অনলাইন ডেস্ক :
মার্কিন কংগ্রেস ভবন ক্যাপিটলে গত বছর সংঘটিত দাঙ্গার ঘটনায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে বিদ্রোহসহ ৪টি ফৌজদারি অভিযোগ আনার সুপারিশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসনাল তদন্ত কমিটি। গত সোমবার ডেমোক্র্যাট নেতৃত্বাধীন এ কমিটি সর্বসম্মতিক্রমে ট্রাম্পকে বিচারের মুখোমুখি করতে মার্কিন বিচার বিভাগের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। রিপাবলিকান ট্রাম্পের সমর্থকরা গত বছরের ৬ জানুয়ারি ক্যাপিটলে হানা দিয়ে ডেমোক্র্যাট জো বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটিয়েছিল। ট্রাম্প কোনো ধরনের অন্যায় করার কথা অস্বীকার করেছেন; এক বিবৃতিতে তিনি কংগ্রেসনাল তদন্ত কমিটিকে ‘ক্যাঙ্গারু কোর্ট’ অ্যাখ্যা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি। ক্যাপিটলে ওই দাঙ্গা নিয়ে প্রায় দেড় বছরের তদন্ত শেষে গত সোমবার শেষ বৈঠবে বসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদের সিলেক্ট কমিটি। সেখানেই তারা ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৪টি অভিযোগ আনার সুপারিশ করেন। এগুলো হচ্ছে- বিদ্রোহ উসকে দেওয়া ও তাতে সহযোগিতা করা, সরকারি কাজে বাধাদান, যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতারিত করার ষড়যন্ত্র এবং মিথ্যা বিবৃতি দেওয়ার চক্রান্ত। বিচার বিভাগের কৌঁসুলিরা কংগ্রেসের এই সুপারিশ মেনে চলতে বাধ্য নন; এ সুপারিশ ছাড়াই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হবে কিনা, তারা তা খতিয়ে দেখছেন। কংগ্রেসনাল কমিটির এই সুপারিশ প্রতীকি হলেও এর চেয়ারম্যান তাদের প্রস্তাবকে ‘বিচারের রোডম্যাপ’ বলে অভিহিত করেছেন। কংগ্রেসের এ সুপারিশ প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন বিচার বিভাগের এক মুখপাত্র। তদন্ত কমিটির সদস্য মেরিল্যান্ডের ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি জেমি রাসকিন বলেছেন “সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ। এটি ভয়াবহ ফেডারেল অপরাধ, যা সংবিধানেই বিবৃত রয়েছে।” গত সোমবার এই প্যানেলের ৭ ডেমোক্র্যাট ও ২ রিপাবলিকান সদস্য তাদের তদন্ত নিয়ে ১৬১ পৃষ্ঠার প্রাথমিক সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। এতে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ভোটারদের ইচ্ছাকে নস্যাৎ করে দিতে ক্যাপিটলে দাঙ্গায় প্ররোচনা এবং দাঙ্গার সময় ‘নানান ধরনের ষড়যন্ত্র’ করার অভিযোগ আনা হয়েছে। কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের এ কমিটির দাবি, ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে পরাজয় উল্টে দিতে বিভিন্ন রাজ্যের কর্মকর্তা, বিচার বিভাগ এমনকি নিজের ভাইস প্রেসিডেন্টের ওপর চাপ সৃষ্টিতে ট্রাম্প নির্বাচনে জালিয়াতি হয়েছে বলে যেসব অভিযোগ করেছিলেন, তা যে মিথ্যা, তা তিনি নিজেও জানতেন। জো বাইডেনের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর ঠেকাতে শেষ মুহূর্তের চেষ্টা হিসেবে ট্রাম্প কংগ্রেসে দাঙ্গা উসকে দেন বলেও অভিযোগ তাদের। কমিটির কয়েকশ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন বুধবার প্রকাশ হওয়ার কথা। কংগ্রেসনাল এই কমিটি তদন্তকারীদের ডাকে সাড়া না দেওয়ায় হোয়াইট হাউসের সাবেক কর্মকর্তা, ট্রাম্পের বড় মেয়ে ইভাঙ্কারও কঠোর সমালোচনা করেছে। কমিটি তাদের নির্দেশনা মেনে চলতে ব্যর্থ রিপাবলিকান নেতা কেভিন ম্যাককার্থিসহ চার রিপাবলিকানের নাম কংগ্রেসের এথিক্স কমিটিতে পাঠাবে বলেও জানিয়েছে। গত মাসে যাত্রা শুরু করা ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনী শিবির এক বিবৃতিতে কংগ্রেসনাল কমিটির লোকদেখানো বিচারিক কার্যক্রমকে ‘দেশের ইতিহাসের কলঙ্ক’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। “এই ক্যাঙ্গারু কোর্ট একটি অসার প্রকল্প ছাড়া আর কিছুই নয়, যা মার্কিনিদের বুদ্ধিমত্তাকে অপমান এবং আমাদের গণতন্ত্রকে উপহাস করে,” বলেছে তারা।
আরও পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ১৭৭
হাসিনার মতো ‘বিশ্বস্ত মিত্র’কে হারানোর ঝুঁকি নেবে না ভারত
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে ৩৮ জনের মৃত্যু, আজারবাইজানে রাষ্ট্রীয় শোক পালন