February 15, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, January 29th, 2025, 11:49 am

গ্রিনল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের কথা ভাবছে ফ্রান্স, ট্রাম্পের হুমকি

ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট

অনলাইন ডেস্ক:
ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল গ্রিনল্যান্ড দ্বীপ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত বছরের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর একাধিকবার এই বিষয়ে কথাও বলেছেন তিনি। এমনকি গ্রিনল্যান্ড দখল করতে সামরিক শক্তি প্রয়োগের হুমকিও দিয়েছেন ট্রাম্প। এমন অবস্থায় গ্রিনল্যান্ডে সেনা মোতায়েনের কথা বিবেচনা করছে ফ্রান্স। মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

বার্তাসংস্থাটি বলছে, গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত মন্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্স এবার এই আর্কটিক দ্বীপটিতে সেনা মোতায়েনের কথা বিবেচনা করছে বলে মঙ্গলবার ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট বলেছেন। ব্যারোট নিশ্চিত করেছেন, ফ্রান্স ইতোমধ্যেই ডেনমার্কের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। তবে সেনা মোতায়েনের এই পদক্ষেপ বাস্তবায়নের জন্য তাৎক্ষণিক কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও জোর দিয়ে জানিয়েছেন তিনি।

ব্যারোট সুদ রেডিওর সাথে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “এই মুহূর্তে, এটি (সেনা মোতায়েন) ডেনমার্কের ইচ্ছা নয়। নিরাপত্তা স্বার্থ হুমকির মুখে পড়লে ইউরোপ পদক্ষেপ নেবে।” গ্রিনল্যান্ড দখলের বিষয়ে ট্রাম্পের ক্রমবর্ধমান আগ্রহকে মোকাবিলায় ডেনমার্ক ইউরোপীয় দেশগুলোর সমর্থন চাওয়ার মধ্যেই ফ্রান্সের পক্ষ থেকে এই মন্তব্যগুলো সামনে এলো। ট্রাম্প আর্কটিক এই দ্বীপের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং কৌশলগত মূল্য উল্লেখ করে বলেছেন, “আমি মনে করি আমরা এটি পেতে যাচ্ছি।”

ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মেটে ফ্রেডেরিকসেন বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন এবং গ্রিনল্যান্ডের প্রতি যেকোনও ধরনের তাৎক্ষণিক সামরিক হুমকি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি ট্রান্সআটলান্টিক সহযোগিতার গুরুত্বের ওপরও জোর দিয়েছেন। ফরাসি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল ব্যারোট আর্কটিক এই অঞ্চলকে “সংঘাতের নতুন ক্ষেত্র” হিসাবে বর্ণনা করেছেন এবং ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডেরিকসেন উত্তেজনার আরও বৃদ্ধি এড়িয়ে সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গির ইঙ্গিত দিয়েছেন।

এছাড়া সম্প্রতি আর্কটিকে প্রতিরক্ষায় ২ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে ডেনমার্ক।
প্রসঙ্গত, গত ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এর আগেই ট্রাম্প বেশ কয়েকবার তার গ্রিনল্যান্ড অধিগ্রহণের ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। জানুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহে তিনি বলেছেন, আর্কটিক এই দ্বীপটি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ’। ২০১৯ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম মেয়াদেও গ্রিনল্যান্ড কেনার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প। এরপর তিনি বারবারই এই ধারণা উত্থাপন করে আসছেন।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মিত্র ডেনমার্ক স্পষ্ট করে জানিয়েছে, গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয়। আর অঞ্চলটির মালিক মূলত এর বাসিন্দারা। গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মুট এগিদ ডেনমার্কের কাছ থেকে তার দেশকে স্বাধীন করার জন্য চাপ দিয়ে আসছেন। তবে তিনিও স্পষ্ট করে বলেছেন, অঞ্চলটি বিক্রির জন্য নয়। উল্লেখ্য, মাত্র ৫৭ হাজার জনসংখ্যার দ্বীপ গ্রিনল্যান্ডে স্বায়ত্তশাসন রয়েছে, তবে এর অর্থনীতি মূলত কোপেনহেগেন থেকে আসা ভর্তুকির ওপর নির্ভরশীল এবং এটি এখনও ডেনমার্কের অংশ। প্রায় ৮০ শতাংশ অঞ্চল তুষারাবৃত হলেও এই দ্বীপে বিরল খনিজ পদার্থের সবচেয়ে বড় মজুদ রয়েছে, যা ব্যাটারি এবং উচ্চ-প্রযুক্তির ডিভাইস তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।