অনলাইন ডেস্ক :
শ্রীলঙ্কায় একদিন আগে জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে। এর আগে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সঙ্কটের মধ্যে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের দাবিতে গণবিক্ষোভের জেরে জরুরি অবস্থা জারি করে প্রেসিডেন্ট।
মঙ্গলবার রাতে জারি করা এক ডিক্রিতে গোতাবায়া রাজাপাকসে বলেছেন, তিনি জরুরি আদেশ প্রত্যাহার করছেন।
এদিকে মঙ্গলবার শাসক জোটের প্রায় ৪০ জন আইনপ্রণেতা বলেছেন, তারা জোটের নির্দেশনা অনুযায়ী আর ভোট দেবেন না। তাদের বারবার আহ্বানের পরও প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে পদত্যাগ করা ও অন্তর্বর্তী সরকারের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করছেন। আইনপ্রণেতাদের দাবি গোতাবায়া অন্তর্বর্তী সরকার গঠন না করলে সহিংসতার জন্য তাদেরকে দায়ী করা হবে।
গত সপ্তাহে রাজধানী কলম্বোতে প্রেসিডেন্টের বাড়ির কাছে বিক্ষোভকারীদের তুমুল বিক্ষোভের পর গোতাবায়া রাজাপাকসে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন।
রান্নার গ্যাস, পেট্রোল, বিদ্যুৎ ও গুঁড়ো দুধের মতো প্রয়োজনীয় জিনিসের ঘাটতি নিয়ে প্রথমদিকে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে এই বিক্ষোভ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং এখন বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে ও তার সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে।
সোমবার থেকে টিভি এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায় বিক্ষোভকারীরা ক্ষমতাসীন দলের আইন প্রণেতাদের অফিস ও বাড়িতে ঢুকে পড়েছে এবং কিছু জায়গা ভাংচুর করেছে।
মঙ্গলবার, বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ার পর প্রথম নতুন সংসদ অধিবেশনে আইনপ্রণেতারা স্পিকারকে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছেন।
জনগণের ক্ষোভের কেন্দ্রবিন্দু হওয়া সত্ত্বেও রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী রাজাপাকসে পরিবার থেকে প্রেসিডেন্ট এবং তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দা রাজাপাকসে ক্ষমতায় ছিলেন। প্রধানমন্ত্রীর ছেলে ক্রীড়ামন্ত্রী নামাল রাজাপাকসের সঙ্গে যারা পদত্যাগ করেছেন তাদের মধ্যে আরও দুই ভাই, অর্থমন্ত্রী বাসিল রাজাপাকসে এবং সেচ মন্ত্রী চামাল রাজাপাকসে ছিলেন।
রবিবার রাতে ৪০ জন মন্ত্রী পদত্যাগ করে এবং গোতাবায়া রাজাপাকসে সকল দলকে ঐক্য সরকারে যোগদানের আমন্ত্রণ জানায়। কিন্তু প্রধান বিরোধী দল এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।
শ্রীলঙ্কায় অর্থনৈতিক সংকট, লোডশেডিং, জ্বালানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ঘাটতির সমাধানের দাবিতে বেশ কিছু দিন ধরে বিক্ষোভ করছেন জনগণ।
দক্ষিণ এশিয়ার দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও তীব্র জ্বালানি সংকট নিয়ে ক্রমবর্ধমান বিক্ষোভের মুখে পড়েছে দেশটির ক্ষমতাসীন সরকার।
আরও পড়ুন
গাজা যুদ্ধে ইসরাইলি সেনা নিহত বেড়ে ৮০০
নামছে সেনা, ফিরছে ২২৫ বছর পুরনো ‘ভিনগ্রহী আইন’
আমেরিকার অস্ত্রে হামলা, চটে লাল পুতিন