January 22, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, January 22nd, 2025, 2:51 pm

চকলেট চাইলেন কামাল মজুমদার, পলকের আইনজীবীর প্রশ্ন, ‘আর কত রিমান্ড’

মিরপুর থানার পৃথক দুই হত্যা মামলায় নতুন করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে।

এছাড়া হত্যাচেষ্টার এক মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, সাবেক এমপি সাদেক খান ও সাবেক ২৯ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ সলুকে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছে আদালত।

বুধবার সকালে কামাল মজুমদারসহ সাবেক কয়েকজন এমপি-মন্ত্রীকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে হাজতখানায় রাখা হয়। এরপর হাতকড়া, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে তাদেরকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের দ্বিতীয় তলার ২৭ নম্বর আদালতে তোলা হয়।

এরপর সাবেক শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদারকে মিরপুর থানার দুইটি হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করা হয়।

শুনানির এক ফাঁকে কাঠগড়ায় দাঁড়ানো কামাল আহমেদ মজুমদার এক পাশে গিয়ে তার পক্ষের এক আইনজীবীকে ডেকে চকলেট খেতে চান। কিছুক্ষণ পর শুনানির মাঝখানেই একজন আইনজীবী সাদা কাগজের ব্যাগে করে চকলেট আনেন।

চকলেট দেখে কাঠগড়ার এক পাশ থেকে আরেক পাশে একপ্রকার দ্রুত এসেই ব্যাগটা নিতে যান বৃদ্ধ কামাল মজুমদার। কিন্তু বিপত্তি বাঁধে কাঠগড়ার পাশে নিরাপত্তায় কর্মরত পুলিশ সদস্যরা দেখে ফেললে। তারা চকলেট দিতে বাধা দিলে তিনি আর চকলেট নিতে পারেননি।

এরপর শুনানি শেষে ঢাকার মহানগর হাকিম জি এম ফারহান ইসতিয়াকের আদালত কামাল আহমেদ মজুমদারকে দুই হত্যা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন।

শুনানি শেষে পুনরায় হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় কামাল আহমেদ মজুমদারকে চকলেট দেওয়া হয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কামাল আহমেদ মজুমদারের আইনজীবী আল ইমরান (মুকুল) বলেন, “কামাল আহমেদ মজুমদারের চকলেট অনেক প্রিয়। এছাড়া তার সুগার লো হয়ে যায়। এজন্য চকলেট খেতে হয়। এজন্য তিনি চকলেট চেয়েছিলেন। কিন্তু এজলাসে তো আসামিকে কিছু দেওয়ার নিয়ম নেই। পরে বিধি মোতাবেক আইনজীবীর মাধ্যমে চকলেট পৌঁছে দেওয়া হয়।”

বাইরে থেকে খাবার দেওয়ার অনুমতি নেই জানিয়ে পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, “চকলেট খেতে চাওয়া বা তাকে দেওয়া হয়েছে কি না আমার জানা নেই। তবে অগোচরে দেওয়া বেআইনি। খাবার বা চকলেট খাওয়ার পর আসামির কিছু হলে তো সরকারের ওপর দায় বর্তাবে। দায়িত্বরত পুলিশ ও ডিসি প্রসিকিউশন থেকে এ বিষয়ে কঠোর হওয়া উচিত।”

‘পলক ৩৪ দিন রিমান্ডে ছিলেন, আর কতবার?’

মোহাম্মদপুর থানার এক ভ্যানচালককে হত্যাচেষ্টা মামলায় একই আদালতে জুনাইদ আহমেদ পলকসহ কয়েকজনের রিমান্ড শুনানি হয়।

এর আগে সকালে পলকসহ অন্য আসাসিদের কারাগার থেকে একে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়। পরে হাতকড়া, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের দ্বিতীয় তালায় ২৭ নম্বর আদালতে তোলা হয়।

এরপর মোহাম্মদপুর থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় পলক, সাদেক খান ও সলিমুল্লাহ সলুর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা।

পলক এর আগে বিভিন্ন মামলায় ৩৪ দিন রিমান্ডে ছিলেন জানিয়ে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তার আইনজীবী ফারাজানা ইয়াসমিন রাখি।

তিনি আদালতকে বলেন, “আসামি পলকের ৫৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ দিন রিমান্ডে ছিলেন তিনি। একজন মানুষকে আর কতবার রিমান্ডে নেওয়া যায়?

“আসামি রিমান্ডে থাকার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। তাকে বারবার রিমান্ডে নিয়ে কোনো তথ্যউপাত্ত পাওয়া যাচ্ছে না। তাকে নিছক কারণে বার বার রিমান্ডে নেওয়া হচ্ছে৷”

এসময় বিচারক বলেন, “এই মামলায় তো আর রিমান্ডে নেওয়া হয় নাই।”

এসময় রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী আদালতকে বলেন, “রিমান্ড তো মাত্র শুরু হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ হত্যার ষড়যন্ত্র। গণভবনে বসে হত্যা বা হামলার নির্দেশ দিয়েছেন তারা। ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন পলক।”

এসময় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলার উদাহরণ টেনে পিপি বলেন, “১৫ অগাস্টে শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা মামলাও নয়, প্রথমে জিডি করা হয়। এই জিডির ৪ লাইন টেনে ২১ বছর পর কত মানুষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। তাই ক্রিমিনাল মামলার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আসামির রিমান্ড প্রয়োজন।”

শুনানি শেষে আদালত পলকসহ তিন আসামির ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

রিমান্ড শুনানি শেষে ফের পুলিশি কড়া নিরাপত্তায় হাজতখানায় নেয়া হয় পলকসহ বাকি আসামিদের।

এসময় পলককে বারবার রিমান্ডের বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।”

পরিবারের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেওয়া হয় কি না জানতে চাইলা তিনি উত্তরে ‘না’ বলেন। এরপর আর কিছু বলেননি তিনি।

এর আগে গত বুধবার আদালতে পলক গণমাধ্যমকে বলেন, “আমি বৈষম্যের শিকার। কারাগারে আমাকে পরিবারের সাথে ফোনে কথা বলতে দেওয়া হয় না।”