July 16, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, July 15th, 2025, 9:17 pm

খুলনা ওয়াসার ‘নকশাকারক’ চলেন অফিসারের ভঙ্গিতে

মাসুম বিল্লাহ ইমরান, খুলনা প্রতিনিধি:
খুলনা ওয়াসার নকশাকারক পদে কর্মরত জিএম আব্দুল গফফার অফিসে নিয়মিত না করেও মাসের পর মাস বেতন তুলছেন—এমন অভিযোগে কর্মচারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বদলি ও পদোন্নতি বাণিজ্য, মিথ্যা মামলা দিয়ে টাকা আদায়সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বিগত সরকারের সময়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি খুলনা ওয়াসা কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। এরপর থেকেই তার আচরণ ও চলাফেরায় দেখা দেয় উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার মতো ভঙ্গি।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি আবাসন বরাদ্দ, টেন্ডার, আউটসোর্সিং নিয়োগ এবং মাস্টাররোল কর্মচারীদের স্থায়ীকরণে আর্থিক লেনদেন করেছেন। অনেক ক্ষেত্রে কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেছেন বলেও অভিযোগ।

সূত্র জানায়, গফফার শুরুতে পাম্প অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। পরবর্তীতে আত্মীয়করণ নীতিতে তিনি ‘নকশাকারক’ পদে স্থানান্তরিত হন। ২০২3 সালের আগস্টে তিনি রাজনৈতিক চাপ প্রয়োগ করে প্রধান কার্যালয়ে বদলি হন। একই মাসে তিনি ভান্ডাররক্ষক রবিউল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ওয়াসার পুরাতন ভবনে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনাতেও জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

কর্মচারীরা জানান, ১৬ এপ্রিল গফফার ও রবিউল ইসলামের ওপর হামলার অভিযোগ এনে ৫ জন ওয়াসা কর্মচারীর নামে খালিশপুর থানায় মামলা করেন তিনি। মামলার চার আসামি ইমামুল ইসলাম, কাজী মো. ইলিয়াস হোসেন, সরদার সাইফুল ইসলাম ও শহিদুল্লাহ বাবুর দাবি—তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে গফফার লক্ষাধিক টাকা আদায় করেছেন।

খুলনা ওয়াসা শ্রমিক কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মুকুল হোসেন বলেন, “আমি ৯টি অনিয়ম তুলে ধরে পদত্যাগ করেছি। এখনকার ইউনিয়ন কার্যত গফফারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণে।”

অভিযোগ রয়েছে, তিনি প্রতিবছর টেন্ডার বাবদ আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা না দিয়ে প্রায় ৬ লক্ষ টাকার কাজ নিজের অনুগতদের দিয়ে দিয়েছেন। এ ছাড়া অতীতে খুলনা সিটি করপোরেশনে তার কর্মকাণ্ড নিয়ে ‘ঝাড়ুমিছিল’ এবং ওয়াসায় তার বিরুদ্ধে ‘জুতা মিছিল’-এর মতো ঘটনাও ঘটেছে।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জিএম গফফার বলেন, “প্রতিপক্ষরা মিথ্যা অভিযোগ ছড়াচ্ছে। ওয়াসার চারটি অফিসে ছুটতে হয় বলেই হাজিরা খাতায় নিয়মিত সই করা সম্ভব হয় না।”

এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা ওয়াসার নবনিযুক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আবু সায়েদ মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, “আমি মাত্র তিন দিন আগে দায়িত্ব নিয়েছি। আজ বিকেলে অফিসে গিয়ে বিষয়টি দেখব। অনিয়মের কোনো সুযোগ থাকবে না।”