মাসুম বিল্লাহ ইমরান, খুলনা ব্যুরো: এপ্রিল-মে জুড়ে খুলনায় দাবদাহ থাকবে। তাপদাহে পুড়ছে খুলনার জনপদ। গত কয়েকদিনের তীব্র গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। অস্বস্তিতে পড়েছে প্রাণীকূল। রোদের তাপ আর ভ্যাপসা গরমে কৃষক, দিনমজুর, দোকানদার, ঠেলা-ভ্যান-রিকশা চালকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ অস্থির হয়ে পড়ছেন। মঙ্গলবার এ অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভবনা রয়েছে। এদিকে দাবদাহের কারণে ডাবের মূল্য ৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে একই সাথে বোরো কর্তনে কৃষি শ্রমেকর মূল্য ৭০০ টাকার স্থলে ৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, রোববার বেলা ৩টায় চুয়াডাঙ্গায় ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি ও খুলনায় ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়া যশোরে ৪০ দশমিক একর ডিগ্রি, সাতক্ষীরায় ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি ও মোংলায় ৩৯ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। আবহাওয়া দপ্তরের রেকর্ড অনুযায়ি,২০২৩ সালে ১৬ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৩, ২০২৪ সালের ২০ এপ্রিল ৪১ দশমিক ২, একই বছরের ২৫ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৫ ডিগ্রি, ২৯ এপ্রিল ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়।
এদিকে, তীব্র তাপপ্রবাহে শ্রমিক, দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালকরা অস্থির হয়ে পড়েছেন। কৈয়া বাজার এলাকার কৃষি শ্রমিক রেজাউল মোড়ল জানান, মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বোরো কর্তনের জন্য দিনে কৃষি শ্রমিকের মূল্য ছিল ৭০০ টাকা। দাবদাহ বাড়ার পর থেকে শনিবার থেকে ৮০০ টাকা দিতে হচ্ছে।
নগরীর শান্তিধাম মোড় এলাকার ডাব বিক্রেতা আবু তালেব জানান, পরিবহন সং্কটের কারণে এবং চাহিদা থাকায় প্রতিটি ডাব একশ টাকার স্থলে দেড়শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর খালিশপুর বঙ্গবাসী স্কুল মোড় এলাকার ফার্নিচার ব্যবসায়ী শাকিল আহমেদ বলেন, অসহ্য গরম। এই গরমে কাজ করতে কষ্ট হচ্ছে। গরমের কারণে ক্রেতাও কম। প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছে না।
প্রচন্ড গরমে নাজেহাল হতে হচ্ছে স্কুল-মাদ্রাসা, কলেজ গামী শিক্ষার্থীদেরও। মাদ্রাসা শিক্ষার্থী তাসনিম বলেন, বাহিরে প্রচন্ড রোদ। রোদের তাপে হাটা মুশকিল। ছাতা নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
শিববাড়ি মোড়ে থাকা রিকসা চালক শরিফুল ইসলাম বলেন, গরমে যাত্রী কম। ছাতাবিহীন রিকসা চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। এক টিপ মেরে গাছ বা বিল্ডিংয়ে নিচে ছায়ায় বিশ্রাম নিতে হচ্ছে।
খুলনার গগন বাবু রোডের বাসিন্দা খাদিজা আলম বলেন, গরম এলেই জীবনটা একটু বেশি চ্যালেঞ্জিং হয়ে ওঠে। একদিকে গ্রীষ্মের শুরু হতে না হতেই বৈশাখের তাপদাহ, অন্যদিকে লোডশেডিং এর কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত। আবার কয়েকদিন ধরে চলছে গরমের হিট ওয়েব ।সকাল থেকে রাত পর্যন্ত শুরু গরম ঘাম আর রোদের তেজ। মনে হয় সূর্য আমাদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। মানুষ এখন বৃষ্টির জন্য অপেক্ষা করছে। খুব বেশি দরকার না পড়লে মানুষ এখন বের হচ্ছে না, কর্ম দিবসে ও রাস্তাঘাট অনেকটা ফাঁকা। তিনি বলেন, খাল, বিল ,নদী ,নালার পানি ও তীব্র গরম। এই গরমে প্রাণীজগতের পশু-পাখিদের কষ্টের সীমা নেই। বৈশাখের শুরু হতে না হতেই তীব্র গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ সহ অবলা জীবজন্তু। খুলনা আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান বলেন, খুলনা অঞ্চলে সোমবার থেকে তাপমাত্রা কমতে পারে।
আরও পড়ুন
কমলগঞ্জে স্বেচ্ছাশ্রমে গ্রামীণ সড়ক সংস্কার
জয়পুরহাটে আসামী ধরতে গিয়ে দুর্বত্তের হামলায় পুলিশের উপ পরিদর্শক ছুরিকাহত
দলিত সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্তি ছাড়া দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয় : খুবি উপ-উপাচার্য