১ম দিনে ৫২ আজ ৭৮ জন মারামারির ঘঠনায় ভর্তি হয়েছেন।এরমধ্যে কাঁঠালবাড়ী গ্রুপের ১ জন ও বর্নী কোম্পানীগঞ্জ গ্রুপের ৩ জনের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় এম্বুলেন্স যোগে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে ছোট্ট একটি বিষয়ে নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্কবিতর্ক হয়। এ নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।পরদিন ফের সংঘর্ষের ঘঠনা ঘঠে। সেনাবাহিনীর সহায়তা নিয়ে এখন পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত বলে জানান ওসি উজায়ের আল মাহমুদ আদনান। পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসন কতৃক স্হানীয় শালীশিয়ান মাধ্যমে দ্রতু সামাজিক বিচারে সৃষ্ট ঘঠনার নিষ্পত্তির চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি কোম্পানীগঞ্জ।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত একাধিক সূত্রে জানা গেছে উপজেলা পরিষদ হলরুমে প্রশাসনসহ সামাজিক বিচারে উভয়পক্ষ আর্থিক ১০ লাখ টাকার চুক্তিতে নগদ ২ লক্ষ টাকা উভয়ে জমাসহ সোশ্যাল মিডিয়াসহ একপক্ষ অন্যপক্ষের বিরুদ্ধাচারণ হতে বিরত থাকার আহবানে শালীশিয়ানরা সামাজিক বিচারে ঘঠনার সুষ্ঠু সমাধানের পথে এগিয়ে যাবেন বলে সর্বসম্মতিতে উপনীত হয়েছেন।
উপস্থিত শালিশীয়ানরা হলেন, সদ্য সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ লাল মিয়া, উপজেলা বি,এন,পি’র সভাপতি শাহাবুদ্দিন, জেলা বি,এন,পি নেতা এডভোকেট কামাল হোসেন, বি,এন,পি নেতা শওকত আলী বাবুল, চেয়ারম্যান জিয়াদ আলী, বাবুল চেয়ারম্যান, আলফু চেয়ারম্যান, গোয়াইনঘাটের সিরাজ চেয়ারম্যান, ভোলাগঞ্জের বশির আহমেদ প্রমূখ।
আরও পড়ুন
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
আশুলিয়ায় মরদেহ পোড়ানোর মামলায় কনস্টেবল মুকুল কারাগারে
শীতে শিশুদের সুস্থ রাখবে যেসব খাবার