চট্টগ্রামের ফৌজদারহাটে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন ইসলামী ব্যাংকের চাকরিচ্যুত ও ওএসডি হওয়া কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। চাকরিতে পুনর্বহাল, ওএসডি প্রত্যাহার এবং শর্তসাপেক্ষে অ্যাসেসমেন্ট টেস্ট বন্ধসহ নানা দাবিতে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।
শনিবার সকাল ১১টার দিকে কর্মসূচি শুরু হয়। প্রথমে সড়কের পাশে ব্যানার হাতে অবস্থান নিলেও কিছুক্ষণের মধ্যে তারা মহাসড়কে নেমে অবরোধ গড়ে তোলেন। সকাল সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় দেড় ঘণ্টা মহাসড়ক বন্ধ থাকায় সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাট থেকে সিটি গেইট ও মাদামবিবির হাট পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।
অবরোধে অংশ নেওয়া কর্মকর্তাদের অভিযোগ, চট্টগ্রাম অঞ্চলে ইসলামী ব্যাংকের প্রায় ৪০০ কর্মীকে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। পাশাপাশি ৪-৫ হাজার কর্মকর্তাকে ওএসডি করে কর্মস্থলে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়েছে। ফলে তারা পরিবার নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন।
চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা এমদাদ হোসাইন বলেন,
“সাড়ে পাঁচ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারী এখন মানবেতর জীবনযাপন করছেন। আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। দ্রুত সমাধান না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে।”
আরেক চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা নুর উদ্দিন অভিযোগ করেন, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাদের স্যালারি অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দিয়েছে। ফলে অ্যাকাউন্টে থাকা বেতনের টাকা তুলতে পারছেন না তারা, এমনকি নিত্যপ্রয়োজনীয় বাজার-খরচ চালাতেও হিমশিম খেতে হচ্ছে।
এর আগে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তারা রোববার থেকে টানা কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। শনিবারের মানববন্ধন ও সড়ক অবরোধের মধ্য দিয়েই তাদের কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে এস আলম গ্রুপ ইসলামী ব্যাংকের মালিকানা নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর ব্যাপক সংখ্যক কর্মী সরাসরি সিভি জমা দিয়ে চাকরি পান। তাদের অধিকাংশই ছিলেন চট্টগ্রামের পটিয়া ও আশপাশের উপজেলার বাসিন্দা। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে পরিবর্তন আসে।
সম্প্রতি গত ২৭ সেপ্টেম্বর ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিশেষ দক্ষতা মূল্যায়ন পরীক্ষা আয়োজন করে। সেখানে অংশগ্রহণের কথা ছিল ৫ হাজার ৩৮৫ জন কর্মকর্তার, তবে পরীক্ষায় অংশ নেন মাত্র ৪১৪ জন। বাকি ৪ হাজার ৯৭১ জনকে পরদিন থেকেই ওএসডি করা হয়। এ ছাড়া পরীক্ষার বিরোধিতা ও বিভ্রান্তি ছড়ানোর অভিযোগে দুই দফায় ৪০০ কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত হন।
এনএনবাংলা/
আরও পড়ুন
রাষ্ট্রদূতরা কিন্তু যে কারও বাসায় যেতে পারেন: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক শহিদুল আলমের প্রতি প্রেস সচিবের সহমর্মিতা
নতুন বাংলাদেশ গড়তে কারও দাসত্ব নয়, স্বনির্ভর হতে হবে: ড. ইউনূস