April 21, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, April 21st, 2025, 10:50 am

ঘের দখল, চাঁদাবাজি ও হামলার অভিযোগে খুলনায় সংবাদ সম্মেলন

খুলনার, প্রতিনিধি: পাইকগাছা উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের সফল চিংড়ি চাষি সত্যজিৎ সরদার সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছেন, কুখ্যাত সন্ত্রাসী ও বহিষ্কৃত বিএনপি নেতা এস এম এনামুল হক এবং তার সহযোগীরা তার ৫৫০ বিঘা আয়তনের চিংড়ি ঘের জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে।

দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বৈজ্ঞানিকভাবে চিংড়ি চাষ করে তিনি যেমন নিজের জীবিকা নির্বাহ করছিলেন, তেমনি স্থানীয় ১৩০ জন জমির মালিকের জমি লিজ নিয়ে এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করেছিলেন।

সত্যজিৎ সরদার বলেন, “২০২৩-২৪ সালে আমার ঘেরে প্রায় ৫০ লাখ টাকার মাছ ছিল। ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পরপরই সন্ত্রাসী এনামুল হক ১৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। ১৫ সেপ্টেম্বর এক লাখ টাকা নিয়ে যায়। ১ নভেম্বর পুনরায় হামলা চালিয়ে নগদ দেড় লাখ টাকা, সোনার চেইনসহ একাধিক মূল্যবান সামগ্রী লুট করে।”

তিনি জানান, চূড়ান্ত হামলাটি ঘটে ৩১ ডিসেম্বর রাতে। সেদিন এনামুল ও আসলাম পারভেজের নেতৃত্বে সশস্ত্র বাহিনী তার ঘের দখল করে নেয় এবং ঘেরে থাকা ভেটকি, টেংরা, তেলাপিয়া, গলদাসহ প্রায় ৩০ মনের বেশি মাছ লুট করে। ঘেরের কর্মচারীদের পিটিয়ে গুরুতর জখম করে।

সত্যজিৎ আরও অভিযোগ করেন, হামলার পরপরই তিনি থানা ও প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও মামলা দায়ের করতে পারেননি। অবশেষে ৬ এপ্রিল থানায় মামলা এজাহারভুক্ত হয়।

মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছেন, এস এম এনামুল হক, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম পারভেজ, ইমরান সরদার, ইব্রাহিম গাজী, অরণ্য ঢালী, পবিত্র মন্ডল, সুকুমার কবিরাজ, বিপ্লব মন্ডল, সাত্তার বিশ্বাস, বায়জিদ সরদার, কিশোর মন্ডল, কুমারেশ সরকারসহ অজ্ঞাত আরও ১৫-২০ জন।

সত্যজিৎ সরদার আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, আমি এবং মামলার সাক্ষীরা বর্তমানে জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা এবং অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।

এদিকে, সংবাদ সম্মেলনে সত্যজিৎ সরদার অভিযোগ করেন, এস এম এনামুল হক রাজনৈতিক সুবিধা আদায়ের জন্য একাধিক দলের সঙ্গে গোপন আঁতাত করেছে এবং চাঁদাবাজি ও জমি দখলের মাধ্যমে ইতোমধ্যে ২০ কোটির বেশি টাকার মালিক হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সদ্যঘোষিত কমিটির বিরুদ্ধেও বেশ কিছু অনিয়ম ও বিতর্কিত সদস্য অন্তর্ভুক্তির অভিযোগ উত্থাপন করা হয়, যেখানে অর্থের বিনিময়ে পদ দেওয়ার অভিযোগ করেন তিনি। প্রমাণ হিসেবে তিনি ভিডিও ফুটেজ, ছবি ও পত্রিকার কাটিং সাংবাদিকদের সরবরাহ করেন।